সমাবেশে বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মাশুক
শাহ আবু জাফরকে ফরিদপুরে নিষিদ্ধ ঘোষণা
বিএনপির সাবেক নেতা ও বর্তমানে বিএনএম-এর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান শাহ মোহাম্মদ আবু জাফরকে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার দোসর হিসেবে আখ্যায়িত করে তাকে ফরিদপুরে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক খন্দকার মাশুকুর রহমান মাশুক।
ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে এক জনসমাবেশে এ ঘোষণা দেন ফরিদপুর বিভাগের বিএনপির দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা খন্দকার মাশুকুর রহমান মাশুক। জনসমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন তিনি।
বুধবার বিকালে উপজেলার প্রাণকেন্দ্র চৌরাস্তা সংলগ্ন পুরনো বাসস্ট্যান্ডে ফ্যাসিবাদী স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার ফাঁসি ও তার দোসরদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে সমাবেশটি আয়োজন করে বোয়ালমারী উপজেলা কৃষক দল। সমাবেশে বিপুল সংখ্যক মানুষের সমাগম হয়।
খন্দকার মাশুকুর রহমান মাশুক বলেন, ‘হত্যা, জুলুম, নির্যাতন, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার দোসর যেসব রাজনৈতিক দল আছে তাদেরও নিষিদ্ধ করতে হবে। শাহ মোহাম্মদ আবু জাফর খুনি হাসিনার দোসর। তার এই মাটিতে রাজনীতি করার অধিকার নেই। এই মঞ্চ থেকে শাহ জাফর ও তার দোসরদের নিষিদ্ধ ঘোষণা করে গেলাম।’
বোয়ালমারীর সন্তান শাহ আবু জাফর বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ছিলেন। গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম) নামে নতুন দল গঠন করে নির্বাচনে প্রার্থী হন। এ ঘটনায় তাকে বহিষ্কার করে বিএনপি। তিনি বিএনএম দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।
খন্দকার মাশুকুর রহমান বলেন, ‘আমাদের দলে একটা বেইমান ছিলেন। যার নাম শাহ মোহাম্মদ আবু জাফর। এই লোভী উচ্ছিষ্টভোগী নেতা বিএনপির সাথে বেইমানি করে রাতের আঁধারে কিংস পার্টি খুলে শেখ হাসিনার সাথে হাত মেলান। গত নির্বাচনে অংশ নিয়ে জামানত হারান। এখনও ফরিদপুর-১ আসনের বিএনপির নেতা-কর্মীদের ভাগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন। এই বেইমান নেতার ফাঁদে কেউ পা দেবন না ।’
আবু জাফরের এমন আচরণের কথা বলতে গিয়ে খন্দকার মাশুকুর রহমান দলের ত্যাগী নেতাদের কথাও তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘পনের বছর জাতীয়তাবাদী রাজনীতি আঁকড়ে থাকায় ফরিদপুর-১ আসনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন খন্দকার নাসিরুল ইসলাম। মামলা-হামলা, জেল-জুলুম সহ্য করে তিনি এ আসনের জিয়ার সৈনিকদের আগলে রেখেছেন।’ আগামী জাতীয় নির্বাচনে তাকে অভিভাবক হিসেবে নির্বাচিত করে এলাকায় জাতীয়তাবাদী দল তথা তারেক রহমানের হাতকে শক্তিশালী করতে আহ্বান জানান তিনি।
আওয়ামী শাসনে বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদলের শত শত নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে উল্লেখ করে খন্দকার মাশুকুর বলেন, ‘এসব হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলেও তার সাঙ্গপাঙ্গরা দেশে রয়েছে, তারা এখনো ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে।’ এ জন্য সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান তিনি।
সংগঠনের সভাপতি লুৎফর রহমানের সভাপতিত্বে জনসমাবেশে প্রধান বক্তা ছিলেন ফরিদপুর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি খন্দকার নাসিরুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী নায়াব ইউসুফ, ফরিদপুর মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এফ এম কাইয়ুম জঙ্গি, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব এস এম কিবরিয়া স্বপন ।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন, ফরিদপুর মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব গোলাম মোস্তফা মিরাজ, বোয়ালমারী উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম সিরাজ, সাবেক মেয়র আব্দুস শুকুর শেখ, মধুখালী উপজেলা বিএনপির সভাপতি রাকিব হোসেন ইরান, সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম আবুল, বোয়ালমারী পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইকরাম হোসেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি শেখ আফসার উদ্দিন, বোয়ালমারী উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক সঞ্জয় সাহা, খান আতাউর রহমান, জাহাঙ্গীর আলম মুকুল, ইমরান হুসাইন, সাতৈর ইউপি চেয়ারম্যান রাফিউল আলম মিন্টু, আবুল বাসার বিপ্লব প্রমুখ।
এর আগে দুপুর থেকে বিএনপি, কৃষকদলসহ অঙ্গসংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মী উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে মিছিল নিয়ে জনসমাবেশস্থলে আসতে থাকেন। এ সময় সভাস্থল উপচে হাজার হাজার নেতাকর্মী সড়কের একপাশে অবস্থান নিলে মাঝকান্দী-ভাটিয়াপাড়া আঞ্চলিক মহাসড়কে কিছু সময় যানচলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হয়।
(ঢাকাটাইমস/৩০অক্টোবর/মোআ)