শারীরিক প্রতিবন্ধকতা জয় করে বিসিএস ক্যাডার হলেন উল্লাস পাল

মেহেদী হাসান, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ২০ জানুয়ারি ২০২৪, ১৬:৪৪| আপডেট : ২০ জানুয়ারি ২০২৪, ১৭:০৯
অ- অ+

শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধকতা জয় করে বিসিএস ক্যাডার হয়েছেন শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার কার্তিকপুর গ্রামের উল্লাস পাল। অন্য সাধারণ প্রার্থীদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে ৪৩তম বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন তিনি। এখন একটাই স্বপ্ন বিসিএস অ্যাডমিন ক্যাডারের জন্য সুপারিশপ্রাপ্ত হওয়া।

১৯৯৪ সালে শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া উপজেলার কার্তিকপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন উল্লাস পাল। বাবা উত্তম কুমার পাল ও মাতা আন্না রানী পাল দম্পতির তিন ছেলেমেয়ের মধ্যে মেঝ তিনি। বাবা মৃৎশিল্প ব্যবসায়ী, মা গৃহিণী।

সমাজের আর সবার মতো নয় উল্লাস পাল। জন্ম থেকেই দুই হাত-পা ছোট ও বাঁকা। পায়ের গঠন অস্বাভাবিক হওয়ায় ছোটকাল থেকে অন্য দশজন শিশুর মতো স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে পারতেন না তিনি। সন্তানকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে দেশ-বিদেশে বিভিন্ন জায়গায় চিকিৎসা করান তার বাবা-মা। তাতেও তেমন কোনো উন্নতি হয়নি উল্লাস পালের।

কিন্তু দমে যাননি তিনি। স্থানীয় কার্তিকপুর পালপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষা জীবন শুরু করেন। সেখান থেকে পঞ্চম শ্রেণি পাস করে কার্তিকপুর উচ্চবিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন। পরে ঢাকা নর্দান কলেজ থেকে এইচএসসিতেও জিপিএ–৫ পান। এরপর ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘গ’ ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষায় মেধাতালিকায় ৪৬৩তম হয়েছিলেন তিনি।

পড়াশোনা শেষে চাকরির জন্য ৮টি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। পরে চাকরি হয় প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকে। ২০২৩ সালের ১ মার্চ থেকে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক নড়িয়া শাখায় চাকরি করছেন তিনি। ব্যাংকের চাকরি নিয়ে সন্তুষ্ট থাকেননি। বিসিএসের জন্য চেষ্টা করছিলেন। ৪০ ও ৪১তম বিসিএসের পর অবশেষে ৪৩তম বিসিএসে পেলেন চূড়ান্ত সফলতা। মোবাইল, কম্পিউটার চালনায় দক্ষ তিনি। লেখালেখি ও স্বাক্ষর সব কাজই বাম হাত দিয়ে করে থাকেন।

৪৩তম বিসিএসে উত্তীর্ণ হওয়া উল্লাস পাল বলেন, ‘শারীরিক ত্রুটি নিয়ে জন্মগ্রহণ করি। অন্য সবার মতো স্বাভাবিকভাবে হাঁটতে পারতাম না আমি। পরিবারের সমর্থনে এতদূর এসেছি। ৪৩তম বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হই। তবে আমার অ্যাডমিন ক্যাডার হওয়ার ইচ্ছা। আজ আমার সাফল্যের জন্য সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।

উল্লাসের বাবা উত্তম কুমার পাল বলেন, ‘কখনো কল্পনা করিনি, আমার ছেলে বিসিএস ক্যাডার হবে। তার বিসিএস ক্যাডার হওয়ায় আমার মনটা ভরে গেছে। তাই আমরা খুশি, এলাকাবাসীও খুশি। তিনি আরও বলেন, গ্রামের লোকজন বিভিন্ন কথা বললেও আমি হাল ছাড়িনি। উল্লাসকে চিকিৎসা ও লেখাপড়া করিয়েছি। আমার ছেলের জন্য সবাই আশীর্বাদ করবেন।’

(ঢাকাটাইমস/২০জানুয়ারি/এআর/ইএইচ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
ফরিদপুরে যৌথবাহিনীর অভিযানে গ্রেপ্তার ১৫
আখাউড়ায় সরকারি ভূমি দখলমুক্ত, জরিমানা
হিযবুত তাহরীরের সঙ্গে প্রশাসক এজাজের জড়িত থাকার অভিযোগ প্রসঙ্গে যা জানাল ডিএনসিসি
সিলেটে ইসলামী ব্যাংকের উদ্যোগে রেমিট্যান্স বিষয়ক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা