পদত্যাগপত্রের হার্ডকপি-সফটকপি!

বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ২২ অক্টোবর ২০২৪, ১০:৩৫| আপডেট : ২৮ অক্টোবর ২০২৪, ১০:৪৮
অ- অ+

বিষয়টি কি খুব প্রাসঙ্গিক ছিল? কার্যত মৃত ও অপ্রাসঙ্গিক বিষয়কে আচমকা কেন প্রাসঙ্গিক করে তোলা হলো? কেন শেখ হাসিনার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পদত্যাগের হার্ডকপি রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের কাছে আছে কি নাই, হঠাৎ অনেক বড় ইস্যু?

তবে কি ইচ্ছাকৃতভাবে বিতর্ক সৃষ্টি করা হচ্ছে? দেশের মানুষের জন্য প্রতিদিনের যে সমস্যা দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি সেটা কি তবে সাময়িকভাবে হলেও চাপা পড়বে? পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনতে না পারা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়েও কম আলোচনা হবে মিডিয়াতে, টকশোতে? অনেক প্রশ্ন, কে উত্তর দেবে?

খোদ রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পুই তো বিতর্কের অবস্থান ঘটিয়েছিলেন ৫ আগস্ট। সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনী প্রধানকে পেছনে দাঁড় করিয়ে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে রাষ্ট্রপতি বলেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। সাংবিধানিকভাবে যিনি রাষ্ট্রের প্রধান তিনি যখন ভাষণে সারা জাতিকে জানিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন, তখন আড়াই মাস পরে তার হার্ডকপি খোঁজা কি শুধুই কাকতালীয়!

খ্যাতিমান সাংবাদিক, সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী যেহেতু বিষয়টি সামনে এনেছেন, সেহেতু একে হালকা করে দেখাও ঠিক হবে না। যদিও রাষ্ট্রপতির কার্যালয় স্পষ্ট করেই বলেছে শেখ হাসিনার পদত্যাগ একটি মীমাংসিত ইস্যু। এটি নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করা ঠিক হবে না। এমনকি মতিউর রহমান চৌধুরীও গণমাধ্যমের সঙ্গে আলোচনায় বলেছেন রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ নিয়ে অহেতুক বিতর্ক তৈরি করা হচ্ছে। তিনি একটি বই লেখার কাজ করছেন এবং তার অংশ হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগপত্রের হার্ডকপি খুঁজছিলেন।

রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন চুপ্পু বলেছেন, এটি তার কাছে নেই।

প্রশ্ন উঠেছে, যেখানে সংসদ ভেঙে দিয়ে রাষ্ট্রপতি নতুন প্রধান উপদেষ্টা ও উপদেষ্টা পরিষদকে শপথ বাক্য পড়িয়েছেন সেখানে পতিত প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের চিঠি খুঁজতে যাওয়া কী কারণে?

আর শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্রের হার্ডকপি যেন এখন সবচেয়ে বিতর্কিত ইস্যু। খোদ আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল এ নিয়ে চাছাছোলা মন্তব্য করেছেন। বলেছেন, রাষ্ট্রপতি মিথ্যাচার করেছেন। যা শপথ লঙ্ঘনের শামিল। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ অবিলম্বে রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন চুপ্পুর পদত্যাগ দাবি করেছেন। এভাবে বিভিন্ন মহলে রাষ্ট্রপতির পদে থাকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ক্ষুব্ধ খোদ অন্তবর্তী সরকারও।

ঢাকা টাইমস সরকারের একাধিক মহলে খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছে, বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে রাষ্ট্রপতির বক্তব্য নিয়ে আলোচনা হবে।

তবে কি চারিদিকে যে গুঞ্জন রাষ্ট্রপতির পদ থেকে সাহাবুদ্দিন চুপ্পুকে পদত্যাগে বাধ্য করানো হবে? ড. ইউনূস রাষ্ট্রপতির দায়িত্বও নেবেন? চারিদিকে এমন নানা আলোচনা আছে।

ঢাকা টাইমস কথা বলেছিল আইনজ্ঞ ব্যারিস্টার সারওয়ারের সঙ্গে। তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতি যদি সত্যিই মিথ্যাচার করে থাকেন তাহলে তিনি তার পদে থাকার যোগ্যতা হারিয়েছেন। ব্যারিস্টার সারওয়ার মনে করেন, পতিত প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগপত্রের হার্ডকপি-সফটকপি ইস্যু তোলা অবান্তর। তার মতে, রাষ্ট্রপতি পদ থেকে সাহাবুদ্দিন চুপ্পুর সরে যাওয়া উচিত।

যে বিতর্ক আচমকা শুরু হয়েছে তা কি সহসাই থামবে? পুরো মেয়াদ থাকতে পারবেন সাহাবুদ্দিন চুপ্পু? নাকি প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসকে সহসাই রাষ্ট্রপতি পদেও দেখা যাবে? না-কি অন্য কাউকে দেখা যাবে রাষ্ট্রপতির পদে? দেখা যাক কী হয়!

(ঢাকাটাইমস/২২অক্টোবর/এআরডি)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
মাদকবিরোধী অভিযানের নামে লুটপাট, সাবেক ডিবিপ্রধান হারুনের ভাইসহ তিন কর্মকর্তা বরখাস্ত
গোলাম দস্তগীর পরিবারের ৩০ কোটি টাকার সম্পদ জব্দের আদেশ
সিটি কলেজে অনিয়ম তদন্তে ‘বাধা দিতেই’ কিচ্ছা-কাহিনী নির্ভর সংবাদ সম্মেলন, নেওয়া হবে ব্যবস্থা
ফিরে দেখা ৯ জুলাই: দেশজুড়ে সকাল-সন্ধ্যা ‘বাংলা ব্লকেড’ ঘোষণা
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা