নোয়াখালীতে বিএনপির দু'পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ৮

নোয়াখালী প্রতিনিধি, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ০৭ এপ্রিল ২০২৫, ১৮:৫০| আপডেট : ০৭ এপ্রিল ২০২৫, ১৯:৩১
অ- অ+

প্রধান শিক্ষক নিয়োগ ও পরিচালনা কমিটি নিয়ে নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের কালিকাপুর উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় ধাওয়া পাল্টা দেওয়া এবং সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত আট জন আহত হয়েছেন। এসময় বেশ কয়েকটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটে।

সোমবার দুপুরে কালিকাপুর উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিয়োগ ও পরিচালনা কমিটি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিএনপি নেতা আবুল কালাম আজাদ ও সেলিম শাহীর লোকজনের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করেছিল। সোমবার দুপুরে এক পক্ষ প্রধান শিক্ষকের প্রত্যাহার ও কমিটি বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন করতে গেলে অপর পক্ষের লোকজন বাধা দেয়। এতে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটনা ঘটে। এ সময় ঘটনাস্থলে থাকা পুলিশ উভয়পক্ষকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করে। পরবর্তীতে খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা এই ঘটনাস্থলে যান।

কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ জানান, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি সেলিম শাহী সভাপতি হওয়ায় অবৈধভাবে নোমান উদ্দিনকে প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেন। গত ৩১ জানুয়ারি নোমান উদ্দিনের মেয়াদ শেষ হলেও তাকে দিয়ে আরও দেড় মাস প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করান। তিনি চলে যাওয়ার পর একই কায়দায় বিদ্যালয়ের একজন সহকারী প্রধান শিক্ষক থাকা সত্ত্বেও বিদ্যালয়ে সিনিয়র শিক্ষক জাফর উল্যাকে অবৈধভাবে প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেন সেলিম শাহী। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও স্থানীয় লোকজন। এর অংশ হিসেবে বিদ্যালয়ে সামনে নিয়োগ প্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের অপসারণে দাবি ও কমিটি বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন করে স্থানীয় লোকজন। এতে হামলা চালিয়ে বেশ কয়েকজনকে পিটিয়ে আহত করে সেলিম শাহীর লোকজন।

তিনি আরও বলেন, পূর্বে এবং বর্তমানে অবৈধভাবে নিয়োগ পাওয়া প্রধান শিক্ষকদের বিরুদ্ধে মন্ত্রণালয়, জেলা প্রশাসক ও জেলা শিক্ষা অফিসে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও সেলিম শাহী প্রভাব খাটিয়ে দীর্ঘদিন পর্যন্ত কমিটির সভাপতি দায়িত্ব পালন করে আসছেন। পুলিশের উপস্থিতিতে আমার লোকজনকে মারধর ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটায় আজাদের লোকজন। আহতদের মধ্যে রয়েছেন, রিপন, আবদুল কদ্দুস, ফয়েজ উল্ল্যা খোকন, জহিরুল ইসলাম, খোরশেদ আলম। আহতরা স্থানীয় ছাত্রদল, যুবদল ও বিএনপি নেতাকর্মী। তাদেরকে প্রাথমিকভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

জানতে চাইলে সোনাইমুড়ী উপজেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট সেলিম শাহী বলেন, গত ৩১ জানুয়ারি প্রধান শিক্ষক নোমান উদ্দিন অবসরে যান। পরবর্তীতে সহকারী প্রধান শিক্ষক মন্জুরুল হোসেনকে দায়িত্ব নিতে বলা হলেও তিনি তাতে অপারগতা প্রকাশ করেন। পরবর্তীতে সহকারী শিক্ষক ও কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সিনিয়র একজন শিক্ষককে প্রধান শিক্ষক করা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। যাতে জাফরুল্লাহকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়। দায়িত্ব দেওয়ার পর থেকে তিনি বিদ্যালয় কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।

তিনি আরও বলেন, অ্যাডভোকেট আজাদ সভাপতি হওয়ার জন্য তিনবার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। জাফরুল্লাহ প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে তিনি বিরোধিতা করেন। এর অংশ হিসেবে সোমবার দুপুরে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে নিজের লোকজন নিয়ে অবৈধভাবে মানববন্ধনের আয়োজন করে। পরে তাতে বিদ্যালয় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা এবং স্থানীয় লোকজন বাধা দিলে উভয়পক্ষের মধ্যে ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।

সোনাইমুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোরশেদ আলম বলেন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিয়োগকে কেন্দ্র করে সেলিম শাহী ও আবুল কালাম আজাদ গ্রুপের লোকজনের সাথে ধাওয়া পালটা ধাওয়া ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। এতে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে বলে আমরা জেনেছি। ঘটনাস্থলে পুলিশ থাকায় পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণ করা গেছে। তবে কোন পক্ষ থেকে আমরা লিখিত অভিযোগ পায়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

(ঢাকা টাইমস/০৭এপ্রিল/এসএ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
বাংলাদেশের সঙ্গে এলএনজি সরবরাহ সমঝোতা স্মারক নবায়ন করবে কাতার
কুয়েটের ভিসি মুহাম্মদ মাছুদের পদত্যাগের দাবি এনসিপির
উত্তরা কৃষক লীগের সহ-সভাপতি নেতা হানিফ গ্রেপ্তার
মহানবী (সা.)–কে নিয়ে কটূক্তি: কোহিনুর কেমিক্যালের সুপারভাইজার বিধান বাবু আটক 
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা