রাঙ্গাবালীতে একটি সেতুর অভাবে ভোগান্তিতে দুই ইউনিয়নের মানুষ

পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার দারছিড়া নদীতে একটি সেতুর অভাবে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন প্রায় ৫০ হাজার মানুষ। প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে নৌকা দিয়ে চলাচল করছেন কৃষক, ব্যবসায়ী, স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীসহ নানা শ্রেণি পেশার মানুষ। উপজেলার দুই ইউনিয়নে হাজার হাজার মানুষের বসবাস হলেও যোগাযোগ ব্যবস্থার তেমন কোনো উন্নতি হয়নি।
দারছিড়া নদীটি উপজেলা সদর থেকে বড়বাইশদিয়া ও মৌডুবী দুটি ইউনিয়নকে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছে। নদী পাড়ি দিয়ে জেলা-উপজেলা শহরে যাতায়াত করতে হয় ওই এলাকার বাসিন্দাদের।
এই উপজেলার উত্তরে আগুন মুখা নদী দিয়ে প্রবাহিত হয়ে দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরে মিলিত হয়েছে দারছিড়া নদী। নদীর পূর্ব দিকে রাঙ্গাবালী উপজেলা সদর ও পশ্চিমে বড়বাইশদিয়া এবং মৌডুবী ইউনিয়ন।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে আরও জানা যায়, বড়বাইশদিয়া ও মৌডুবী ইউনিয়নের বসবাসরত অধিকাংশ মানুষই মৎস্য ও কৃষিজীবী। তাদের নানা প্রয়োজনে উপজেলায় যাতায়াত করতে হয়। তবে ওই নদীতে সকাল ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খেয়া চলাচল করে। এ ব্যাপারে বড়বাইশদিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. আবুল বাশার বলেন, যুগ যুগ ধরে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নদী পার হয়ে আসছি, আমাদের দাবি খুব শিগগিরই এখানে সেতু নির্মাণ করা হোক। তাহলেই দুই ইউনিয়নের মানুষের ভোগান্তি কিছুটা দূর হবে।
মৌডুবী ইউনিয়নের তরুণ উদ্যোক্তা মো. আজিজুর রহমান সুজন বলেন, মৌডুবী ইউনিয়নের রয়েছেন পর্যটন স্পট জাহাজমারা সমুদ্র সৈকত। সবুজ বনাঞ্চল পাখিদের কিচিরমিচির শব্দ ও বিস্তীর্ণ বালুকাময় বীচ। দৃষ্টিনন্দন সমুদ্র সৈকত। বালুচরে লাল কাঁকড়াদের ছোটাছুটি। ঢেউয়ের গর্জন। বাতাসের তালে ঝাউপাতার শো শো শব্দে এক অন্যরকম অনুভূতি। সমুদ্রতটে চিকচিকে বালুতে পা ফেলানো আর হঠাৎ সমুদ্রের জলরাশি ঢেউ এসে ছুঁয়ে যাওয়া। সাজ বেলায় পূর্বাকাশে সমুদ্রের বুক চিরে জেগে ওঠা লাল সূর্যটা বেলা শেষে পশ্চিম আকাশে হেলে পরার মতো দৃশ্য যেকোন জায়গায় দাঁড়িয়ে অবলোকন করা যায়। ভ্রমণপিয়াসুদের কাছে এ স্থানটি অতুলনীয়। এখানে ভ্রমণ পিপাসু লোকজন সমুদ্রবিলাসে আসেন। তবে এখানে আসতে হলে দাড়ছিড়া নদী পার হয়ে আসতে হয়। নদীতে ব্রিজ না থাকায় যাত্রীদের ভোগান্তি পোহাতে হতে হয় প্রতিনিয়ত। এজন্য এখানে একবার কেউ এলে দ্বিতীয়বার আসতে চায় না। এই নদীতে একটি ব্রিজ হলে জাহাজমারা সমুদ্র সৈকতে পর্যটকদের যাতায়াত বাড়বে।
উপজেলার যুব ফোরামের সভাপতি ও সমাজকর্মী মো. রাকিবুল ইসলাম বলেন, শিক্ষার্থীরা ঝুঁকি নিয়ে নৌকায় পারাপার হয়। বিশেষ করে বর্ষার মৌসুমে। এখানে ব্রিজ এখন সময়ের দাবি।
বড়বাইশদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. ফরহাদ হোসাইন বলেন, এই নদীতে একটি সেতুর নির্মাণের জন্য বেশ কয়েকবার এলজিইডি কার্যালয়ের চিঠি দেওয়া হয়েছে।
রাঙ্গবালী উপজেলা প্রকৌশলী মো. হাবিবুর রহমান বলেন, আমাদের দারছিড়া নদীর ওপর ২৮০ মিটার একটি ব্রিজ নির্মাণ হবে। ইতোমধ্যে ড্রইং নিয়ে সার্ভে করা হয়েছে। এলাইমেন্টের দুই দিকে ডান এবং বামে তিন কিলোমিটার সার্ভে করা হয়েছে। নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি বুয়েট ইঞ্জিনিয়ার টিম স্থান পরিদর্শন করেছেন। তারা ফিজিবিলিটি নিয়ে গেছে। যেহেতু এটি একটি বড় প্রকল্প এটি স্টেজ বাই স্টেজ কাজ চলতেছে এবং চলমান আছে। আশা করি কাজটি বাস্তবায়ন হবে। যেহেতু এটি একটি বড় প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আসতে হয় । প্রথমে এটি একনেকে যাবে।
তিনি আরো বলেন, আমার সাথে প্রকল্প পরিচালক মহোদয়ের কথা হয়েছে। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন কাজটি যত তাড়াতাড়ি বাস্তবায়ন করা যায়।
(ঢাকা টাইমস/০৯ফেব্রুয়ারি/এসএ)
মন্তব্য করুন