ফসলি জমির মাঝে ব্রিজ তৈরি করে আলোচনায় ইউপি সদস্য

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি, ঢাকা টাইমস
 | প্রকাশিত : ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ২৩:২৪

অবিশ্বাস্য হলেও সত্য। ফসলি জমির মাখ খানে খালের উপর সরকারি বরাদ্দের টাকায় ব্রিজ তৈরি করে সমালোচনার জন্ম দিয়েছেন এক ইউপি সদস্য। লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার মান্দারী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মাহবুবুর রহমান রাজু ব্রিজটি তৈরি করেছেন।

ব্রিজের দুই পাশে কোনো রাস্তা না থাকলেও ইউপি সদস্য নিজের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা থেকে ওই স্থানে ব্রিজটি তৈরি করা হয়েছে বলে স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা গেছে।

জনস্বার্থে ব্রিজের বরাদ্দ হলেও ঘটনা ঘটছে ভিন্ন। ওই ইউপি সদস্য সেখানে বাড়ি করবেন বলেই ব্রিজটি করিয়েছেন বলে জানান স্থানীয়রা। কাজের আগেই বিল পেয়ে যাওয়ায় কেউ কোনো সমস্যা করতে পারবে না বলেও দাবি করেছেন ইউপি সদস্য রাজু।

সরেজমিনে মান্দারী ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের রতনপুর এলাকায় গিয়ে রাস্তা ছাড়াই খালি স্থানে ব্রিজটি দেখা যায়। এ ব্রিজ জনস্বার্থে ব্যবহারেরও সুযোগ নেই। ব্রিজের বিপরীত পাশের খালি জমিতে বাড়ি করার উদ্দেশ্যে ইউপি সদস্য রাজু সীমানা দিয়ে রাখতেও দেখা গেছে।

নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানান, ইউপি সদস্য রাজুর এলাকা রতনপুর গ্রামের অনেক স্থানে বাঁশের সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করতে হচ্ছে জনসাধারণকে। কিন্তু তার সেদিকে লক্ষ্য নেই। ঘটনাস্থলে খালের নালার পাশে তার জমি রয়েছে। সেখানে তিনি বাড়ি করবেন। এজন্যই তিনি সরকারি বরাদ্দের টাকায় ব্রিজটি নির্মাণ করেছেন। জনসাধারণ কখনোই এ ব্রিজ ব্যবহার করতে পারবে না। ব্যক্তিগত স্বার্থেই রাজু ব্রিজটি করিয়েছেন।

সংশ্লিষ্ট কার্যালয় সূত্র জানা যায়, ২০২৩ সালের ১০ সেপ্টেম্বর জেলা প্রশাসক বরাবর লক্ষ্মীপুর-৩ (সদর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য একেএম শাহজাহান কামালের বরাদ্দে উন্নয়নমূলক কাজের চিঠি ইস্যু করা হয়। এটি ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার (কাবিটা) কর্মসূচির আওতায় ১ম কিস্তির প্রকল্প ছিল। ২০২৩ সালের ৩ আগস্ট দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর কর্তৃক স্মারক প্রদান করা হয়। ওই তালিকার ২৯ নম্বরে মান্দারী স্কুল রোড হারুনের বাড়ির পাশে ব্রি নির্মাণে ৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। ইস্যুকৃত ওই চিঠিতে ১৪ সেপ্টেম্বর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফুর রহমান ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোশারফ হোসেন স্বাক্ষর করেন।

মান্দারী ইউনিয়ন পরিষদের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মাহবুবুর রহমান রাজু বলেন, আমিতো কাজ করেছি। অনেকে কাজ না করেই বিল উত্তোলন করে নিয়ে যান। তাদের নিয়ে কোনো সংবাদ হয় না। এখন আমারটা নিয়ে মাতামাতি কেন।

বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সদর উপজেলা কার্যালয়ের সামনে ক্ষিপ্ত হয়ে জনসম্মুখে ইউপি সদস্য রাজু বলেন, কাজের আগেই আমি বিল পেয়ে গেছি। পিআইও আমাকে বিল দিয়ে দিয়েছেন। নিউজ করে কোনো লাভ নেই।

সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোশারফ হোসেন বলেন, আমরা চেষ্টা করেছি ব্রিজটির প্রকল্প পরিবর্তন করার জন্য। কিন্তু বরাদ্দটি সাবেক সংসদ সদস্য একেএম শাহজাহান কামালের ছিল। উনি মারা গেছেন। তার স্বাক্ষর ছাড়া পরিবর্তনের সুযোগ নেই। আর কাজ না করে বিল নেওয়ারও সুযোগ নেই।

(ঢাকাটাইমস/২৫ফেব্রুয়ারি/পিএস)

সংবাদটি শেয়ার করুন

সারাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :