চিকিৎসককে হত্যা মামলার আসামি করায় ডা. রফিকের উদ্বেগ

জুলাই আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে শহীদ ইসমাইলকে চিকিৎসা অবহেলার দায়ে অভিযুক্ত করে রামপুরার একটি বেসরকারি হাসপাতালের একজন চিকিৎসকসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম।
রবিবার এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার ২০২৪-এর জুলাই অভ্যুত্থানে কতিপয় চিকিৎসকের কর্মকাণ্ডের বিতর্কিত ভূমিকা যেমন আছে ঠিক একইভাবে দলীয় নির্দেশনা মেনে নিজেদের জীবন ঝুঁকিতে রেখে চিকিৎসাসেবা দেয়ার প্রশংসনীয় কর্মকাণ্ডের নিদর্শনও আছে ডাক্তারদের।
একদিকে যেমন ফ্যাসিস্ট সরকারের ক্রীড়নক হিসেবে শান্তি সমাবেশে যাওয়া কিংবা চিকিৎসাসেবায় বাধা দেওয়ার নজির আছে, একইভাবে তৎকালীন সরকারের রক্তচক্ষুকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে জেল-জুলুম সহ্য করে নিজেদের উজাড় করে দেওয়ার উদাহরণও আছে।
ডা. রফিক বলেন, বিভিন্ন মিডিয়ার ছবিতে দেখা যাচ্ছে, পুলিশের নির্মমতায় শহীদ ইসমাইলের মাথার একটা অংশ থেতলে গিয়ে সে পড়েছিল। সেই অবস্থায় চিকিৎসক জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তার চিকিৎসার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেন। অথচ সেই চিকিৎসককে আজ হত্যা মামলার আসামি করা হয়, যা অত্যন্ত দুঃখজনক।
তিনি বলেন, যে পুলিশ গুলি করে ইসমাইলের মাথার খুলি উড়িয়ে দেন এবং কর্তব্যরত চিকিৎসককে সেবা প্রদানে বাধা দেন, সেই পুলিশই আবার ওই ডাক্তারের হাতে হাতকড়া পরিয়ে থানায় নিয়ে যায়। অথচ হত্যার সাথে জড়িত পুলিশের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা এখনও দৃশ্যমান নয়। এসব হত্যাকাণ্ডের পেছন থেকে যারা কলকাঠি নেড়েছেন, নির্দেশদাতা ছিলেন, তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত কিংবা দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ পরিলক্ষিত হচ্ছে না।
তিনি বলেন, এভাবে একজন চিকিৎসককে হয়রানি যেন অতীতের ফ্যাসিস্ট সরকারের দুঃশাসনেরই প্রতিচ্ছবি। যেখানে চিকিৎসকদের কোনো অনিয়ম তদন্ত করার ক্ষেত্রে সরকার কর্তৃক নিয়োজিত বিএমডিসি আছে, যারা তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্ত চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারতো সেখানে কোনো ধরনের তদন্ত ছাড়াই চিকিৎসকদের এমন হয়রানি কোনো ভয়ংকর ষড়যন্ত্রের অংশ কিনা তা খতিয়ে দেখা জরুরি।
বিভিন্ন প্রিন্ট ও সোশ্যাল মিডিয়া হতে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, যে চিকিৎসক নিজের জীবন ঝুঁকিতে রেখে চিকিৎসা করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করে, তাকেই এমন হয়রানি আসলে নজিরবিহীন। একইসঙ্গে আমরা যখন দেখতে পাই বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের চিকিৎসকরা যারা শান্তি সমাবেশ করেছে, চিকিৎসা প্রদানে বাধাদান করেছে তাদের এখনো পদায়ন ও পদোন্নতির ক্ষেত্রে একটি বিশেষ মহলের সহায়তায় শাস্তির বদলে পুরস্কার দেওয়া হয়, তখন সেটি আমাদের ব্যথিত করে।
এভাবে ফ্যাসিস্ট সরকারের প্রেতাত্মাদের বিরুদ্ধে চলমান তদন্ত ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা হচ্ছে কিনা তা নিয়ে একটি বড় প্রশ্ন থেকেই যায়।
চিকিৎসক হয়রানির এ ঘটনা তীব্র নিন্দনীয়। অনতিবিলম্বে উক্ত চিকিৎসককে সসম্মানে মুক্তি ও তার সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে এবং উদ্ভূত পরিস্থিতির জন্য দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। (ঢাকাটাইমস/১৯জানুয়ারি/জেবি/এজে)

মন্তব্য করুন