তিনবার ‘ইয়া রাসুলুল্লাহ’ বলে হামলা শুরু করে ইরান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ১৪ এপ্রিল ২০২৪, ২০:৫৬| আপডেট : ১৪ এপ্রিল ২০২৪, ২১:২৫
অ- অ+

ইসরায়েলের ভূখণ্ড লক্ষ্য করে প্রায় ৩০০ ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান। ‘ট্রু প্রোমিজ’ বা ‘সত্য প্রতিশ্রুতি’ নামে অভিযানের আওতায় এসব ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছে। তবে ইরানের দাবি দখলদার ইসরায়েলের বিরুদ্ধে এই অভিযানের উদ্দেশ্য চূড়ান্ত বা সর্বাত্মক কোনো যুদ্ধ শুরু করা নয়। কেননা এতে সমস্ত সামরিক শক্তি ও প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়নি। কিন্তু এ অভিযানে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতা এবং এর সঠিক লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার ক্ষমতার বিষয়টি প্রমাণিত হয়েছে।

গত ১ এপ্রিল সিরিয়ায় অবস্থিত ইরান দূতাবাসের কনস্যুলেট ভবনে ইসরায়েলের হামলার জবাব হিসাবে ইসরায়েলে এ অভিযান চালিয়েছে ইরান। তবে এ অভিযানের কিছু দিক তুলে ধরা হলো।

এক: ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ইরানের ‘সত্য প্রতিশ্রুতি’ অভিযানের জন্য ‘ইয়া রাসুলুল্লাহ’ অর্থপূর্ণ কোড নির্বাচনের মধ্য দিয়ে সবাইকে একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিয়েছে তেহরান। আর তা হল সমস্ত মুসলিম জাতির পক্ষ থেকে ইসরায়েলকে হামলার লক্ষ্যবস্তু বানিয়েছে ইরান। অর্থপূর্ণ কোড বলতে ‘ইয়া রাসুলুল্লাহ’ শব্দ তিনবার উচ্চারণের মধ্য দিয়ে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু করা হয়।

দুই: ইসরায়েলের রেড লাইন অতিক্রম করে ইরান তার নিজের মাটি থেকে এবং ইসরায়েলের ধারণাকে ভুল প্রমাণিত করে ব্যাপক এবং বড় ধরণের আক্রমণ চালিয়েছে।

তিন: 'সত্য প্রতিশ্রুতি' অভিযানে ইরান এবং মধ্যপ্রাচ্যের প্রতিরোধ শক্তিগুলো এমন সময় সবচেয়ে বড় সামরিক অভিযানের অভিজ্ঞতা লাভ করেছে যখন এই হামলা ঠেকানোর জন্য ইসরায়েল ও তার মার্কিন মিত্ররা সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়েছে। যদিও ইরান সবচেয়ে কম সংখ্যক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে।

চার: এ অভিযানের মাধ্যমে ইরান সবাইকে এটা দেখিয়ে দিয়েছে যে, কৌশলগত সামরিক সফলতা অর্জনের সক্ষমতা ইরানের হাতে রয়েছে। আর এই সফলতার একটি হচ্ছে, ইরান বহু বছর ধরে বলে আসছিল তারা একই সাথে পশ্চিম এশিয়ার বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে শত্রুদের বিরুদ্ধে আঘাত হানতে সক্ষম। আর এটা প্রমাণ করাই ইরানের বড় সফলতা।

পাঁচ: ইরানের ‘সত্য প্রতিশ্রুতি’ অভিযানের উদ্দেশ্য যদিও চূড়ান্ত বা সর্বাত্মক যুদ্ধ শুরু করা নয়। অর্থাৎ এটা আসল যুদ্ধ নয়। সে কারণে ইরান এ হামলায় সমস্ত শক্তি কিংবা জটিল সামরিক প্রযুক্তি ব্যবহার করেনি। তবে, ইরান তার নির্ভুল ক্ষেপণাস্ত্র হামলার সক্ষমতার বিষয়টি ভালোভাবে তুলে ধরেছে। চূড়ান্ত বা সর্বাত্মক যুদ্ধ এড়াতে ইরান শুধুমাত্র ইসরায়েলের সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে। ইসরায়েল ইরানের অনেক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ঠেকাতে সক্ষম হলেও অনেক ক্ষেত্রেই তারা ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে।

ছয়: ইরানের এই অভিযানের আরেকটি দিক হচ্ছে, ঠিক কোথা থেকে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করা হয়েছে, হামলার লক্ষ্যবস্তু, ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্রের সংখ্যা ও এগুলোর ধরন, শত্রুর ক্ষয়ক্ষতি, অভিযানের মাত্রা প্রভৃতি সম্পর্কে অনেক কিছুই হয়তো অজানা রয়ে যাবে কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, ইরান তার ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে বিশ্বের সবচেয়ে বড় সামরিক অভিযান চালিয়েছে।

সাত: ইরানের এ অভিযান এই অঞ্চলে আমেরিকার সবচেয়ে বড় মিত্র ইসরায়েলের অত্যাধুনিক সামরিক শক্তি ও প্রযুক্তি সম্পর্কে যে সমস্ত অতিরঞ্জিত কথাবার্তা প্রচলিত রয়েছে তাকে ভুল প্রমাণিত করেছে। তাদের একটি দাবি ছিল যে, ইরান কোনো ধরণের সামরিক পদক্ষেপ নেয়ার আগেই অত্যাধুনিক ইলেক্ট্রনিক প্রযুক্তির সহায়তায় ক্ষেপণাস্ত্র ও উৎক্ষেপণ যন্ত্রগুলোকে নিষ্ক্রিয় করতে সক্ষম। কিন্তু ইরান এবার এ সব দাবির অসারতা প্রমাণ করেছে।

আট: ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ইরানের এ অভিযানকে দুটি দিক থেকে মূল্যায়ন করা যায়। প্রথমত, ইরান শত্রুদের সমস্ত হিসাব নিকাশ পাল্টে দিয়েছে বিশেষ করে শত্রুদেরকে বুঝিয়ে দিয়েছে ইরান নিজের মতো করে হিসাব করে চলে এবং শক্তির ভারসাম্য পাল্টে দিয়েছে। আর দ্বিতীয়ত, এই পরিবর্তন শত্রুদের মেনে নেয়া ছাড়া অন্য কোনো উপায় নেই।

সূত্র: পার্সটুডে (রেডিও তেহরান)

(ঢাকাটাইমস/১৪এপ্রিল/এমআর)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
যাত্রাবাড়ীতে ৪৮ কেজি গাঁজাসহ তিন মাদক কারবারি গ্রেপ্তার, পিকআপ জব্দ
নির্বাচনকে ব্যাহত করতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি পরিকল্পিত: বিএনপি
কক্সবাজারের যৌথ অভিযানে আগ্নেয়াস্ত্রসহ ১ জন আটক
গোপালগঞ্জে সহিংসতা ও প্রাণহানির ঘটনায় সরকারের তদন্ত কমিটি গঠন
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা