বিজয় দিবসে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ নিয়ে কুবিতে প্রশাসন ও সংগঠনগুলোর মতবিরোধ

৫৪তম বিজয় দিবসে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ নিয়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) প্রশাসন এবং অঙ্গসংগঠনগুলোর মধ্যে মতবিরোধ দেখা দিয়েছে। জাতীয় দিবস উদযাপনের নিয়ম অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন, আবাসিক হল ও বিভাগগুলোর পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের পর অঙ্গসংগঠনগুলো পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করলেও এবার সেই নিয়ম ভেঙে কর্মসূচি সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়।
অঙ্গসংগঠনগুলো পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানায়, তাদের নাম মাইকে ঘোষণা করা হবে না এবং যে যার মতো পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করবে। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেন অঙ্গসংগঠনের সদস্যরা। এর জেরে তারা সোমবার শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে।
অঙ্গসংগঠনের সদস্যরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও উপাচার্যের কাছে বিষয়টির ব্যাখ্যা জানতে চাইলে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী বলেন, ‘অঙ্গসংগঠনগুলোকে আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশ মনে করি না।’
এ মন্তব্যের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনসিসি সভাপতি শেখ শামিন বখস সাদী পাল্টা প্রশ্ন করেন, ‘স্যার, আমরা তাহলে কাদের হয়ে প্রোগ্রাম কাভার করছি?’ জবাবে উপাচার্য বলেন, ‘তোমরা কাদের হয়ে প্রোগ্রাম কাভার করছো, জানি না।’
রাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাসে শাখা ছাত্রদলের পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ নিয়েও বিতর্ক সৃষ্টি হয়। ছাত্রদল দাবি করে, তারা প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেছে।
শাখা ছাত্রদলের সদস্যসচিব মোস্তাফিজুর রহমান শুভ বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী ক্যাম্পাসে রাজনীতি নিষিদ্ধ। তাই আমরা এখানে কোনো দলীয় কার্যক্রম করতে আসিনি। শুধু পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের জন্য এসেছি। প্রক্টর স্যারের অনুমতি নিয়েই এসেছি।’
তবে এ বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক ড. আবদুল হাকিম বলেন, ‘তারা আমার কাছে অনুমতি চাইলে আমি অনুমতি দিয়েছিলাম। তবে তারা যে কোনো দলের ব্যানারে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করবে, তা আমার জানা ছিল না।’
অঙ্গসংগঠনের সদস্যরা বিজয় দিবসে তাদের প্রতি প্রশাসনের উপেক্ষামূলক আচরণের সঠিক ব্যাখ্যা চান। তবে প্রক্টর, রেজিস্ট্রার এবং অনুষ্ঠানের আহ্বায়ক কমিটি সুনির্দিষ্ট কোনো ব্যাখ্যা দেননি।
সংগঠনের সদস্যরা প্রায় তিন ঘণ্টা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। উপাচার্য সংগঠনগুলোকে নিয়ে যে মন্তব্য করেছেন সেটির যথাযথ ব্যাখ্যা না দিলে তারা অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে বলে জানান।
পরবর্তীতে দুপুর আড়াইটার দিকে উপাচার্য শহীদ মিনারে এসে অঙ্গসংগঠনের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন। সেসময় তিনি বলেন, ‘যেকোনো কারণে দলবদ্ধ থাকলে সেটা একটা সংগঠন হয়। সংগঠন রাজনৈতিকও হতে পারে, অরাজনৈতিকও হতে পারে। তবে তোমার প্রথম পরিচয় শিক্ষার্থী। অ্যাকাডেমিক এক্সিলেন্স বৃদ্ধি করা আমার দায়িত্ব। সংগঠন হলো কো-কারিকুলাম অ্যাকটিভিটি, এগুলোর দায়িত্ব আমার না।’
পরবর্তীতে সকল সংগঠনের সবাইকে নিয়ে তিনি শিগগিরই একটি আলোচনা সভা করবেন বলে আশ্বাস দেন।
(ঢাকাটাইমস/১৭ডিসেম্বর/এজে)

মন্তব্য করুন