ঢামেক চিকিৎসকের নবজাতক সন্তানের মরদেহ মিলল ঝোপঝাড়ে   

ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি
  প্রকাশিত : ১৮ জুন ২০২৪, ১৭:৫০| আপডেট : ১৮ জুন ২০২৪, ২৩:২৪
অ- অ+

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে বাড়ির পাশে ঝোপের মধ্যে পড়েছিল ঢামেক হাসপতালের সহকারী অধ্যাপকের সাতদিন বয়সি নবজাতক সন্তানের মরদেহ। রাতে বিছানা থেকে নিখোঁজ হয় নবজাতক শিশুটি। সকালে পাওয়া যায় নিথর দেহ। খবর পেয়ে লাশ উদ্ধার করে ভৈরব থানা পুলিশ। এ ঘটনায় পাঁচ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়েছে।

মঙ্গলবার সকাল ১০টায় শহরের কমলপুর নিউ টাউন ফুল মিয়া সিটি এলাকায় একটি ৯ তলা বিল্ডিংয়ের নিচ থেকে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

এ তথ্য নিশ্চিত করেন ভৈরব থানা অফিসার ইনচার্জ মো. শফিকুল ইসলাম।

জানা গেছে, নিহত নবজাতক শিশুটির নাম তাসনিদ এহসান। তার বাবা ডা. উসমান গণি। তিনি সেন্ট্রাল হাসপাতাল নামের স্থানীয় একটি হাসপাতালের মালিক ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক।

এ বিষয়ে স্বজনরা জানান, বাচ্চাকে দুধ খাওনো শেষ করে ঘুমিয়েছিল মা। বাবা ঘুমিয়ে ছিল আরেক রুমে। ঘরে শিলা ও মিম নামে দুইজন কাজের লোকও ছিল। এছাড়াও সুমাইয়া নামের একজন নারী ছিল। সে শিশুটির মায়ের বান্ধবী। হঠাৎ রাত তিনটার দিকে মা বিছানা থেকে উঠে বাথরুমে গেলে ১০ মিনিটের মধ্যে বাচ্চাটি নিখোঁজ হয়। পরে অনেক খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে তাৎক্ষণিক ভৈরব থানায় এসে অভিযোগ দেয় নিখোঁজ শিশুটির পরিবার।

এর পরে সকাল সাড়ে আটটার দিকে কাজের মহিলার মাধ্যমে জানতে পারে শিশুটি বাড়ির পাশে একটি ঝোঁপঝাড়ে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে। পরে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে নবজাতকের মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। এসময় দুই কাজের মেয়ে ও নবজাতকের মা ও তার বান্ধবীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানা নিয়ে যায় পুলিশ।

এ দিকে স্থানীয়রা জানান, ডা. উসমান গণির দ্বিতীয় স্ত্রী তৃষা। তাদের পরিবারের বোরাক নামের দেড় বছরের একট ছেলে সন্তান রয়েছে। সাতদিন আগে ডা. উসমান গণির মাধ্যমে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে নবজাতকের জন্ম হয়। তবে বেশ কিছুদিন যাবত তাদের পরিবারে কলহ চলছিল। প্রায় সময় তাদের বাসা থেকে চিৎকার চেঁচামেচির শব্দ শুনতে পাওয়া যেত। পারিবারিক কলহের জেরে এই ঘটনা ঘটতে পারে বলে স্থানীয়দের ধারণা।

তবে স্থানীয়রা আরো জানান, বিল্ডিয়ের কেউ প্রবেশ করেনি। ঘটনাটি ঘরের মধ্যেই কিছু একটা ঘটেছে। শিশুটিকে কেউ বিল্ডিং থেকে ফেলে দিয়েছে বলে স্থানীয়দের ধারণা।

নিহত শিশুর মা তৃষা আক্তার জানান, তাসনিদ এহসান আমার ৭দিনের ছেলে। মধ্যরাতে কে বা কারা আমার শিশু সন্তানটিকে নিয়ে গেছে। আমি বাথরুমে গেলে ১৫ মিনিটের ব্যবধানে আমি আমার সন্তানকে বিছানায় পাইনি। যারা আমার সন্তান হত্যা করেছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করেন তিনি ।

এ বিষয়ে বিল্ডিংয়ের কেয়ার টেকার আফজাল জানান, ভোর ৫টায় ডা. উসমান গণি আমাকে জানান তার সন্তান কে বা কারা চুরি করে নিয়ে গেছে। তার চিৎকারে পাশের ফ্লাটের প্রতিবেশিরাও জেগে যায়। পরে সবাই মিলে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও বাচ্চাটি পাওয়া যায়নি। কাজের মেয়ে জানালো বিল্ডিংয়ের অদূরে একটি ঝোপে বাচ্চাটি পড়ে আছে। পুলিশ এসে মরদেহ নিয়ে যায়।

এ বিষয়ে ভৈরব থানা অফিসার ইনচার্জ মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি দুঃখজনক। তবে নবজাতকটিকে হত্যার বিষয়টি রহস্যজনক। শিশুটির মাথায় ও শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। বিল্ডিং থেকে ফেলা হয়েছে কি না বা মেরে ফেলে রাখা হয়েছে কি না তা বলা যাচ্ছে না।

এ ঘটনায় নবজাতকের পিতা ডা. উসমান গণি, মা তৃষা, বান্ধবী সুমাইয়া ও কাজের মেয়ে মীম ও শিলাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ কিশোরগঞ্জ মর্গে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেন জানান তিনি।

(ঢাকাটাইমস/১৮জুন/এমআর)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলে ডাকাতি হওয়া বিপুল পরিমাণ সৌদি রিয়ালসহ ৭ জন গ্রেপ্তার
ডেঙ্গুতে আরও ১জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ৩৫৮
জুনে ১৩৫টি মোবাইল উদ্ধার করেছে ১২ এপিবিএন, মালিকদের কাছে হস্তান্তর
কুমিল্লায় দিঘিতে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা