জেড আই খান পান্নার বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা মামলা ভুল বার্তা কী না

বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ২১ অক্টোবর ২০২৪, ১৪:০৮
অ- অ+

সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী জেড আই খান পান্না বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ মানবাধিকার ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার পরিপন্থী নানা আইনের বিরুদ্ধে জোরালো অবস্থান নিয়েছিলেন বিশিষ্ট এই আইনজীবী। এমনকী কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি চালানো বন্ধ করার আদেশ চেয়ে গত ২৯ জুলাই আইনজীবীদের যে দল হাইকোর্টে আবেদন করে জেড আই খান পান্না তাদের অন্যতম। আইনজীবী পান্না শিক্ষার্থীদের ওপর আক্রমণের জন্য ২৯ জুলাই নাগরিক উদ্যোগে গঠিত জাতীয় গণতদন্ত কমিশনের অন্যতম সদস্যও।

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের অসংখ্য অনিয়ম, দুর্নীতি, বৈষম্যের প্রতিবাদ করা আইনজীবী জেড আই খান পান্নার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা কেন? বিষয়টি একদিকে বিতর্ক আরেকদিকে নানা কৌতূহলের জন্ম দিয়েছে। একজন প্রতিবাদী, সরকারের ভুল নীতির বিরুদ্ধে উচ্চকণ্ঠ আইনজীবীর বিরুদ্ধে আচমকা একটি হত্যা মামলা কি অনিচ্ছাকৃত ভুল না-কি এর পেছনে কোনো উদ্দেশ্য আছে এনিয়ে বিভিন্ন মহলে চলছে নানামুখী আলোচনা।

খোদ আইনজীবী জেড আই খান পান্না মনে করেন তার বিরুদ্ধে হত্যা মামলার পেছনে কোনো না কোনো প্রভাবশালীর ইন্ধন আছে। তিনি দাবি করেন, ‘আমি কোটা আন্দোলকারীদের পক্ষে সক্রিয় ছিলাম।’

প্রবীণ আইনজীবী জেড আই খান পান্নার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা কি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা? এটা কি ভয় পাইয়ে দিয়ে মুক্ত চিন্তা বা সরকার সমালোচকদের বিরুদ্ধে কোনো বার্তা? এমন প্রশ্ন উঠেছে।

সাম্প্রতিককালে জেড আই খান পান্না সরকারের কিছু বিষয় নিয়ে সমালোচনামুখর হয়ে উঠেছেন। গণমাধ্যমে তিনি বলেছেন, ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে যে সংবিধান রচিত হয়েছে তার ঘোষণাপত্র পাল্টানো যাবে না। যদি করে তাহলে যুদ্ধ না, মহাযুদ্ধ হবে।

প্রবীণ আইনজীবী পান্নার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হওয়ার ক্ষেত্রে এই সমালোচনামুখর বক্তব্য কোনো কারণ কি-না সেই প্রশ্নও কেউ কেউ তুলেছেন।

মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র জেড আই খান পান্নাকে হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি করার নিন্দা জানিয়েছে। এই ঘটনাকে 'অত্যন্ত অনাকাঙ্ক্ষিত, অপ্রত্যাশিত ও নিন্দনীয়' বলে আখ্যা দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও তীব্র নিন্দা জানিয়েছে হিউম্যান রাইটস ফোরাম বাংলাদেশ (এইচআরএফবি), বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট), বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক আইনজীবী সমিতি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টিসহ বিভিন্ন সংগঠন।

গত ১৭ অক্টোবর রাজধানীর খিলগাঁও থানায় মোঃ বাকের তার ছেলে আহাদুলকে হত্যা চেষ্টা মামলা করেন। যেখানে আইনজীবী জেড আই খান পান্না ৭৪ নম্বর আসামি।

খিলগাঁও থানার ওসি দাউদ হোসেনও ঢাকা টাইমস-এর সঙ্গে আলাপকালে স্বীকার করেছেন, প্রাথমিক কোনো তদন্ত ছাড়াই তারা মামলাটি গ্রহণ করেছেন।

প্রশ্ন হলো, ইচ্ছেমতো এমন ঘটনার পেছনে আসলে কে বা কারা? এই ঘটনার পেছনে বর্তমান সরকারের ভাবমূর্তি নষ্টের চেষ্টাও আছে কি-না?

গত ১৪ অক্টোবর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছিল, মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা দায়েরের মাধ্যমে যারা অপতৎপরতা চালাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু এর প্রয়োগ আমরা দেখতে পেয়েছি কি? প্রকৃত অপরাধীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা হোক। নিরপরাধ ব্যক্তি যেন হয়রানির শিকার না হন।

(ঢাকাটাইমস/২১অক্টোবর/এআরডি)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরানোর বিষয়ে আইনি প্রক্রিয়ায় কাজ করছে ইন্টারপোল: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
পাক সেনাপ্রধানকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ফোন, উত্তেজনা কমানোর উপায় খুঁজতে দুপক্ষকে আহ্বান
আ.লীগ নিষিদ্ধসহ তিন দফা দাবি: শাহবাগে দ্বিতীয় দিনের মতো চলছে বিক্ষোভ
পাকিস্তানের গোলাবর্ষণে ভারতীয় কর্মকর্তার মৃত্যু
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা