রাইসির দাফন বৃহস্পতিবার, পাঁচ শহরে হবে জানাজা
হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিহত ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে বৃহস্পতিবার নিজ শহর মাশহাদে দাফন করা হবে। এর আগে দেশটির পাঁচটি শহরে রাইসিসহ তার সঙ্গীদের জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। ইরানের রাষ্ট্রীয় মর্যাদাবান ব্যক্তিদের শেষ বিদায়ের অনুষ্ঠানগুলো ‘বেশ কয়েকটি স্থানে এবং বর্ধিত সময়’ নিয়ে হয়ে থাকে।
এর আগে রবিবার ইরানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ পূর্ব আজারবাইজানের খোদা আফারিন অঞ্চলে একটি বাঁধ উদ্বোধনের পর ফিরে আসার সময় দুর্ঘটনার কবলে পড়ে প্রেসিডেন্ট ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি।
সফরে তিনটি হেলিকপ্টার ছিল। বেশ কয়েকজন মন্ত্রী ও কর্মকর্তাকে বহনকারী দুটি হেলিকপ্টার নিরাপদে অবতরণ করে। তবে বৈরী আবহাওয়া ও কুয়াশার কারণে সমস্যায় পড়ার পরে ক্র্যাশ ল্যান্ডিং করে প্রেসিডেন্টকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি।
হেলিকপ্টারটিতে প্রেসিডেন্ট ছাড়াও ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আবদুল্লাহিয়ান, তাবরিজের জুমার নামাজের ইমাম আয়াতুল্লাহ মোহাম্মদ আলী আল-ই-হাশেম, ইরানের পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের গভর্নর মালিক রহমেতিও ছিলেন।
সোমবার তাদের মরদেহগুলো উদ্ধারের পর দেশটির পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের তাবরিজ শহরে নিয়ে যাওয়া হয়। যেখানে মঙ্গলবার প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে একটি শোকযাত্রা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এতে অংশ নিয়েছেন হাজার হাজার মানুষ।
কাতারভিত্তিক সংবাদদমাধ্যম আল জাজিরা বলছে, মঙ্গলবার হাজার হাজার শোকার্ত মানুষ ইরানের পতাকা ও প্রয়াত প্রেসিডেন্ট রাইসির প্রতিকৃতি হাতে নিয়ে ইরানের তাবরিজ শহরের কেন্দ্রীয় চত্বর থেকে যাত্রা শুরু করেন।
মঙ্গলবার দিনের শেষের দিকে তাবরিজে বিদায়ী শোক মিছিলের পর প্রেসিডেন্ট রাইসি এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইনসহ অন্যদের মরদেহগুলো অন্য একটি অনুষ্ঠানের জন্য মধ্য ইরানের ধর্মীয় গুরুত্বপূর্ণ শহর কোমে নিয়ে যাওয়া হবে এবং তারপর আবারও সেগুলো রাজধানী তেহরানে আনা হবে।
পরদিন বুধবার তেহরানে বৃহত্তর পরিসরের অনুষ্ঠানে দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি জানাজার নামাজের নেতৃত্ব দেবেন এবং বিদায়ী সেই অনুষ্ঠানে বিদেশি বিশিষ্ট ব্যক্তিরাও উপস্থিত থাকবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
এরপর বৃহস্পতিবার প্রেসিডেন্ট রাইসির মরদেহ উত্তর-পূর্ব ইরানে অবস্থিত দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মাশহাদে নিয়ে যাওয়া হবে এবং দাফন করা হবে। যেখানে রাইসি জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং বেড়ে উঠেছিলেন।
এদিকে মঙ্গলবার থেকে পাঁচদিনের শোক পালন করছে ইরান। এছাড়াও বুধবার সারাদেশে সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া যেসব প্রদেশে নিহতদের জানাজা অনুষ্ঠিত হবে, সেসব প্রদেশের গভর্নরদের বিবেচনার ভিত্তিতে ছুটির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। অন্যদিকে এই সপ্তাহের শেষ না হওয়া পর্যন্ত দেশের সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্লাস ও পরীক্ষা বাতিল থাকবে এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয় নতুন তারিখ ঘোষণা করবে।
সূত্র: ইরনা, আল জাজিরা
(ঢাকাটাইমস/২১মে/এমআর)