হাসিনার পতন জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়: ফারুক

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক বলেছেন, ‘আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, হাসিনার পতন শুধু জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না।’
তিনি বলেন, ‘গত ১৬টি বছর ধরে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ ও গণতন্ত্রপ্রিয় দলগুলোকে সঙ্গে নিয়ে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে কঠোর আন্দোলন করেছি। জেল-জুলুম-হামলা-মামলা সব সহ্য করেছি। রাতে আমাদের ঘুম হারাম ছিল, কবরস্থানে ঘুমিয়েছি।’
বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গণতান্ত্রিক ফোরামের উদ্যোগে জনগণের ওপর অযৌক্তিক ভ্যাট আরোপের প্রতিবাদে এক প্রতিবাদ সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্করের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে আর কখনো মাথা ঘামাবেন না। অতীতে করেছেন শেখ হাসিনার জন্য, এখন বাংলাদেশে শেখ হাসিনা নেই। বাংলাদেশের সীমান্ত নিয়ে ন্যায্য দাবি আপনাকে দিতে হবে। আর টালবাহানা চলবে না।’ রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আদর্শিক বিভাজন চাই না। দেশে সবার ওপরে জনগণ থাকবে।
‘জিয়াবাদ বা মুজিববাদও আর চাই না’— জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর এমন বক্তব্য না করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘যে জিয়া বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেছেন, যে জিয়া বাংলাদেশকে মুসলিম দেশ হিসেবে পরিচিত দিয়েছেন, যেই জিয়া সার্ক গঠন করেছেন, যেই জিয়া খাল খনন করে কৃষকদের সেচের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন, যে জিয়ার রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে বসে সমস্যা সমাধান করেছে, সেই জিয়াবাদ নিয়ে দয়া করে কোনো মন্তব্য করবেন না।’
তিনি বলেন, ‘সকলে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে শেখ হাসিনাকে বিদায় করতে পেরেছি। আমরা আশা করি, বাংলাদেশে এমন একটি নির্বাচন দেবেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস, সে নির্বাচনে বাংলাদেশের জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হবেন। বাংলাদেশে সংস্কার হবে, আইন প্রণয়ন হবে। সকল কিছুই হবে, কিন্তু তার আগে ষড়যন্ত্র করে ১/১১ এর মতো নির্বাচন বিলম্বিত করার কোনো অবকাশ বাংলাদেশে আর হবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘অনেকেই বলে বিএনপির লোক চলে যাবে। আওয়ামী লীগ এত বছর জুলুম নির্যাতন করেও বিএনপির একটি কর্মীও এত বছরে আওয়ামী লীগে যোগ দেয়নি। অতএব বিএনপি খাঁটি গণতন্ত্রী, বিএনপির সংবিধানে অনুগত, বিএনপির স্বাধীনতার ঘোষক শহীদদের আদর্শের দল। আমরা জীবন দেব, তবুও বাংলাদেশের মানুষের স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠার অধিকার আদায়ের জন্য সংগ্রাম করেছি, সামনেও করব।’
‘এই সময় আমাদের মধ্যে অনৈক্য তৈরি করা যাবে না। এই অনৈক্য আবার শেখ হাসিনার পেতাত্মারা যারা সচিবালয়ের চারদিকে বসে আছে এদেরকে সুযোগ করে দেওয়া। অনুগ্রহ করে এমন সুযোগ আর করে দেওয়া যাবে না।’
ফারুক বলেন, ‘বাংলাদেশে আর ডিম, চাল, পেঁয়াজের সিন্ডিকেট হবে না। এমন বাংলাদেশ গড়ব যে বাংলাদেশের বিচারের নামে আর প্রহসন হবে না। এমন বাংলাদেশ গড়ব, যেই বাংলাদেশে আর আয়নাঘর হবে না। এমন দেশ গড়ব যে দেশে হার দুর্নীতি হবে না। এমন বাংলাদেশ গড়ব, যে দেশে আইনের শাসন চলবে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শক্তি ছাত্র-জনতার আন্দোলনকে সফল করেছে। সেই সফলতা যেন নষ্ট না হয়।’
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি ভিপি ইব্রাহিমের সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সভায় আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, গণতান্ত্রিক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার ওবায়দুর রহমান টিপু, মৎস্যজীবী দলের সদস্য ইসমাইল হোসেন সিরাজী প্রমুখ।
(ঢাকাটাইমস/২৩জানুয়ারি/জেবি/এজে)

মন্তব্য করুন