তীব্র গরমে বেড়েছে হাত পাখার কদর
একদিকে দেশজুড়ে চলছে তীব্র দাবদাহ। অন্যদিকে ঘন ঘন লোডশেডিং। এতে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে শহর থেকে প্রান্তিক পর্যায়ের জনজীবন। তীব্র গরমে পটুয়াখালী কুয়াকাটায় রাস্তার মোরে মোরে ফেরি করে বিক্রি করতে দেখা গেছে হাতপাখা। ক্রেতাদেরও এসব ক্রয়ে রয়েছে বেশ কদর।
উপজেলার পৌর শহর এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, এক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীকে হাত পাখা বিক্রিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। আর এসব হাত পাখা প্রতি পিস বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকায়। জানা গেছে, এর আগে এসব হাত পাখা ২০-২৫ টাকায় বিক্রি হতো। এসময় নানা বয়সের নারী-পুরুষদের হাতপাখা কিনতে ভিড় দেখা যায়।
বৈদ্যুতিক পাখার বিকল্প হিসেবে হাতপাখার ব্যবহার রয়েছে সুদীর্ঘকালের। গ্রামীণ জনজীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ এটি। মূলত তাল ও কেওয়া পাতা দিয়ে এক বিশেষ পদ্ধতিতে তৈরি হয় এই হাতপাখা। তালপাতা কেটে রোদে শুকিয়ে আল্পনার সাজে সহজেই এই হাতপাখাটি বানানো হয়। অন্যদিকে কেওয়া পাতা কেটে রোদে শুকিয়ে বাঁশের শলা ও সুতা দিয়ে এক বিশেষ পদ্ধতিতে তৈরি করা হয় এই হাতপাখা।
হাতপাখা বিক্রেতা আবদুল কাদের মিয়া বলেন, তিন বছর ধরে আমি কাজের ফাঁকে গরমের সিজনে হাতপাখা বিক্রি করছি। গত কয়েক বছরের চেয়ে এই বছর অনেক বেশি বিক্রি হয়েছে।
ক্রেতারা জানান, দিন ও রাতে বিদ্যুতের ঘন ঘন লোড শেডিং হওয়ার কারণে ফ্যানের বিকল্প হিসেবে আমরা নিরুপায় হয়ে হাত পাখা ক্রয় করছি।
স্থানীয় বাসিন্দা মো. জামাল মিয়া বলেন, লোডশেডিংয়ের এই বিরূপ পরিবেশ শীতল করতে হাতপাখার জুড়ি নেই। ২০ টাকার পাখা ৪০ টাকায় বিক্রি হওয়ায় চড়া মূল্যে হাতপাখা কেনা অনেক কঠিন হয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
এদিকে অসহনীয় গরম থেকে রেহাই পেতে স্বস্তির বৃষ্টির আশায় উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ইসতিসকার নামাজ আদায় করেও কোনো সুফল মিলছে না উপকূলের জনজীবনে। তীব্র তাপপ্রবাহের কারনে কৃষিক্ষেত্র এখন চরম হুমকির মুখে পড়েছে। বিভিন্ন মৌসুমি ফসল ক্ষেতে বসেই পুরছে। মাঠঘাট ফেটে এখন চৌচির। এতে উপকূলের কৃষকদের হতাশার যেন শেষ নেই। এছাড়াও প্রতিনিয়ত হাসপাতাল-ক্লিনিকগুলোতে বাড়ছে ডায়রিয়া আক্রান্ত নারী, শিশু ও বৃদ্ধ রোগীর সংখ্যা।
অন্যদিকে আবহাওয়া অফিস সারা দেশের তাপমাত্রা কমার বিষয়ে এখনো কোন সু-খবর দিতে পারেনি।
কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শংকর প্রসাদ অধিকারি বলেন, সুপেয় পানির অভাবে ডায়রিয়ার প্রধান কারন বলে তিনি উল্লেখ করেন।
(ঢাকাটাইমস/২৯এপ্রিল/এমআর)