মোংলায় পুলিশ, নিরাপত্তাকর্মী ও শ্রমিকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া

বাগেরহাটের মোংলার ইপিজেড এলাকায় পুলিশ ও ইপিজেড নিরাপত্তাকর্মীদের সঙ্গে শ্রমিকদের ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়া ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে।
ইপিজেডে ভারতীয় মালিকানাধীন একটি প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক ছাঁটাইয়ের ঘটনায় সোমবার সকাল থেকেই সেখানে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। ওই উত্তেজনার জেরে ইপিজেড ফটকে অবস্থান নিয়ে শ্রমিকরা বিক্ষোভ শুরু করলে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়াসহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় কারখানা ভাঙচুরেরও ঘটনা ঘটেছে।
পুলিশ রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, শ্রমিক ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা মূল ফটকের সামনে বিক্ষোভ করতে থাকলেকে পুলিশ শ্রমিকদের শান্ত করার চেষ্টা করে। এক পর্যায়ে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বেপজা সিকিউরিটি ও পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ বেধে যায়। এক পর্যায়ে শ্রমিকরা পুলিশকে লক্ষ করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। এ সময় বেশ কয়েকজন শ্রমিক ও পুলিশ আহত হন।
মোংলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম আজিজুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত, শ্রমিকরা ইপিজেড ফটক ছেড়ে চলে গেছে।
তিনি বলেন, ইপিজেডের ভিআইপি লাগেজ কারখানায় রবিবার প্রায় ১ হাজার ৮শ’ শ্রমিক ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরে আজ আজ ছাঁটাই কার্যকর করা হয়।
মূলত এ ঘটনার জের ধরে সকাল ৯টা থেকে উত্তেজনা শুরু হয়।
তবে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে জানানো হয় যে, নিয়ম অনুযায়ী শ্রমিকদের এক মাসের বেতন, ভাতা ও বোনাস প্রদান করেছে। কিন্তু শ্রমিকদের দাবি তারা কোনো টাকা পায়নি।
শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ভারতীয় প্রতিষ্ঠান ভিআইপির ৭টি প্লান্টের প্রায় ১৮শ শ্রমিককে ছাঁটাই করা হয়েছে। সোমবার সকালে কাজে এসে এমন খবর শুনে তারা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। পরে প্রতিষ্ঠানটির ৭টি প্লান্টের সামনে অবস্থান নিয়ে তারা বিক্ষোভ শুরু করেন। এক পর্যায়ে সেখান থেকে ইপিজেডের প্রধান ফটকে গেলে নিরাপত্তা কর্মীরা তাদের আটকে দেয়। সেখান থেকে বের হতে না পেরে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়।
সুবর্ণা ও তানিয়া নামের ওই কারখানার দুই নারী শ্রমিক অভিযোগ করে বলেন, আমরা বেতন পাইনি। আবার আমাদের বাদও দিয়ে দিয়েছে। বেতন না পাওয়ার কারণে আমরা আন্দোলন করছি। কিন্তু আমাদের উপর হামলা করা হয়েছে। হামলায় ১০ জনের বেশি শ্রমিক আহত হয়েছে বলেও জানান তারা।
বাগেরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রাসেলুর রহমান বলেন, মোংলা ইপিজেডের ভিআইপি নামের কারখানার শ্রমিকদের ছাঁটাইকে কেন্দ্র করে ঘটনার সূত্রপাত। কারখানা কর্তৃপক্ষ বলছে, নিয়মের মধ্যে থেকেই তারা কর্মী ছাঁটাই করছে। তবে শ্রমিকদের দাবি, তারা যথাযথ পাওনা বুঝে পায়নি। এটা নিয়েই অসন্তোষ সৃষ্টি হয়। আমরা তাদের বুঝাতে চেষ্টা করেছি তারা যেন শান্তিপূর্ণভাবে তাদের দাবি আদায়ের চেষ্টা করে, কোনো বিশৃঙ্খলা যেন না হয়। কিন্তু তারা উত্তেজিত হয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপসহ আশপাশে ভাঙচুর শুরু করে। তখন বাধ্য হয়ে রাবার বুলেট ছুড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দিতে হয়েছে।
(ঢাকাটাইমস/২৫মার্চ/প্রতিনিধি/পিএস)

মন্তব্য করুন