গাইবান্ধায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জোড়া খুনের আসামি গ্রেপ্তার

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে ধানের জমিতে বিদ্যুতের সংযোগ দিয়ে প্রতিপক্ষের দুজনকে হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি হাফিজার রহমানকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১৩।
শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে র্যাব-১৩, সিপিসি-৩ গাইবান্ধা এর কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি নিশ্চিত করেন র্যাব-১৩, রংপুরের অধিনায়ক কমান্ডার আরাফাত ইসলাম।
এরআগে বৃহস্পতিবার রাত দুইটার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কুমিল্লা জেলার বুড়িচং থানাধীন ইছাপুর বরশা বাজার এলাকা এই পলাতক সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে গ্রেপ্তার করেন তারা।
গ্রেপ্তারকৃত সাজাপ্রাপ্ত আসামি হাফিজার রহমান ওই উপজেলার দহবন্দ ইউনিয়নের পূর্ব ঝিনিয়া গ্রামের মৃত আবুল হোসেনের ছেলে।
র্যাব-১৩, রংপুরের অধিনায়ক কমান্ডার আরাফাত ইসলাম জানান, জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার দহবন্দ ইউনিয়নের পূর্ব ঝিনিয়া গ্রামের হজরত আলীর সাথে একই গ্রামের আব্দুল জলিলের জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। বিরোধপূর্ণ ওই জমিতে হজরত আলী আমন ধান চাষ করে। আদালতে মামলার রায় নিজের পক্ষে পেয়ে ২০১৬ সালের ১২ নভেম্বর আব্দুল জলিল তার লোকজন নিয়ে ধান কাটতে যান। ধান কাটার বিষয়টি আগেভাগে জানতে পেরে হযরত আলী গোপনে জমির পার্শ্ববর্তী তার রাইচ মিল থেকে বিদ্যুতের তাঁর পেতে সম্পূর্ণ জমি ঘিরে রাখে।
পরে ওইদিন সকালে আব্দুল জলিলের আত্মীয় তসলিম উদ্দিন বেশকিছু নারী-পুরুষ শ্রমিক নিয়ে ওই জমিতে ধান কাটতে নামলে প্রথমে তসলিম উদ্দিন বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে বিদ্যুতায়িত হয়। পরে তাকে উদ্ধার করতে গিয়ে তার চাচাতো বোন মর্জিনা খাতুনও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়। এতে ঘটনাস্থলেই তাদের দুজনেরই মৃত্যু হয়।
পরে এ ঘটনায় নিহত তসলিম উদ্দিনের বাবা মফিজল হক বাদী হয়ে হাফিজার রহমানকে প্রধান আসামি করে ৭ জনের বিরুদ্ধে ওইদিন রাতেই সুন্দরগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডে অপরাধীদের অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় সাত আসামির মধ্যে আদালত তিন সহোদর আসামির মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন। রায় ঘোষণার পর থেকেই আসামি হাফিজার রহমান পলাতক ছিলেন।
কমান্ডার আরো জানান, গ্রেপ্তারকৃত আসামি দীর্ঘদিন ধরে নিজেকে আত্মগোপনে রেখে বারবার তার অবস্থান পরিবর্তন করতেন। কিন্তু র্যাব-১৩ গোয়েন্দা কার্যক্রমের মাধ্যমে আসামি হাফিজার রহমানের খোঁজার কার্যক্রম চালু রেখেছিল। পরে বৃহস্পতিবার আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-১৩ ও কুমিল্লা র্যাব-১১ এর যৌথ অভিযানিক দল কুমিল্লা জেলার বুড়িচং থানার ইছাপুর বরশা বাজার এলাকা গভীর রাতে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে মৃত্যু দন্ডাদেশপ্রাপ্ত ওয়ারেন্টভুক্ত সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি নিজেকে আত্মগোপনে রাখার কথা স্বীকার করেছে। সকল আইনানুগ কার্যক্রম গ্রহণের জন্য আসামিকে ঘটনাস্থল থানা সুন্দরগঞ্জে হস্তান্তর করা হবে বলেও জানান র্যাব-১৩, রংপুরের অধিনায়ক কমান্ডার আরাফাত ইসলাম।
(ঢাকা টাইমস/০২ফেব্রুয়ারি/প্রতিনিধি/এসএ)

মন্তব্য করুন