আঠারোর নির্বাচনের আগে গোপন বৈঠকের অভিযোগ ছিল, হেলালুদ্দীন ছিলেন বিতর্কিত সচিব

বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ২৪ অক্টোবর ২০২৪, ১৩:৪১| আপডেট : ২৪ অক্টোবর ২০২৪, ১৩:৫০
অ- অ+

ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের সময়ে যে কজন সচিবের নাম বরাবরই বিতর্কে জড়িয়েছে তাদের মধ্যে প্রথম দিকেই আছেন হেলালুদ্দীন আহমদ। বিশেষ করে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সচিব থাকার সময় আলোচনা-সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন সাবেক এই আমলা।

২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় নির্বাচন ঘিরে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে গোপন বৈঠক করাসহ বেশ কয়েকটি গুরুতর অভিযোগে বিদ্ধ ছিলেন তৎকালীন এই ইসি সচিব। এরপর স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিবের দায়িত্ব নেওয়ার পরও তার বিরুদ্ধে অভিযোগের কমতি ছিল না।

১৯৮৮ সালে সপ্তম বিসিএসের মাধ্যমে সরকারি চাকরিতে যোগ দেওয়া হেলালুদ্দীন আহমদ ক্ষমতাচ্যুত ‘আওয়ামী লীগ সরকারের একান্ত অনুগত আমলা’ হিসেবে পরিচিত ছিলেন।

ছাত্র-জনতার প্রবল আন্দোলনের মধ্যে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার আড়াই মাস পর সাবেক সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন। গত ২৩ অক্টোবর সন্ধ্যায় বন্দরনগরী চট্টগ্রামের খুলশীর একটি বাসা থেকে কোতোয়ালি থানা পুলিশ আটক করে।

পরে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের এডিসি (মিডিয়া) তারেক আজিজ জানান, ঢাকা মহানগর পুলিশের অনুরোধে হেলালুদ্দীন আহমদকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত ৩০ সেপ্টেম্বর রাজধানীর পল্টন থানায় হওয়া হত্যা ও বিস্ফোরক আইনের এক মামলায় তিনি এজাহারনামীয় আসামি।

হেলালুদ্দীন আহমদ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় ইসি সচিব হিসেবে কর্মরত ছিলেন। সেসময় নির্বাচন সংক্রান্ত বিভিন্ন বক্তব্য নিয়ে নিয়মিত গণমাধ্যমের সামনে হাজির হতেন তিনি।

ওই নির্বাচনের আগে তার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের পক্ষে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে গোপন বৈঠকে অংশ নেওয়ার অভিযোগ তুলেছিল বিএনপি। ঢাকা অফিসার্স ক্লাবের চার তলার পেছনের কনফারেন্স রুমে ২০১৮ সালের ২০ নভেম্বর রাতে ওই গোপন বৈঠক হয় বলে গণমাধ্যমে খবর হয়েছিল।

সেসময় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী অভিযোগ করেছিলেন, হেলালুদ্দীনসহ তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর সচিব সাজ্জাদুল হাসান, সাবেক জনপ্রশাসন সচিব ফয়েজ আহমদ, সাবেক পানিসম্পদ সচিব কবির বিন আনোয়ার, সাবেক বেসামরিক বিমান পরিবহন সচিব মহিবুল হক, সাবেক ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার আলী আজম, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর এপিএস-১ কাজী নিশাত রসুল ওই বৈঠকে অংশ নেন।

পরে হেলালুদ্দীন আহমদ চট্টগ্রামের সার্কিট হাউজেও একই ধরনের গোপন বৈঠক করেন বলে অভিযোগ ওঠে। সেই বৈঠকে ইসির জনসংযোগ শাখার তৎকালীন যুগ্ম সচিব আসাদুজ্জামানও ছিলেন।

তবে ওই বছরের ২৪ নভেম্বর সন্ধ্যায় ইসিতে সংবাদ সম্মেলন করে হেলালুদ্দীন আহমদ তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করে ঢাকা ও চট্টগ্রামে গোপন বৈঠকের খবরকে প্রপাগান্ডা বলে উড়িয়ে দেন। তিনি দাবি করেছিলেন, তাকে বিতর্কিত ও হেয় করার জন্য এ ধরনের প্রপাগান্ডা চালানো হচ্ছে।

ইসি থেকে বদলি হয়ে হেলালুদ্দীন আহমদ সরকার বিভাগের সচিব হন। পরে একই মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হিসেবে পদোন্নতি পান। ২০২২ সালের ১৯ মে ওই পদ থেকে তিনি অবসরে যান।

পরে তাকে সরকারি কর্ম কমিশনে (পিএসসি) সদস্য করে নেয় তখনকার আওয়ামী লীগ সরকার। ক্ষমতার পালাবদলের মধ্যে গত ৯ অক্টোবর পিএসসি চেয়ারম্যান সোহরাব হোসাইনসহ অন্য সদস্যদের সঙ্গে হেলালুদ্দীনও পদত্যাগ করেন।

এদিকে চট্টগ্রাম আদালতে গত ১৮ সেপ্টেম্বর একরামুল করিম নামের এক মুক্তিযোদ্ধা প্রতারণা ও রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে মামলা করেছেন। ওই মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ বিগত তিনটি জাতীয় নির্বাচনে জয়ী সংসদ সদস্যদের আসামি করা হয়েছে।

এছাড়া সাবেক তিন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ, কে এম নূরুল হুদা, কাজী হাবিবুল আউয়াল ও সাবেক ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদকেও এই মামলায় আসামি করা হয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/২৪অক্টোবর/ডিএম)

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
পবিপ্রবির বঙ্গবন্ধু হলের নামফলক ভেঙে নতুন নাম দিলেন শিক্ষার্থীরা
নওগাঁয় লেপ-তোষক তৈরিতে ব্যস্ত কারিগররা
দ্বীপরাষ্ট্র ভানুয়াতুর পাসপোর্ট কিনেছেন লোটাস কামাল!
প্রোটিয়া সফরের কয়েক ঘণ্টা আগে পাকিস্তানের কোচের পদ ছাড়লেন গিলেস্পি
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা