বগুড়ায় পুলিশি হেফাজত থেকে পালানো আসামি গ্রেপ্তার

পুলিশি হেফাজতে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যাওয়া ছিনতাই মামলার আসামি শাহাদত হোসেন কলমকে আবারও গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টায় নওগাঁর নিয়ামতপুর থানার মহাদেবপুর গ্রামের তার এক আত্মীয়ের বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত শাহাদত হোসেন কলম বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টার দিকে পুলিশি হেফাজতে থাকা অবস্থায় টয়লেটে যাওয়ার কথা বলে কৌশলে হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যান। তিনি আদমদীঘি উপজেলার ছাতিয়ানগ্রাম চৌধুরীপাড়ার খোকা মিয়ার ছেলে।
এর আগে গত মঙ্গলবার রাত ৮টায় জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার তিলকপুর বাজারের বিকাশ দোকানির টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় জড়িত তিনজনের মধ্যে আদমদীঘি উপজেলার ছাতিয়ান গ্রাম চৌধুরীপাড়ার চয়েন চৌকিদারের ছেলে বাধন নামে একজনকে তিলকপুর বাজারেই ধরে ফেলে জনগণ। অপর দুজন একই গ্রামের শাহাদত হোসেন কলম ও মোস্তাকিন পালোয়ানের ছেলে রাজু পালোয়ানকে ধাওয়া করে আদমদীঘি উপজেলার আমইল ধরে ফেলে জনগণ। এ সময় ওই দুজনকে গণপিটুনি দেন তারা। এক পর্যায়ে জনগণের মধ্যে কেউ একজন রাজু পালোয়ানের পায়ের রগ কেটে দেন। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তাদেরকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে দেয়। পরে বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টায় কলম টয়লেটে যাওয়ার পর হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যান। পুলিশ হেফাজতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাদের পাহারার দায়িত্বে ছিলেন পুলিশ লাইনসের একজন সহকারী উপপরিদর্শক (এসআই) এবং দুজন কনস্টেবল।
হাসপাতাল থেকে পালানো শাহাদত হোসেনকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে আদমদীঘি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, তিনি তার মহাদেবপুর গ্রামে শ্যালিকার বাড়িতে আত্মগোপন করেছিলেন। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে শুক্রবার রাত সোয়া ১০টার দিকে সেখানে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে আক্কেলপুর থানা-পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হবে। এর আগে মঙ্গলবার রাতে ৯৯৯-এ কল পেয়ে আমরা ঘটনাস্থল থেকে হাজার হাজার মানুষের মধ্যে থেকে তাদেরকে উদ্ধার করি।
ওসি আরো বলেন, শাহাদতসহ আরো যারা গ্রেপ্তার হয়েছে তাদের অত্যাচারে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ ছিল। তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে থানায়।
রাজু নামের একজনের পায়ের রগ কাটা হয়েছে সেটা কি জনগণ করেছে নাকি তাদের প্রতিপক্ষ কোনো গ্রুপ? জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা জনগণের মধ্য থেকে তাদের উদ্ধার করেছি।
এদিকে আসামি পালানোর ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে বগুড়া পুলিশ লাইনসের রিজার্ভ পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মফিজুল ও কনস্টেবল জাকিরুল ইসলামকে প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া ও ট্রাফিক) সুমন রঞ্জন সরকার।
তিনি বলেন, ঘটনাটি তদন্তে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. মোস্তফা মঞ্জুরকে প্রধান করে একটি বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। পুলিশ হেফাজত থেকে পালানোর অভিযোগে শাহাদত হোসেনের বিরুদ্ধে বগুড়া সদর থানায় একটি মামলা করা হবে।
(ঢাকা টাইমস/১৮জানুয়ারি/এসএ)

মন্তব্য করুন