দেড় মাসে অপহরণ ৭৫, আজ ১১ জেলেকে ধরে নিল আরাকান আর্মি

কক্সবাজার থেকে আবার ট্রলারসহ মাঝি-মাল্লা ধরে নিয়ে গেছে মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ)। এ নিয়ে গত দেড় মাসে আরাকান আর্মি ও দেশটির নৌবাহিনীর হাতে ৭৫ জন বাংলাদেশি জেলে-মাঝি অপহরণের ঘটনা ঘটল।
সর্বশেষ আজ মঙ্গলবার সকালে টেকনাফের সেন্ট মার্টিন দ্বীপের অদূরে বঙ্গোপসাগর থেকে দুটি ট্রলারসহ ১১ জন মাঝিমাল্লাকে ধরে নিয়ে গেছে সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি।
আজ বিকালে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত নাম জানা যায়নি অপহৃত মাঝিমাল্লাদের। তবে ট্রলার দুটির মালিক এবং স্থানীয় ট্রলার মালিক সমিতির নেতারা অপহরণের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
টেকনাফ কায়ুকখালী বোট মালিক সমিটির সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম বলেন, সেন্টমার্টিনের কাছাকাছি বাংলাদেশি জলসীমায় ঢুকে আরাকান আর্মি অস্ত্রের মুখে দুটি মাছ ধরার ট্রলারসহ ১১ জেলেকে ধরে নিয়ে যায়। সেখানে তার ট্রলারও রয়েছে। অন্য ট্রলারটির মালিক মোহাম্মদ শাওন নামের এক ব্যক্তি বলে জানা গেছে।
এ ছাড়া আরও দুটি মাছ ধরার ট্রলার ধরে নেওয়ার খবর পাওয়া গেছে, যেখানে ১০-১২ জন জেলে থাকতে পারেন। তবে ট্রলার ও ট্রলারের মালিকের নাম নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
সেন্টমার্টিন দ্বীপের অদূরে মৌলভীর শীল নামের এলাকায় মাছ শিকাররত জেলেরা জানান, আরাকান আর্মি স্পিডবোটে এসে বাংলাদেশ জলসীমা থেকে মাঝিমাল্লাদের ধরে নিয়ে যায়।
ট্রলারসহ জেলে-মাঝিদের আরাকান আর্মি ধরে নিয়ে যাওয়ার কথা শুনেছেন টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে আলোচনা করে তাদের ফেরত আনার উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
এদিকে টেকনাফ-২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. আশিকুর রহমান সংবাদমাধ্যমকে জানান, ট্রলার ধরে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে খোঁজ-খবর নিচ্ছেন তারা।
গত ৫ মার্চ সেন্টমার্টিন উপকূলে মাছ ধরার সময় ছয়টি ট্রলারসহ ৫৬ জেলেকে ধরে নিয়ে যায় মিয়ানমারের নৌবাহিনীর সদস্যরা। পরদিন তাদের ছেড়ে দেওয়া হলেও ট্রলারের মাছ, তেল, জাল ও খাদ্যসামগ্রী লুট করে নিয়ে যায় ওিই অপহরণকারীরা।
এর আগে গত ২০ ফেব্রুয়ারি নাফ নদী থেকে চারটি মাছ ধরার নৌকাসহ ১৯ বাংলাদেশি জেলেকে অপহরণ করে আরাকান আর্মি। পরে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
বর্তমানে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের ১৭টি শহরের ১৩টির নিয়ন্ত্রণ আরাকান আর্মির হাতে। রাখাইন রাজ্যের মংডু টাউনশিপসহ সীমান্তের অধিকাংশ এলাকায় পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার দাবি করে গণমাধ্যমে বিবৃতি দেয় সশস্ত্র গোষ্ঠীটি। এর পর তারা নাফ নদীতে তাদের জলসীমায় নৌযান চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। (ঢাকাটাইমস/৮এপ্রিল/মোআ)

মন্তব্য করুন