সাবেক রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন তিন দিনের রিমান্ডে
শিক্ষার্থী ইমরান হাসানকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানায় করা মামলায় সাবেক রেলপথমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজনের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
মঙ্গলবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শাহীন রেজা শুনানি শেষে এ রিমান্ড আদেশ দেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা যাত্রাবাড়ী থানার উপপরিদর্শক শাহ আলম মিয়া পাঁচ দিনের রিমান্ডের জন্য আবেদন করেছিলেন।
রাষ্ট্রপক্ষ রিমান্ড মঞ্জুরের প্রার্থনা করেন। বিএনপিপন্থি আইনজীবী ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ডের পক্ষে শুনানি করেন।
নূরুল ইসলাম সুজনের পক্ষে আইনজীবী ফজলুল হক বাবু রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করে বলেন, “তিনি আমার আপন মামা। একজন আইনজীবীও। রাজনৈতিক পরিবারের মানুষ। ২০১৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত রেলমন্ত্রী ছিলেন। তার বিরুদ্ধে দুদকের কোনো অভিযোগ নেই। রেলের উন্নতি করেছেন। তিনি ৬নং আসামি। ইতিমধ্যে তিনজন আগাম জামিন পেয়েছেন। তিনি অসুস্থ। তাকে হাসপাতাল থেকে জোর করে রিলিজ করিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।” এরপর আদালতে কথা বলেন নূরুল ইসলাম সুজন। তিনি বলেন, “আমার এলাকা পঞ্চগড়ে আমার বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই। সারাজীবনে এ মামলা ছাড়া আর কোনো মামলা নেই। আমার দল ক্ষমতায় থাকাকালে বিরোধীদের বিরুদ্ধে একটা মামলা দিইনি। গত ৩ আগস্ট পর্যন্ত আমি এলাকায় থেকে বাচ্চাদের সাইকেল বিতরণ করি। গত ৪ আগস্ট সন্ধ্যায় সৈয়দপুর এয়ারপোর্ট দিয়ে ঢাকায় আসি।”
তিনি বলেন, “এ মামলায় নাম উল্লেখ ছাড়া আসামিদের কার কী ভূমিকা কিছু উল্লেখ করেনি। দেখবেন বাদী কাউকে চেনে না। বলতেও পারবে না আসামি কারা। আমাদের মতো আইনজীবীরাই আসামিদের নাম লিখে দিয়েছে। হাসপাতালে ভর্তি ছিলাম। অনেকটা জোর করে রিলিজ দিয়ে নিয়ে আসছে।”
এসময় আদালতের কাছে আর্জি জানিয়ে বলেন, “চিকিৎসার সুযোগ করে দেবেন। বিচার যা হওয়ার হবে।”
পরে আদালত তার তিন দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গত ৫ আগস্ট সকালে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও পুলিশ বাহিনী নির্বিচারে গুলি করে। এতে ইমরান হাসান গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। এ ঘটনায় গত ১ সেপ্টেম্বর নিহতের মা কোহিনুর আক্তার বাদী হয়ে শেখ হাসিনাসহ ২৯৮ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন। এর আগে গত সোমবার রাতে রাজধানীর শ্যামলীর বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালের ৮৩৩ নম্বর রুম থেকে সুজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
নূরুল ইসলাম সুজন ২০০১ সালে অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে পঞ্চগড়-২ আসন থেকে অংশগ্রহণ করে পরাজিত হয়েছিলেন। ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। এরপর টানা তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর ২০১৯ সালের ৭ জানুয়ারি রেলপথমন্ত্রীর দায়িত্ব পান।
(ঢাকাটাইমস/১৭সেপ্টেম্বর/আরজেড/এফএ)