বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক নতুন পর্যায়ে প্রবেশ করবে: প্রধান উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ২৯ মার্চ ২০২৫, ০৮:৩৫
অ- অ+

বাংলাদেশ-চীন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নতুন পর্যায়ে প্রবেশ করবে বলে আশা করছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

“চীনকে ভালো বন্ধু হিসেবে দেখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ” উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, “আমাদের সম্পর্ক বছরের পর বছর ধরে খুবই শক্তিশালী। আমাদের ব্যবসা খুবই শক্তিশালী এবং চীনের সঙ্গে আমাদের সহযোগিতা থেকে আমরা উপকৃত হচ্ছি।”

ড. ইউনূস চীনের সরকারি বার্তা সংস্থা সিনহুয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন।

ড. ইউনূস বলেন “চীন যা অর্জন করেছে তাতে বাংলাদেশের সবাই অনুপ্রাণিত।”

তিনি বলেন, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাজ হলো একটি নতুন বাংলাদেশ পুনর্গঠন করা এবং জনগণ আশা করে যে তারা নিজ দেশের উন্নয়নে চীনের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিতে পারবে।”

চীনের দারিদ্র্য হ্রাসের অর্জন সম্পর্কে মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “বেশিরভাগ দেশ সাধারণ মানুষের চাহিদা পূরণের পরিবর্তে জিডিপি প্রবৃদ্ধির ওপর জোর দেয়। কিন্তু চীন নিম্ন আয়ের গোষ্ঠীর ওপর জোর দেয়। এ কারণেই চীনারা দ্রুত দারিদ্র্য হ্রাসে খুব সফল।”

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশ এবং চীনের মধ্যে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা উচ্চ পর্যায়ের উন্নয়ন প্রত্যক্ষ করেছে। চীন টানা ১৫ বছর ধরে বাংলাদেশের বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার। বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় ১০০০ চীনা প্রতিষ্ঠান কাজ করছে, যা মোট ৫ লাখ ৫০ হাজারেরও বেশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে।

ড. ইউনূস উল্লেখ করেন যে, দুই দেশ ব্যাপক সহযোগিতার সম্পর্ক স্থাপন করেছে, যা অনেক ইতিবাচক ফলাফল এনেছে। চীন থেকে বাংলাদেশের আমদানি বাড়ছে। আমাদের শিল্প-ব্যবহারের বেশিরভাগ পণ্য আসে চীন থেকে।”

ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে ইউনূস দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক পরিপূরকতা এবং তাদের বিশাল সহযোগিতার সম্ভাবনার ওপর জোর দেন। তিনি আশা করেন, আরও চীনা বিনিয়োগকারী বাংলাদেশে আসবেন এবং স্থানীয় অংশীদারদের সঙ্গে একত্রে একটি বৃহত্তর বাজার উন্মুক্ত করবেন।”

সম্প্রতি বাংলাদেশি রোগী, ডাক্তার এবং ট্রাভেল এজেন্সিগুলোর প্রথম দলটি চীনের ইউনান প্রদেশের কুনমিংয়ে চিকিৎসা পরীক্ষা ও চিকিৎসা পর্যটন বাজারের সম্ভাবনা অন্বেষণ করতে গিয়েছিল।

ইউনূস বলেন, “বাংলাদেশ চীনের কাছ থেকে শিখতে এবং জনগণের উপকারে একটি উন্নত স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারে।”

এবছর চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৫০তম বার্ষিকী এবং এটিকে চীন ও বাংলাদেশ জনগণের সঙ্গে জনগণের বিনিময় বছর হিসেবেও মনোনীত করা হয়েছে।”

বাংলাদেশে সন্ন্যাসী জুয়ানজ্যাং-এর পদচিহ্ন রেখে যাওয়া এবং চীনে বৌদ্ধ ধর্ম প্রসারে পণ্ডিত অতিশ দীপঙ্করের অবদানের কথা উল্লেখ করে ইউনূস বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ আদান-প্রদানের দীর্ঘ ইতিহাস তুলে ধরেন, যা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের দ্রুত এবং টেকসই উন্নয়নের জন্য একটি দৃঢ় ভিত্তি স্থাপন করেছে।

ইউনূস বলেন, “চীনের সঙ্গে সহযোগিতার মাধ্যমে বাংলাদেশ উপকৃত হচ্ছে।”

তিনি আরো বলেন, “আমরা কেবল দ্রুত উন্নয়নশীল অর্থনীতিই তৈরি করতে পারি না, বরং একটি নতুন ধরনের অর্থনীতি তৈরি করতে পারি, যেখানে সকলের অংশগ্রহণ থাকবে। আমরা এটিকে পরবর্তী পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারি যেখানে আমাদের সহযোগিতা কেবল অর্থনীতির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না। এটি হবে সাংস্কৃতিক।”

বাংলাদেশ ও চীনের বিগত ৫০ বছরের সম্পর্ক চমৎকার ছিল উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “আগামী ৫০ বছর আরও সুদৃঢ় হবে।”

তিনি বলেন, “বৃহত্তর ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার জন্য উন্মুখ আমরা। এটাই দেখার অপেক্ষায় আছি।”

(ঢাকাটাইমস/২৯মার্চ/এফএ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
হত্যাচেষ্টা মামলায় অভিনেতা সিদ্দিক ৭ দিনের রিমান্ডে
আধুনিক বিমান বাহিনী গড়ে তুলতে প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে: প্রধান উপদেষ্টা
বগুড়ায় অ‌টো‌রিকশা চালক হত্যার দায়ে দুজ‌নের মৃত্যুদণ্ড
রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন 
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা