বাণিজ্যমেলা

ছুটির দিনে ক্রেতা কম, দেখার মানুষ বেশি 

শাকিল আহম্মেদ, রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ)
| আপডেট : ২৬ জানুয়ারি ২০২৪, ১৭:০৪ | প্রকাশিত : ২৬ জানুয়ারি ২০২৪, ১৬:৩৯

ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা মানেই যেন ক্রেতা-দর্শনার্থীতে কানায় কানায় পরিপূর্ণ মেলা প্রাঙ্গণ। দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখরিত থাকবে পুরো মেলা। স্টলগুলোর সামনে থাকবে ক্রেতাদের ভিড়। তবে মেলা শুরু থেকে দর্শনার্থী না থাকায় ব্যবসায়ীরা হতাশ হলেও শুক্রবার সরকারি ছুটির দিন দুপুর থেকে দর্শনার্থীদের আনাগোনা চোখে পড়ার মতো। কিন্তু বিক্রি কম।

বিক্রেতারা এখনো ছাড় ঘোষণা না করা ও স্টল প্রস্তুত না হওয়ায় এমনটা ঘটছে বলে ধারণা করছেন মেলা সংশ্লিষ্টরা।

সরেজমিন ঘুরে জানা যায়, এবার যাতায়াত ব্যবস্থাসহ মেলার অভ্যন্তরীণ সার্বিক নিরাপত্তা সন্তোষজনক থাকায় দূর জেলার লোকজন আসা শুরু করেছে। তবে এখনো স্টল নির্মাণের হাতুরি পেটা আওয়াজে বিব্রত দর্শনার্থীরা।

মেলায় এবার মাগুরা থেকে এসেছেন ফেরদৌস আলম পরাগ। তিনি বলেন, স্থায়ী প্যাভিলিয়ন আর মেলায় প্রবেশকালে শেখ হাসিনা সরণি সড়ক দেখে বিমোহিত হয়েছি। পাশাপাশি দৃষ্টিনন্দন বাণিজ্যমেলার ভবন ও আশপাশ অত্যন্ত সুন্দর ও সুশৃঙ্খল। তবে মেলায় থাকা পণ্যগুলোর দাম বেশি মনে হলো। তাছাড়া এসব পণ্য সাধারণ হাট বাজারে পাওয়া যায়। বিদেশি পণ্য হলেও তার দাম আকাশ ছোঁয়া।

এবার পাটপণ্য নিয়ে দৃষ্টিনন্দন প্যাভিলিয়ন সাজিয়েছেন পাট করপোরেশন। তাদের প্যাভিলিয়নে ২৮টি স্টলে ৫ শতাধিক পণ্য রেখেছেন।

কথা হয় বিক্রেতা নিশিতার সঙ্গে। তিনি বলেন, এবার ২১ দিন পর মেলা শুরু হওয়ার প্রভাবে ক্রেতা নাই। তাছাড়া দেরি করে স্টল করায় নানা সাজসজ্জা করতে হচ্ছে।

মেলা ঘুরে দেখা যায়, যত্রতত্র স্টল বসেছে খোলা খাবারের। অস্বাস্থ্যকর আচার, মনেক্কা, নিমকি, ফুসকাও পাওয়া যাচ্ছে মেলায়। মেলায় ক্রেতা দর্শনার্থীদের মন কাড়তে এবার আকর্ষণীয় কিছু নাই। গতবারের মতো এবার রাজা চা এলেও সারা নেই খুব একটা। চোখে পড়েনি স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের কর্মযজ্ঞ, এমনকি ভোক্তা অধিকার সংস্থার কোনো কার্যক্রম।

তবে রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আইভী ফেরদৌস বলেন, মেলায় আমাদের পক্ষ থেকে আগত দর্শনার্থী বা ব্যবসায়ীদের স্বাস্থ্যগত কোনো সমস্যায় পড়লে চিকিৎসার জন্য দুজন চিকিৎসক ও নার্স নিয়োজিত রয়েছেন।

এদিকে মেলার প্রথম সপ্তাহে ৪০ ভাগ স্টল এখনো বাকি থাকায় চাহিদামতো পণ্য পাচ্ছে না ক্রেতারা। ফলে প্রথম দিকে যারা আসছেন কেবল ঘুরে দেখে খেয়ে-দেয়ে ফিরে যাচ্ছেন।

মেলায় এবার দেখা গেছে শিশুদের জন্য বিনোদন পার্ক। রাখা হয়েছে বিভিন্ন রাইড। তবে তা নিম্নমানের বলে অভিযোগ করেছেন অনেকে।

রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে ঘুরতে আসা ব্যবসায়ী আরমান মোল্লা বলেন, দেশি-বিদেশি প্রয়োজনীয় পোষাক, জুতা, আসবাব, সাজসজ্জা ও প্রসাধনী জাতীয় পণ্যের সমাহার দেখলাম। তবে মান ভালো না। পাশাপাশি মেলায় শিশুপার্কের রাইডের কোনো মান নেই। এসব সাধারণ লোকজ মেলায় দেখা যায়।

মেলার ব্যবসায়ীরা শুক্র ও শনিবার সরকারি ছুটির দিনকে বেছে নিচ্ছেন বিক্রির দিনকে। এ হিসেবে পুরো মাসে মাত্র ৮ থেকে ১০ দিনের টার্গেট পরিমাণ বিক্রি সারতে চান তারা।

টেস্টিট্রিট নামীয় খাবার কোম্পানির বিক্রেতা মনিরুল ইসলাম বলেন, সরকারি ছুটির দিনে উপস্থিত ভালো হলে আশা পূরণ হয়। আর শেষ দিকে বিক্রি হয় বেশি।

দর্শনার্থীদের অভিযোগ, মেলায় আগত স্টল ও প্যাভিলিয়নে যে-সব পণ্য বিক্রির জন্য রাখা হয়েছে তাতে নতুনত্ব কিছু নাই। এসব সাধারণ হাট বাজারে পাওয়া যায়। অথচ এটি আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা!

এদিকে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা সরকারি ছুটির দিনের আশা করলেও লোকসানের আশঙ্কা করছেন অনেকে।

তীব্র শীত কিছুটা কমতে শুরু করেছে। দর্শনার্থীরা দল বেঁধে আসবে এমন প্রত্যাশা যেমন ব্যবসায়ীদের। তেমনি মেলা ঘুরে এবার নতুন কিছু না পেয়ে পুরোদমে নিরাশ সীমিত দর্শনার্থীরা।

আব্দুল্লাহ এন্টারপ্রাইজের ঠিকাদার ও রূপগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছালাউদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, এবার মেলায় যাতায়াতে চারদিক থেকে বিআরটিসি বাসসহ গণপরিবহন রয়েছে। ফলে খুব সহজে মেলা ঘুরে যেতে পারেন যে কেউ। ফলে গত বছরের চেয়ে ভালো সাড়া পাওয়া যাবে।

মেলায় দায়িত্বরত কর্মী ও ছাত্রলীগ নেতা আজমির হোসেন বলেন, সকালে খুব একটা লোক আসে না। তবে বেলা বাড়ার সাথে সাথে দর্শনার্থীরা মেলায় প্রবেশ করেছেন দলে দলে।

ট্র্যাফিক পুলিশে দায়িত্বরত এএসআই নাজমুল ইসলাম বলেন, এতদিন সড়কে চাপ ছিল না। শুক্রবার হওয়ায় দুপুরের পর থেকে মানুষজন মেলায় আসতে শুরু করেছে। তাই ঢাকা বাইপাস সড়কে যানজট হয় মাঝে মাঝে। এসব নিয়ন্ত্রণে আমরা স্পটে স্পটে কাজ করছি।

পাশাপাশি ঢাকা বাইপাস সড়কেও এবার যানজটমুক্ত রাখতে বিপুল পরিমাণ পুলিশ দায়িত্বে রয়েছেন।

সূত্রমতে, এবারের মেলায় দেশ বিদেশের মোট ৩৩০টি স্টল, প্যাভিলিয়ন ও মিনি প্যাভিলিয়ন অংশ নিয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে ১৮টি বিদেশি স্টল। এ ছাড়া স্থানীয় উদ্যোক্তারাও তাদের পণ্য প্রদর্শন ও বিক্রির জন্য স্টল সাজাচ্ছেন। ইপিবির আশা মেলায় এবার ৫শ কোটি টাকার রপ্তানি আদেশ পাওয়া যাবে।

(ঢাকা টাইমস/২৬জানুয়ারি/এসএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

অর্থনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

অর্থনীতি এর সর্বশেষ

ক্রেডিট কার্ড ও বিনিয়োগের কিস্তি বিলম্ব ফি ছাড়া জমা নিবে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক

ব্যারিস্টার খায়রুল আলম চৌধুরী এবি ব্যাংকের চেয়ারম্যান পুনর্নির্বাচিত

ফোরকে ডিসপ্লেসহ ৯ মডেলের ওয়ালটন মনিটর বাজারে

‘বুককিপিং এন্ড একাউন্টিং’ এর উপরে প্রশিক্ষণ দেবে বিসিক 

ইউনিয়ন ব্যাংকের ২১ দিনব্যাপী ফাউন্ডেশন কোর্সের সমাপনী

দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াচ্ছে: বাংলাদেশ ব্যাংক

সোনালী ব্যাংকের আইটি অডিট সম্পাদনে কেপিএমজি’র সঙ্গে চুক্তি

হামদর্দের নতুন হারবাল ওষুধ অর্থোফিটের লঞ্চিং অনুষ্ঠিত

ইসলামী ব্যাংকের ইন্টার্নশিপ প্রোগ্রাম উদ্বোধন

ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের অর্ধ-বার্ষিক ব্যবসায় সম্মেলন অনুষ্ঠিত

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :