দুই মাস ২৭ দিনেই চালু হচ্ছে মেট্রোরেলের মিরপুর-১০ স্টেশন

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ১৮:৪৮| আপডেট : ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ১৮:৫৭
অ- অ+
মেট্রোরেল মিরপুর-১০ নম্বর স্টেশন

অবশেষে দুই মাস ২৭ দিনের মাথায় চালু হতে যাচ্ছে মেট্রোরেলের মিরপুর-১০ নম্বর স্টেশন। মঙ্গলবার থেকে এই স্টেশনে নিয়মিত যাত্রী ওঠানামা করবে মেট্রোরেল।

সোমবার রাজধানীর উত্তরায় মেট্রোরেলের ডিপোতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবদুর রউফ।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে মেট্রোরেলের ক্ষতিগ্রস্ত দুটি স্টেশন (কাজীপাড়া ও মিরপুর-১০) আগামী এক বছরেও চালু করা সম্ভব হবে না বলে জানিয়েছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং পতিত শেখ হাসিনা সরকারের সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

একইসঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত স্টেশনের মেরামত করতে ৩৫০ কোটি টাকা লাগবে বলেও জানিয়েছিল আওয়ামী সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। কিন্তু আওয়ামী লীগের পতনে নতুন সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর সময় এবং সংস্কার ব্যয়; দুটোই কমে আসে বিস্ময়করভাবে।

কাজীপাড়া স্টেশন চালু হয়েছে আগেই। বেশি ক্ষতিগ্রস্ত মিরপুর-১০ স্টেশনটি বন্ধ হওয়ার ২ মাস ২৭ দিন পর চালু হচ্ছে মঙ্গলবার। ইতোমধ্যে স্টেশনটির মেরামতের কাজ শেষ হয়েছে। পরীক্ষামূলক ট্রায়ালও হয়েছে।

ডিএমটিসিএল জানিয়েছে, মঙ্গলবার সকাল থেকেই মিরপুর–১০ স্টেশনে স্বাভাবিকভাবে যাত্রী ওঠা–নামা করতে পারবে মেট্রোরেল। এদিন সকালে সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবীর খান মিরপুর–১০ স্টেশন পরিদর্শন করবেন বলেও জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় ক্ষতিগ্রস্ত মেট্রোরেলের কাজীপাড়া ও মিরপুর–১০ স্টেশন দুটি স্থানীয় বাজার থেকে সংগৃহীত যন্ত্রপাতি দিয়ে চালু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এতে স্টেশন দুটির স্বাভাবিক কার্যক্রম চালু করা সম্ভব হচ্ছে। পরবর্তী সময়ে প্রয়োজনীয় যন্ত্র ও পণ্য সংগ্রহ করে বাকি কম প্রয়োজনীয় কাজ সম্পন্ন করা হবে।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মিরপুর-১০ নম্বর স্টেশনে যন্ত্র থেকে টিকিট স্বয়ংক্রিয়ভাবে বের হচ্ছে কি না, ভাড়া পরিশোধ করে প্রবেশ ও বের হওয়ার গেটগুলো খুলছে কি না, স্টেশনে এসে জায়গামতো ট্রেনের দরজা খুলছে কি না, এসব বিষয় পরীক্ষা করা হয় গত বৃহস্পতিবার। এছাড়া ওই দিন স্টেশনে থাকা ইলেকট্রনিক পর্দায় ট্রেন আসার তথ্য সঠিকভাবে দেখা যায় কি না এবং ট্রেনের তথ্যের অডিও ঘোষণা সঠিকভাবে প্রচারিত হচ্ছে কি না, তা-ও পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষা সফল হওয়ায় স্টেশনটি চালু করার সিদ্ধান্ত হয়।

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলন চলার মধ্যে গত ১৮ জুলাই মিরপুর–১০ নম্বর গোলচত্বরে পুলিশ বক্সে অগ্নিসংযোগ করা হয়। ওই দিন বিকাল পাঁচটায় মেট্রোরেলের চলাচল বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। এর পরদিন মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়া স্টেশনে ভাঙচুর করা হয়। ২০ জুলাই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ডিএমটিসিএলের তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন ছিদ্দিক বলেছিলেন, ‘‌ক্ষতিগ্রস্ত স্টেশন দুটি মেরামত করে পুনরায় চালু করতে এক বছরের মতো সময় লাগতে পারে।’

২৭ জুলাই তখনকার সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের অবশ্য সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘মেট্রোরেলের কাজীপাড়া ও মিরপুর–১০ স্টেশন ধ্বংসপ্রাপ্ত। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, এটা এক বছরেও যন্ত্রপাতি এনে সচল করা সম্ভব হবে না।’

সরকার পরিবর্তনের পর দুই মাসের মাথায় কাজীপাড়া স্টেশন চালু করা হয়। তিন মাসের কম সময়ের মধ্যে মিরপুর-১০ নম্বর স্টেশনও চালু হতে যাচ্ছে।

ডিএমটিসিএল সূত্র জানিয়েছে, তৎকালীন সরকারের সময় মেট্রোরেলের দুটি স্টেশনের মেরামতের জন্য সাড়ে ৩০০ কোটি টাকা ব্যয়ের প্রাক্কলন করা হয়েছিল। তবে কাজীপাড়া স্টেশন মেরামতে ২০ লাখ ২৬ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। আর মিরপুর-১০ নম্বর স্টেশন মেরামতের খরচ এখনো প্রকাশ না হলেও তা খুবই অল্প বলে জানা গেছে।

ডিএমটিসিএল সূত্র জানায়, মিরপুর-১০ নম্বর স্টেশনে স্বয়ংক্রিয় টিকিট বিক্রির যন্ত্র, কম্পিউটার, ভাড়া পরিশোধ করে প্রবেশ ও বের হওয়ার স্বয়ংক্রিয় গেট, স্টেশনের ইলেকট্রনিক পর্দা ও কিছু কাচ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। কিছু সরঞ্জাম ও উপকরণ স্থানীয় বাজার থেকে কেনা হয়েছে। তবে টিকিট কাটার যন্ত্র এবং ভাড়া পরিশোধ করে প্রবেশ ও বের হওয়ার গেটগুলো স্থানীয় বাজারে নেই। আমদানি করা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, টিকিট কাটার যন্ত্র ও গেট উত্তরা সেন্টার, উত্তরা দক্ষিণ ও বিজয় সরণি স্টেশন থেকে নিয়ে বসানো হয়েছে। এসব স্টেশনে যাত্রীর চাপ তুলনামূলক কম। সেখানকার একাধিক মেশিন ও গেটের মধ্য থেকে কিছু স্থানান্তর করা হয়েছে। এছাড়া উত্তরায় মেট্রোরেলের ডিপোর ভেতর প্রদর্শনকেন্দ্রে আটটি গেট ছিল, সেগুলো এনে লাগানো হয়েছে। পরবর্তী সময়ে আমদানি করে ওই সব জায়গায় গেট ও টিকিট কাটার যন্ত্রগুলো বসানো হবে। তবে আমদানি করলেও আগের সরকার যে ব্যয় প্রাক্কলন করেছিল, তত টাকা লাগবে না বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।

(ঢাকাটাইমস/১৪অক্টোবর/এসআইএস)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
২০৩০ সালের মধ্যে ১৫০ পৌরসভায় শেষ হবে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কাজ: অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী
উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের মাথায় বোতল মারল কে?
কিছু ঘটলেই যমুনায় যাওয়ার প্রবণতা সহ্য করা হবে না: উপদেষ্টা মাহফুজ 
সিলেট থেকে ৪১৮ যাত্রী নিয়ে মদিনায় গেল প্রথম হজ ফ্লাইট
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা