ঝোপঝাড়ে পড়ে আছে ৭০ লাখ টাকার পাইলিং, মডেল মসজিদ হয়নি ৫ বছরেও

মাদারীপুর প্রতিনিধি, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:০৩
অ- অ+

মাদারীপুর সদর উপজেলা পরিষদের পাশেই মডেল মসজিদ নির্মাণের জন্য পাইলিং করা হয়েছে। এ কাজে ব্যবহৃত রডে ইতোমধ্যে মরীচিকা ধরে কাশবনে ছেয়ে গেছে। দেখে বোঝার উপায় নেই, এখানে পাইলিংয়ের কাজ হয়েছে। ঝোপঝাড় আর আবর্জনায় ছেয়ে আছে পুরো জায়গাটি।

মাদারীপুরে মডেল মসজিদ ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ কাজ অগ্রাধিকার প্রকল্পের একটি। কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল এক বছরের মধ্যেই। অথচ এই মডেল মসজিদ ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের কাজ শেষ হয়নি ৫ বছরেও। শুধু পাইলিং করেই ৭০ লাখ টাকার বিল নিয়ে লাপাত্তা ঠিকাদার। নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ না হওয়ায় জনপ্রতিনিধিদের দুষছেন প্রকল্পের সঙ্গে জড়িতরা।

অনুসন্ধানে প্রাপ্ত তথ্যমতে, মাদারীপুর সদর উপজেলায় তিন তলা বিশিষ্ট মসজিদ ভবন এবং ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পটির কাজ শুরু হয় ২০১৯ সালের মে মাসে। ইউনূস অ্যান্ড ব্রাদার্স নামে বরিশালের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্রকল্পের ঠিকাদারি পায়। চুক্তিমূল্য অনুযায়ী ১৪ কোটি ৭১ লাখ টাকা ব্যয়ে এই প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২০ সালের মাঝামাঝিতে। তবে গত ৫ বছরে শুধু পাইলিংয়ের কাজ করা হয়েছে।

অভিযোগ রয়েছে, মাদারীপুর গণপূর্ত বিভাগের সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী মো. কামরুল ইসলাম খান ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিকের যোগসাজশে নামমাত্র কাজ করে কোটি টাকার বিল তুলে নেওয়া হয়েছে। এরপর থেকেই বন্ধ রয়েছে কাজ। এতে ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা।

স্থানীয় বাসিন্দা শাসমুল আলম নান্নু বলেন, ‘আমাদের দীর্ঘ দিনের দাবি ছিল মডেল মসজিদটি উপজেলার ভেতরে জনবহুল স্থানে দেওয়া হোক। কিন্তু সেটি না করে উপজেলার দক্ষিণকোনায় নির্জন একটি জায়গায় নির্মাণ কাজ শুরু করে। পরে আমরা বাঁধা দিলে কাজটি বন্ধ হয়ে যায়। যদিও এরইমধ্যে নাকি ৭০ লাখ টাকার উপরে বিল নিয়ে গেছে ঠিকাদার। এতে গণপূর্ত বিভাগের গাফলতি আছে। তাই বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করছি।’

চলতি বছর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ করবে না বলে চিঠি দিয়েছে গণপূর্ত বিভাগকে। এদিকে পাইলিং বিল বাবদ তুলে নিয়েছে ৭০ লাখ টাকা।

তবে প্রকল্প পরিচালকের সঙ্গে জড়িত মাদারীপুরের ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তার আব্দুর রাজ্জাক রনি বলেন, ‘আমাদের দাবি ছিল মডেল মসজিদটি গণপূর্ত বিভাগের একটি জনবহুল জায়গায় নির্মাণ করার। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে একটি নির্জন জায়গায় কাজ শুরু হয়। পরবর্তীতে কাজটি বন্ধও করা হয়। এখন স্থানীয়দের দাবির কারণে গণপূর্ত বিভাগের ভেতরে যেখানে লোকজনের সমাগম বেশি, সেখানে নির্মাণের কথা চলছে। এক্ষেত্রে প্রশাসনের এগিয়ে আসতে হবে।’

তবে প্রকল্পের নির্মানের কাজে জড়িত পণপূর্ত বিভাগের কর্মকর্তা শাহরিয়ার হোসেন ক্যামেরায় কথা বলতে রাজি না হলেও মোবাইলে জানান, ‘জায়গা নির্ধারণ নিয়ে জটিলতায় কাজ বন্ধ রয়েছে। তবে ঠিকাদারকে প্রায় ৭০ লাখ টাকার বিল দেওয়া হয়েছে। তাদের আরও প্রায় ৩০ লাখ টাকার দাবি রয়েছে। এখন জেলা প্রশাসন থেকে জায়গা নির্ধারণ করা হলে দ্রুতই কাজ শুরু হবে।’

সদ্য বদলিকৃত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মারুফুর রশিদ খান বলেন, ‘মডেল মসজিদের নির্মাণ কাজ অল্প সময়ের মধ্যেই শুরু হবে। স্থান নির্ধারণ নিয়ে কিছুটা ঝটিলতা হওয়ায় কাজটি বন্ধ ছিল। তবে আমরা কমিটির লোকজন বসে বিষয়টি সমাধানের পথে রয়েছে।’

(ঢাকাটাইমস/১৩সেপ্টেম্বর/এজে)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
আবারও এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানে যান্ত্রিক ত্রুটি, কলকাতা বিমানবন্দরে আটকে গেল ফ্লাইট
যুদ্ধ থামাতে খামেনিকে সরাতে বললেন নেতানিয়াহু
অবিলম্বে তেহরান খালি করতে হবে, ট্রাম্পের হুঁশিয়ারি
তারেক রহমান ও ড. ইউনূসের বৈঠক নিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সন্তোষ
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা