ঈদকে সামনে রেখে ডিবি-সাংবাদিক পরিচয়ে অপহরণের ফাঁদ

রাজধানীর পুরান ঢাকার কদমতলীর জনতাবাগ এলাকায় অভিযান চালিয়ে অপহরণ চক্রের চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি), র‌্যাব ও সাংবাদিক পরিচয়ে এই চক্রের নেতৃত্বে সেনাবাহিনীর সাবেক একজন সদস্য। তার নেতৃত্বে চক্রটি ঈদকে টার্গেট করে অপহরণের মিশনে নেমেছিল।

পুলিশ বলছে, মাওয়া থেকে ডিবি পরিচয়ে এক ব্যক্তিকে অপহরণ করে মুক্তিপণ নিয়ে নরসিংদীর মাধবদী এলাকায় ফেলে পুরান ঢাকা হয়ে মুন্সীগঞ্জে ফেরার পথে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে চক্রের মূলহোতাসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন- সেনাবাহিনীর সাবেক করপোরাল মিজানুর রহমান, মনির হোসেন, শান্ত মিয়া ও মহসীন আহমেদ। তাদের কাছ থেকে অপহরণের কাজে ব্যবহৃত মাইক্রোবাস, চাপাতি, দা, ডিবি পুলিশ, সাংবাদিক পরিচয়পত্র, দড়ি, গামছা, মোবাইল সেট, সুইচ গিয়ার, খেলনা পিস্তল এবং হ্যান্ডকাপ উদ্ধার করা হয়।

সোমবার (২৫ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর ওয়ারীতে নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ডিএমপির ওয়ারী বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) ইকবাল হোসাইন।

ডিসি বলেন, ওয়ারীর কদমতলীর জনতাবাগ এলাকায় অভিযান চালিয়ে ভুয়া ডিবি পরিচয়ে একটি অপহরণ চক্রের চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। চক্রটির মূলহোতা মিজানুর রহমান। তিনি সেনাবাহিনীর সাবেক করপোরাল। চাকরিকালীন সময়ে র‌্যাবেও কর্মরত ছিল। সে অপহরণের পর ভুক্তভোগীদের এসব পরিচয় দিয়ে ভয়-ভীতি দেখিয়ে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করত। তার চক্রের সবাই মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া এলাকার বাসিন্দা। তিন বছর আগে সেনাবাহিনী থেকে সাভাবিক অবসরে যায়। এরপর থেকেই অপহরণ চক্র গড়ে তুলেছে।

পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, মিজানুর রহমান নিজেকে কখনো সাংবাদিক পরিচয় দিতো। এ জন্য তিনি একটি পত্রিকার আইডি কার্ড ব্যবহার করতেন। এছাড়া টার্গেটকৃত কোনো ব্যক্তিকে তুলে নিতে ডিবি পরিচয় ব্যবহার করত। এরপর গাড়িতে তুলে খেলনা পিস্তল দেখিয়ে ভয় দেখাতো। এমন কি গামছ দিয়ে হাত-পা বেঁধে নির্যাতন করে টাকা পয়সা হাতিয়ে নিয়ে নির্জন এলাকায় ফেলে যেতো। আমরা তাকে গ্রেপ্তারের পর মোবাইল ফোনে অপহরণের তথ্য প্রমাণ পেয়েছি। তবে ভুক্তভোগীকে শনাক্ত করতে পারিনি।

ইকবাল হোসাইন বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আমরা জানতে পেরেছি মিজান ও তার সহকারীরা মূলত ঈদকে টার্গেট করে অপহরণের মিশনে নেমেছে। সোমবার সকালে মাওয়া থেকে একজনকে অপহরণ করে। এরপর তার কাছ থেকে টাকা পয়সা হাতিয়ে নিয়ে নরসিংদীর মাধবদী এলাকায় ফেলে কদমতলী এলাকা দিয়ে যাওয়ার সময়ে আমরা অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করি। গ্রেপ্তার মনিরের বিরুদ্ধে মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। তবে তারা এখন পর্যন্ত কতজনকে অপহরণ করেছে সেই বিষয়ে তদন্ত চলছে।

(ঢাকাটাইমস/২৫মার্চ/এসএস/কেএম)