বিটিভির শীর্ষ পদে বসতে চেয়েছিলেন আ.লীগ ঘনিষ্ঠ অরুণা বিশ্বাস!

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:০২| আপডেট : ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:১২
অ- অ+

হঠাৎই বিতর্কের কেন্দ্রে নব্বইয়ের দশকের মধ্যম সারির চিত্রনায়িকা অরুণা বিশ্বাস। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালীন ছাত্র-জনতার ওপর গরম পানি নিক্ষেপের পরামর্শ দিয়েছিলেন তিনি। সম্প্রতি ফাঁস হয় হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে বলা তার এমনই কথার স্ক্রিনশট। এবার জানা গেল বাংলাদেশ টেলিভিশনের (বিটিভি) শীর্ষ পদে বসতে চেয়েছিলেন এই অভিনেত্রী।

গত ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান। এর কয়েকদিন পর গোপনে দেশত্যাগ করে কানাডায় পালিয়ে যান আওয়ামী লীগ ঘনিষ্ঠ অরুণা বিশ্বাসও। সেখান থেকেই দেশের একটি গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রী জানিয়েছেন, তিনি বিটিভির অনুষ্ঠান পরিচালনা বিভাগের পরিচালক হতে চেয়েছিলেন।

যদিও গুঞ্জন ছিল, অরুণা বিশ্বাস সরকারি চ্যানেলটির ডিজি বা মহাপরিচালক হওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। তবে তিনি সাক্ষাৎকারে দাবি করেন, ‘আমি বিটিভির ডিজি হতে চাইনি। এটা তো হওয়া সম্ভব না। আমি ডিরেক্টর অব প্রোগ্রাম হওয়ার জন্য বলেছিলাম আগের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রীকে। উনি বলেছিলেন, এটা তো প্রধানমন্ত্রীর বিষয়। আমি আসলে কাজ করার জন্যই হতে চেয়েছিলাম।’

অরুণা বিশ্বাসের এই সাক্ষাৎকার প্রকাশের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকে বলাবলি করছেন, তবে কি সরকারি চ্যানেল বিটিভির শীর্ষ পদে বসার জন্যই এতদিন ধরে গণহত্যায় জড়িত রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের গুণগান গাইতেন তিনি। যার জন্য আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দমাতে তাদের ওপর গরম পানি নিক্ষেপের কথা বলতেও তার বিবেকে এতটুকু বাধেনি!

যদিও শুধু বিটিভির শীর্ষ পদ পাওয়ার আশায়ই ছিলেন না অরুণা বিশ্বাস। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর তিনি সংরক্ষিত নারী আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নও চেয়েছিলেন। কিন্তু পাননি। এছাড়া ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন বিটিভি ক্ষতিগ্রস্ত হলে সেখানে গিয়ে আওয়ামী লীগ ঘনিষ্ঠ অন্য শিল্পীদের সঙ্গে গলা ফাটিয়ে প্রতিবাদও করতে দেখা যায় অরুণাকে।

এদিকে গত দুই মেয়াদ ধরে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডের সদস্য হিসেবে নাম রয়েছে নব্বইয়ের দশকের এই অভিনেত্রীর। এখানেও ছড়িয়েছেন বিতর্ক। অভিযোগ আছে, সেন্সরে যে সিনেমাগুলো জমা পড়তো, সেগুলোতে আওয়ামী লীগ সরকারের ইমেজ নষ্ট নয়– এমন কোনো দৃশ্য বা সংলাপ পেলেই সিনেমা আটকে দিতেন অরুণা। প্রয়োগ করতেন দলের ক্ষমতা।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি ‘আলো আসবেই’ নামে একটি হোয়াসঅ্যাপ গ্রুপের কথোপকথনের ৫০টিরও বেশি স্ক্রিনশট ফাঁস হয়। ওই গ্রুপে অরুণা ছাড়াও আছেন চিত্রনায়ক ও সাবেক সংসদ সদস্য ফেরদৌস, রিয়াজ, সাজু খাদেম, জায়েদ খান, আজিজুল হাকিম, রোকেয়া প্রাচী, তানভীন সুইটি, শামীমা তুষ্টি, জ্যোতিকা জ্যোতি, উর্মিলা শ্রাবন্তী কর, সুবর্ণা ‍মুস্তাফাসহ শোবিজের অনেকে।

এই অভিনয়শিল্পীরা সবাই ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। শুধু তাই নয়, হোয়াটসঅ্যাপের এই গ্রুপে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এবং সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাতও যুক্ত আছেন। গ্রুপটিতে আন্দোলন দমাতে ছাত্রদের ওপর গরম পানি নিক্ষেপের পরামর্শ দিয়ে নায়িকা থেকে এখন খলনায়িকা অরুণা বিশ্বাস।

যদিও কানাডা থেকে দেশের গণমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এই অভিযোগ নিয়েও সাফাই গেয়েছেন অভিনেত্রী।

অরুণা বিশ্বাসের দাবি, ‘আমরা গ্রুপে কোনো বাজে কথা বলিনি। সব সময় বলেছি ছাত্রদের সঙ্গে বসেন, কথা বলেন। পিজি হাসপাতালে আগুন দেওয়া হয়েছিল। ওখানে কেউ ঢুকতে পারছিল না। আমি বলেছি গরম জল দিলেই হয়। গরম জল তো কামান থেকে দেয়। জলকামান লিখি নাই আর কী। ওখানেই বোধহয় মিসটেক হয়েছে। কামানের গরম জলের কথা বলেছি।’

(ঢাকাটাইমস/০৫সেপ্টেম্বর/এজে)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের বার্ষিকীতে বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে সম্মান জানাল বিজিবি
মতিঝিলে ২৮ হাজার ইয়াবাসহ মাদক কারবারি গ্রেপ্তার
জামালপুরে ধর্ষণ মামলায় যুবকের যাবজ্জীবন 
চলচ্চিত্র অনুদান কমিটি থেকে পদত্যাগ করলেন অভিনেত্রী জাকিয়া বারী মম
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা