সরকার আমাদের স্পেস দিচ্ছে না: জিএম কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
 | প্রকাশিত : ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ২০:২৮

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার জাতীয় সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টিকে ‘স্পেস দিচ্ছে না’ বলে মন্তব্য করেছেন দলটির চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় নেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের (জি এম) তিনি বলেন, ‘আমরা নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন করছি, সরকারের সমালোচনা করছি। আমাদের দাঁড়াতে দেওয়া হচ্ছে না। গত নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হয়নি। সংসদে আমি বলেছি, নির্বাচন ভালো হয়নি। এমন বাস্তবতায় আর কোনো দল রাজনীতির মাঠে টিকবে না।’

শনিবার রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে পার্টির বর্ধিত সভায় এসব কথা বলেন জাপা চেয়ারম্যান।

জি এম কাদের বলেন, ‘বিএনপিকে তো মাঠে নামতেই দেওয়া হচ্ছে না। মাঠে থাকছে শুধু আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগ একদলীয় শাসন ব্যবস্থা চালুর চেষ্টা করছে। একদলীয় শাসন মানে একজন সুপ্রিম লিডার থাকবে, তিনি সব কিছুতেই জবাবদিহিতার ঊর্ধ্বে। তিনি ভোট করলে করতে পারেন, না করলে করবেন না। যারা নির্বাচিত হবেন তারা উনার অনুমতি নিয়ে নির্বাচিত হবেন। নির্বাচিতরা প্রথম আনুগত্য করবেন সুপ্রিম লিডারের আর দ্বিতীয় আনুগত্য থাকবে জনগণের কাছে।’

জাপা চেয়ারম্যান বলেন, ‘যদি নির্বাচনে কারচুপি হয়, তাহলে প্রথম দ্বিতীয় আনুগত্য থাকবে শুধু সুপ্রিম লিডারের প্রতিই। আমরা গৃহপালিত বিরোধীদল হলে তাদের (সরকারের) আপত্তি নেই। তিনি (সুপ্রিম লিডার) জানেন আমরা গৃহপালিত হতে রাজি হব না। তাই তারা পচা, মরা আবর্জনা নিয়ে বিরোধী দল তৈরি করতে চেষ্টা করছেন।’

জিএম কাদের বলেন, ‘আমরা না গেলেও নির্বাচন হতো, জাতীয় পার্টি হয়ত যেত। সরকারের এমন প্রস্তুতি ছিল। বিএনপি আন্দোলনে পরাস্ত হয়েছে, আমি তাদের দোষ দিচ্ছি না। দেশের স্বার্থে তারা কাজ করছে কিন্তু তারা সফল হয়নি। তাদের দোষটা আমার ঘাড়ে চাপিয়ে দিচ্ছে। তারা বলছে, আমি একটা বিশাল নেতা, আমি নির্বাচনে না গেলে নাকি দেশের ভবিষ্যৎই চেঞ্জ হয়ে যেত। আমি নিজেকে এত বড় নেতা মনে করি না। আমি নির্বাচনে না গেলেও দেশ এভাবেই চলত। এমন পরিস্থিতিই থাকত।’

আমাকে দোষ দিয়ে বিএনপি নিজেদের দোষ ঢাকার চেষ্টা করছে দাবি করে জি এম কাদের বলেন, ‘বিএনপি বলছে আমি নির্বাচনে না গেলেই নাকি নির্বাচন বানচাল হতো আর তারা ক্ষমতায় আসতে পারত। এগুলো হচ্ছে নিজেদের দোষ ঢাকার জন্য আমার ঘাড়ে দোষ দেওয়া।‘

জি এম কাদের বলেন, ‘যেসব দলের শেকড় নেই, সেসব দল সামনে রাখতে চেষ্টা করছে সরকার। নির্বাচনে ওই সব দলের পরিণতি কী? কিংস পার্টিগুলোর কী হয়েছে? ১৪ দলীয় জোটের কী অবস্থা? আওয়ামী লীগের গৃহপালিত মিত্রদের কী হয়েছে? জনগণের ওপর ভরসা রেখে রাজনীতি করতে হবে। এভাবে চলতে থাকলে দেশে রাজনৈতিক দলগুলো টিকবে না। এতে দেশে চরমপন্থার আর্বিভাব হতে পারে। তাই রাজনীতি করতে হবে হয় গলায় ফুলের মালা না হয় ফাঁসির রশি। এটা যারা গ্রহণ করতে পারবে তারাই রাজনীতিতে সফল হতে পারবে।‘

আওয়ামী লীগ তাদের রাজনৈতিক চরিত্র হারিয়েছে দাবি করে জি এম কাদের বলেন, এবারও আওয়ামী লীগ চেয়েছে এমন লোকজন যারা প্রথম আনুগত্য করবে তাদের কাছে আর দ্বিতীয় আনুগত্য করবে আমাদের কাছে। অনেকেই পোস্টরে ছবি দেয় না, জাতীয় পার্টির নাম ব্যবহার করে না... কিন্তু জাতীয় পার্টির প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে।

আওয়ামী লীগের জন্য নির্বাচন ছিল জীবন-মৃত্যুর সংগ্রাম উল্লেখ করে জি এম কাদের বলেন, তারা নির্বাচন করতে না পারলে তাদের অস্তিত্ব সংকটে পড়ত। বিদেশি কিছু শক্তির কথায় পরিষ্কার বোঝা গেছে তিনটি বড় শক্তি নির্বাচনকে সফল করতে চেয়েছে। আরও কয়েকটি দেশ সরকারকে সমর্থন দিচ্ছিল। তারা সিরিয়াসভাবেই সরকারকে সমর্থন দিচ্ছিল।

বর্ধিত সভায় আরও বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু এমপি, কো- চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার এমপি, এডভোকেট সালমা ইসলাম এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য মোঃ হাফিজ উদ্দিন আহমেদ এমপি, এডভোকেট মোঃ রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, মোস্তফা আল মাহমুদ, জহিরুল ইসলাম জহির, জহিরুল আলম রুবেল, উপদেষ্টা আশরাফুজ্জামান আশু এমপি, বিভিন্ন জেলার নেতৃবৃন্দ মধ্যে বক্তব্য রাখেন - আমিনুল ইসলাম ঝন্টু, আহসান আদেলুর রহমান, আহমেদ শফি রুবেল,এস এম ইয়াসির, মহসিন উল ইসলাম হাবুল, সামসুউদ্দিন রিংন্টু, এয়ার আহমেদ সেলিম, সাব্বির আহমেদ, ডাঃ আব্দুল হাই, সালা উদ্দিন আহমেদ মুক্তি, শফিকুল ইসলাম মধু, জাহিদ হাসান, আলহাজ্ব আবদুর রাজ্জাক, মোজাম্মেল হক, মোঃ নজরুল ইসলাম, মোঃ নাসির উদ্দিন, মোঃ জাফর উল্লাহ, কামরুজ্জামান মন্ডল,নূরুল আমিন ভুট্রা, আমির হোসেন ভূঁইয়া, এডভোকেট খন্দকার হাবিবুর রহমান বাচ্চু, ওমর ফারুক, আলাউদ্দিন, মোস্তফা জামান লিটন প্রমূখ।

আরও ছিলেন কো-চেয়ারম্যান মোস্তাফিজার রহমান মেয়র, প্রেসিডিয়াম সদস্য গোলাম কিবরিয়া টিপু এমপি, এস এম আব্দুল মান্নান, এটি ইউ তাজ রহমান, আব্দুর রশিদ সরকার, নাসরিন জাহান রতনা, ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী, নাজমা আক্তার, সৈয়দ দিদার বখত, এমরান হোসেন মিয়া, একেএম সেলিম ওসমান এমপি, মেজর অবঃ রানা মোহাম্মদ সোহেল, শেরিফা কাদের, একেএম মোস্তাফিজুর রহমান এমপি,শরিফুল ইসলাম জিন্নাহ এমপি প্রমুখ।

(ঢাকাটাইমস/২৭এপ্রিল/জেবি/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

রাজনীতি এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :