বদলগাছীতে উপকারভোগীরা সংশয়ে
খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল নিয়ে টানাপোড়েন

নওগাঁর বদলগাছীতে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ১৫ টাকা কেজি চাল নিয়ে চালবাজি চলছে। ডিলারেরা ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা জমা করে ব্যাংক চালান জমা করতে পারছে না উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে। ৮ দিন হয়ে গেছে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিদ্ধান্তহীতায় ভুগছেন। ফলে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির প্রায় ৭৭৫৫ জন উপকারভোগীর চাল পাওয়া অনিশ্চতার মধ্যে পড়েছে।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিস সুত্রে জানা যায়, উপজেলার আটটি ইউনিয়নে দুটি করে মোট ১৬টি খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ১৬ জন ডিলার রয়েছেন। গত ৩১ আগস্ট উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক স্বাক্ষরিত একটি চিঠির (যা স্মারক নম্বর-১৩.০১.৬৪০৬.০৩৬.৫৭.০০১.২৩.২৩.৩০৯) মাধ্যমে প্রতিটি ডিলারকে চিঠি ইসু করা হয়। চিটিতে বলা হয়, ‘চলতি সেপ্টেম্বর মাসের চাল ১০ তারিখের মধ্যে ব্যাংকে টাকা জমা করে যথারিতি উত্তোলন করার জন্য বলা হলো।’ সেই মতো ডিলারেরা ৯ সেপ্টেম্বর ব্যাংকে টাকা জমা করার জন্য খাদ্য নিয়ন্ত্ররে কার্যালয়ে গোপন কোড নম্বর চাইলে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সাবরিন মোস্তারী জানান, সব ডিলারের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ এসেছে। বিষয়টি নিয়ে উপজেলা খাদ্যবান্ধব কমিটির মিটিং হবে, মিটিংয়ের সিদ্ধান্ত অনুয়ায়ী ব্যাংকে টাকা জমা করবেন।
৯ সেপ্টেম্বর বিকেল চারটার দিকে উপজেলা খাদ্যবান্ধব কমিটির সভাপতি মাহবুব হাসানের নেতৃত্বে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে মিটিং বসে। মিটিং শেষে ডিলারদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্ত করার জন্য উপজেলা সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) প্রধান করে তিন সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের পূর্ব পর্যন্ত ডিলারদের ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা জমা দিয়ে চালান কপি খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে জমা করতে বলা হয়।
পরদিন ১০ সেপ্টেম্বর ব্যাংকে টাকা জমা করে চালান কপি খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে জমা দিতে গেলে তারা চালান কপি জমা নিতে অস্বীকৃতি জানান। এরপর আট দিন পেরিয়ে গেছে, এখনো বিষয়টির কোনো সুরহা হয়নি। এতে সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ১৫ টাকা কেজি ধরে চাল পাওয়া নিয়ে উপজেলার ৭৭৫৫ জন উপকারভোগীর মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে।
উপজেলা তেজাপাড়া গ্রামের উপকারভোগী নন্দলাল বলেন, ‘প্রতি মাসের ১০-১২ তারিখের মধ্যে আমরা ১৫ টাকা কেজির চাল পেয়ে যেতাম। এখন মাসের ১৭ দিন চলে গেলেও চাল পাচ্ছি না। যা আমার পরিবারের জন্য কষ্টকর হয়ে পড়েছে।’
খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ডিলার এরশাদ, রানা, মেহেদি, জামিলসহ কয়েকজন জানান, উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কিছু রাজনৈতিক ব্যক্তির কথা শুনে ডিলারদের ব্যাংক চালান জমা নিচ্ছে না এবং চাল উত্তোলন করতে না দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সাবরিন মোস্তারীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এর বেশি কিছু আমি বলতে পারব না।’
উপজেলা খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহবুব হাসানের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, বিষয়টি নিয়ে তারা বিব্রতকর অবস্থায় আছেন। আগামী দুই এক দিনের মধ্যে বিষয়টি সমাধান হয়ে যাবে।
খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল উত্তোলনের সময় আগামী ২২ সেপ্টম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে জানিয়ে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ফরহাদ খন্দকার বলেন, ৩০ সেপ্টম্বরের মধ্যে উপকারভোগীদের কাছে চাল বিতরণ করার সুযোগ রয়েছে। ডিলারেরা এই সময়ের মধ্যে চাল উত্তোলন ও বিতরণ করতে পারবেন।
(ঢাকাটাইমস/১৮সেপ্টেম্বর/মোআ

মন্তব্য করুন