যুক্তরাজ্যে সাবেক ৪ প্রধানমন্ত্রীদের হার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ০৫ জুলাই ২০২৪, ১৯:৫১| আপডেট : ০৫ জুলাই ২০২৪, ২২:১৬
অ- অ+

সদ্য সমাপ্ত যুক্তরাজ্যের সাধারণ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির পতনের আভাস আগেই পাওয়া গিয়েছিল দেশটির বিভিন্ন জরিপ সংস্থার পূর্বাভাসে। কিন্তু এতটা শোচনীয় পরাজয় হবে তা হয়তো কেউ ভাবতেও পারেনি। বিদীয় প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক তো কল্পনাও করেননি— তার নেতৃত্বে কনজারভেটিভ পার্টি এতটা নিচে নেমে যাবে।

ঋষি সুনাক ছাড়াও বৃহস্পতিবারের নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলের দলটির সাবেক চার প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু চারজনই শোচনীয় পরাজয় বরণ করতে বাধ্য হয়েছেন।

ক্ষমতায় থেকে টানা চতুর্থ দফার নির্বাচনে গত তিন মেয়াদে সরকার পরিচালনা করা দলটির সাবেক চার প্রধামন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন, থেরেসা মে, বরিস জনসন, লিজ ট্রাস নির্বাচনি লড়াই হেরে গেছেন। একমাত্র ঋষি সুনাক নির্বাচনি বৈতরণি পার হয়ে নতুন পার্লামেন্টে গেলেন। এখন দলীয় প্রধানের পদ থাকলে তিনি বিরোধী দলীয় নেতা হবেন।

২০১০ সালে কনজারভেটিভ পার্টি ক্ষমতায় এলে প্রধানমন্ত্রী হন ডেভিড ক্যামেরন। ২০১৫ সালে দ্বিতীয় দফায় বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে পুনরায় প্রধানমন্ত্রী হন ডেভিড। কিন্তু বেক্সিট ইস্যুতে মাঝপথেই পদত্যাগ করেন তিনি। এরপন প্রধানমন্ত্রী এবং দলীয় প্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন থেরেসা মে। থেরেসাও মেয়াদ পূর্ণ করতে পারেননি। তিনি আবার বেক্সিট ইস্যুতে প্রতিবাদ স্বরূপ পতদ্যগ করেন ২০১৯ সালের জুলাইয়ে। এবার দায়িত্ব পান বরিস জনসন।

স্বল্প মেয়াদের দায়িত্বে থেকে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে জয়ী হয়ে পুনরায় প্রধানমন্ত্রী হন বরিস। কিন্তু এবার তিনিও তার মেয়াদ পূর্ণ করতে পারেননি। বরিসের পদত্যাগের পর দেড় মাসের জন্য প্রধানমন্ত্রী হন লিজ ট্রাস। লিজ ট্রাসের পতদ্যাতের পর ২০২২ সালের মাঝামাঝি প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত রাজনীতিবিদ ঋষি সুনাক।

অর্থাৎ তিন মেয়াদের সরকারে কনজারভেটিভ পার্টির প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন ৫ জন।

এবারের নির্বাচনে ঋষি সুনাক ছাড়া সাবেক এই চার প্রধানমন্ত্রীসহ দলের হেভিওয়েট বা শক্তিশালী প্রার্থীদের মধ্যে বেশিরভাগই হেরে গেছেন।

এরমধ্যে রয়েছেন কনজারভেটিভ পার্টির জ্যেষ্ঠ নেতা প্রতিরক্ষামন্ত্রী গ্র্যান্ট শ্যাপস ও বিচারমন্ত্রী অ্যালেক্স চক, শিক্ষামন্ত্রী গিলিয়ান কিগান, জ্যেষ্ঠ নেতা পেনি মর্ডান্ট, অভিবাসনমন্ত্রী টম পার্সগ্লোভও।

স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) সকাল ৭টা থেকে ব্যালটের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। চলে রাত ১০টা পর্যন্ত। এবারের নির্বাচনে ছোট-বড় মিলিয়ে অন্তত ৩৯২টি রাজনৈতিক দল অংশ নেয়। ৩৫টি রাজনৈতিক দল মাত্র একজন করে প্রার্থী দেয়।

ভোট গ্রহণ শেষ হওয়ার পরপরই গণনা শুরু হয়। নিয়ম অনুযায়ী সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পাওয়া দলকে সরকার গঠন ও দলের নেতাকে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আহ্বান জানান যুক্তরাজ্যের রাজা তৃতীয় চার্লস।

আলোচিত এই নির্বাচনে বিভিন্ন দলের এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়েছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত অন্তত ৩৪ জন ব্রিটিশ নাগরিক। তাদের অনেকেই নির্বাচিত হয়েছেন।

যুক্তরাজ্যে সরকার গঠনের জন্য যেকোনো দলের জন্য প্রয়োজন ছিল ৩২৬টি আসন। বিপরীতে লেবার পার্টি ৪১২টি আসনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে সরকার গঠন করতে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন দলটির প্রধান কিয়ার স্টারমার। সদ্য বিদায়ী কনজারভেটিভ পার্টি মাত্র ১২১ আসনে জিততে পেরেছে। এছাড়া লিবারেল ডেমোক্রেট ৭০, স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টি ৮, এসএফ ৭ এবং অন্যান্য দল ২৬ আসন পেয়েছে।

৯ জুলাই নতুন পার্লামেন্ট সদস্যদের শপথ গ্রহণ ও স্পিকার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ১৭ জুলাই রাজা তৃতীয় চার্লসের উদ্বোধনী বক্তব্যের মাধ্যমে নতুন সরকারের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হবে।

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করলেন স্টারমার

পদত্যাগ করলেন ঋষি সুনাক, ছাড়লেন বাকিংহাম প্যালেস

যুক্তরাজ্যের নির্বাচন: টানা চতুর্থবারের মতো বিজয়ী হলেন টিউলিপ

কনজারভেটিভদের ‘ঐতিহাসিক পরাজয়’, ব্রিটেনের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন স্টারমার

(ঢাকাটাইমস/০৫জুলাই/এসআইএস)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা: জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ আজ রুদ্ধদ্বার আলোচনা
শান্ত আছে, মিরাজ নেই: যা বললেন লিপু
আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে!
কুমিল্লায় বাড়ি বানাতে গিয়ে ইতিহাসের সন্ধান, মিলল প্রাচীন স্থাপনার ধ্বংসাবশেষ
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা