বাংলাদেশ ছাত্রপক্ষের ঢাকা দক্ষিণের ৩৫ সদস্যের কমিটি ঘোষণা

রাফিউর রহমান ফাত্তাহকে আহ্বায়ক ও শেখ মাহমুদুল হাসান আসিফকে সদস্যসচিব করে বাংলাদেশ ছাত্রপক্ষের ৩৫ সদস্যবিশিষ্ট ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখা কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। শনিবার রাজধানীর বিজয়নগরস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই কমিটির ঘোষণা দেওয়া হয়।
কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক ফওজিয়া ফারিহা করবীর সঞ্চালনায় এসময় সূচনা বক্তব্য দেন ছাত্রপক্ষের কেন্দ্রীয় সদস্যসচিব আশরাফুল ইসলাম নির্ঝর।
তিনি বলেন, ‘ছাত্রপক্ষ সবসময়ই শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায় ও সমস্যা সমাধানে তাদের মুখপাত্র হিসেবে কাজ করবে। সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নে শিক্ষার্থীদেরকে সঙ্গে নিয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ নতুন ইতিবাচক ছাত্ররাজনীতির উন্মেষ ঘটাতে অগ্রণী ভূমিকা রাখবে বলে বিশ্বাস করি। কোনো দলের লেজুড়বৃত্তি কিংবা সহমত ভাইয়ের রাজনীতির বদলে ছাত্রপক্ষর সদস্যরা স্বনির্ভর ব্যক্তিত্ব হিসেবে আগামীর জাতীয় রাজনৈতিক নেতৃত্ব হিসেবে গড়ে উঠবে।’
কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক মুহাম্মদ প্রিন্স বলেন, ‘স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের তিন মূলনীতি সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচারের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের অধিকার প্রতিষ্ঠা ও সমস্যার সমাধানের লড়াইয়ের ডাক দিয়ে প্রতিষ্ঠিত ছাত্র সংগঠন ছাত্রপক্ষ। ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানের শহীদের রক্তের সঙ্গে তামাশা করার হীন প্রচেষ্টা কেউ করলে শিক্ষার্থীদেরকে সঙ্গে নিয়ে খুনি-দোসরদের সঙ্গে তাদেরও বিচার করা হবে। ছাত্রপক্ষর রাজপথের বিপ্লবীরা বিচার সম্পন্ন ও শাস্তি নিশ্চিতের পূর্বে ঘরে ফিরে যাবে না। এই সংগ্রামে ঢাকা মহানগর দক্ষিণকে অগ্রগামী ভূমিকায় দেখতে চাই।’
সংগঠনের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার জুবায়ের আহমেদ ভুঁইয়া বলেন, ‘দুই হাজারের বেশি শহীদের রক্তের বিনিময়ে আমাদের সামনে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের সুযোগ এসেছে। আমরা যদি এবার ব্যর্থ হই শহীদের রক্ত বৃথা যাবে, তারা ও ইতিহাস আমাদের কোনোদিন ক্ষমা করবে না। শহীদদের কাছে দায়বদ্ধতা থেকে আমাদের সকলে মিলে একটি সুন্দর বাংলাদেশ গড়তে হবে। আমরা বরাবরই তোমাদের পাশে ছিলাম, আগামী দিনগুলোতেও থাকবো।’
প্রধান উপদেষ্টা ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, ‘১৯৭১ সালে শহীদের আত্মত্যাগ, সাড়ে সাত কোটি মানুষের অবর্ণনীয় কষ্ট, জীবন ও সম্পদের অপূরণীয় ক্ষতি আর দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমরা পেয়েছি স্বাধীন বাংলাদেশ। স্বাধীনতার অর্ধ শতাব্দী পর ২৪ সালে এসে এদেশে আবারও বৈষম্যের বিরুদ্ধে গণঅভ্যুত্থান হয়েছে। কারণ মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্ক্ষা পূরণ করে ব্যর্থ হয়েছে পরবর্তী শাসকগোষ্ঠী। ৭১ সালে তৎকালীন স্বৈরাচারের মতো ২৪ সালেও স্বৈরাচারী কায়দায় বৈষম্য ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে অধিকারের দাবিকে নিস্তব্ধ করে দিতে চেয়েছিল শাসকগোষ্ঠী। এবারও তাদের নৃশংস গণহত্যার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে ছাত্র-জনতা।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা মুগ্ধ, আবু সাঈদ, আকরামদের শহীদ এবং সাধারণভাবে কেউ মৃত্যুবরণ করলে মৃত বলি কেন? কারণ, দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য জীবন দেওয়া গৌরবের। আগামী দিনগুলোতে শিক্ষার্থীদের অধিকার ও তাদের সমস্যার সমাধান, সার্বিকভাবে শিক্ষার্থীদের মুখপাত্রের ভূমিকা পালন করতে হবে তোমাদের।’
ঢাকা মহানগর দক্ষিণের নবনির্বাচিত আহ্বায়ক রাফিউর রহমান ফাত্তাহ বলেন, ‘বাংলাদেশ ছাত্রপক্ষ হলো শিক্ষা, সাম্য ও অধিকারভিত্তিক নতুন প্রজন্মের ছাত্র সংগঠন। এদেশের শিক্ষার্থীরা বারবার রক্ত দিলেও তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। দেশের আপামর জনতার সঙ্গে শিক্ষার্থীরাও বঞ্চিত এবং শোষিত। আমরা নতুন বাংলাদেশ গড়তে চাই, যেখানে কোনো ধরনের বৈষম্য ও পরিবারতন্ত্র থাকবে না।’
ঢাকা মহানগর দক্ষিণের নবনির্বাচিত সদস্যসচিব শেখ মাহমুদুল হাসান আসিফ বলেন, ‘স্বৈরাচারের নির্যাতন নিপীড়নের ফলে এদেশের ছাত্র সমাজ আজ ঐক্যবদ্ধ। পৃথিবীর কোনো শক্তি নেই আমাদের মাঝে বিভাজন তৈরি করে নতুন বাংলাদেশের পথচলা ক্ষতিগ্রস্ত করবে। ঢাকা মহানগর দক্ষিণসহ সারা দেশে আমাদের ছাত্রপক্ষকে ছড়িয়ে দিতে হবে।’
আরও বক্তব্য দেন যুগ্ম আহ্বায়ক সৈয়দ আলিফ সানী, দপ্তর সম্পাদক সোলাইমান আল হাবিব, নারী বিষয়ক সম্পাদক মেহেরুন নেসা আনিকা। এসময় উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় সহকারী সদস্যসচিব নুসরাত রহমান নিশাত, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হৃদয় আহমেদ সানীসহ বিভিন্ন শাখার নেতৃবৃন্দ।
(ঢাকাটাইমস/২৬জানুয়ারি/এজে)

মন্তব্য করুন