বাল্যবিয়ে ও যৌন হয়রানিকে শিক্ষার্থীদের ‘লাল কার্ড’

আমিনুল হক সাদী, কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
 | প্রকাশিত : ০৭ ডিসেম্বর ২০১৬, ২৩:৪১

কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলার সিংপুর ইউনিয়নের আফিল উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বাল্যবিয়ে ও যৌন হয়রানিকে আনুষ্ঠানিকভাবে লাল কার্ড দেখিয়েছে। একই সঙ্গে আঠারো বছর বয়সের আগে বিয়ে না করার শপথ নিয়েছে।

বুধবার উপজেলা গভর্নেন্স প্রজেক্ট স্থানীয় সরকার বিভাগের সহযোগিতায় বাল্যবিয়ে ও যৌন হয়রানি প্রতিরোধে আয়োজিত এক কর্মশালায় এ লাল কার্ড প্রদর্শন করে তারা। আফিল উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের হল রুমে অনুষ্ঠিত এ কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কিশোরগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) তরফদার মো: আক্তার জামীল।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নিকলী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কারার সাইফুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ডিস্ট্রিক্ট ফ্যাসিলিটেটর মনির মজুমদার। বিশেষ অতিথি ছিলেন নিকলী উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান রওশন আক্তার, সিংপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো: নুরুজ্জামান হাবিব, উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা শামসুন্নাহার তাসমিন, স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি জহিরুল ইসলাম প্রমুখ।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) প্রধান অতিথির বক্তৃতায় বলেন, বাল্যবিয়ে একটি মানবাধিকার লঙ্ঘন। এটা স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও নিরাপত্তার অধিকারকে খর্ব করে। একটি শিশুর বিয়ে হলে তা সুস্পষ্টভাবে কনভেনশন অন দ্য রাইটস অব দ্য চাইল্ড (সিআরসি) এবং দ্য কনভেনশন অব দ্য এলিমিনেশন অব অল ফর্মস অব ডিসক্রিমিনেশন এগেইনস্ট উইমেন (সিডও) এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।

তিনি বলেন, বাল্যবিয়ে থেকে মুক্তি পেতে হবে। তা না হলে অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত হতে থাকবে। যে সকল উন্নয়ন আমাদের হয়েছে, তা টেকসই হবে না। শিশু ও মাতৃ মৃত্যর প্রধান ও অন্যতম কারণ হলো এই বাল্যবিয়ে। এর ফলে শিশু ও মাতৃমৃত্যুর হার যেমন বৃদ্ধি পায় তেমনি অটিস্টিক, প্রতিবন্ধী শিশু জন্মসহ বিভিন্ন সামাজিক সমস্যা দেখা দেয়। বাড়ে পারিবারিক কলহ বিবাদ। দেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেও পড়ে নেতিবাচক প্রভাব। তাই যে কোনো মূল্যে এই সামাজিক ব্যধি থেকে আমাদের মুক্তি ছাড়া বিকল্প নেই। তবে শুধু সরকারের দিকে তাকিয়ে থাকলেও সমস্যার পুরোপুরি সমাধান হবে না। প্রয়োজন সবার সম্মিলিত প্রচেষ্ঠা। আমাদের সবাইকে মিলে নিশ্চিত করতে হবে, প্রত্যেক মেয়ে উ”” শিক্ষা অর্জন করবে। ছেলেরা মেয়েদের উত্যক্ত করার পরিবর্তে একটি সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টিতে অবদান রাখবে। শিক্ষকসহ এলাকার মুরুব্বীরা তাঁদের প্রভাব সর্বোচ্চভাবে ব্যবহার করবে বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে অভিভাবদেরক সচেতন করতে।

অনুষ্ঠানে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর হাতে পৌঁছে দেওয়া হয় একটি করে লাল কার্ড। শিক্ষার্থীরা তাদের হাতে থাকা লাল কার্ড প্রদর্শন করে শপথ নেয়, ১৮ বছর বয়সের আগে তারা বিয়ে করতে রাজি হবে না। পরে বাল্য বিয়ের কুফল নিয়ে শিক্ষার্থীরা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করে। (ঢাকাটাইমস/০৭ডিসেম্বর/প্রতিনিধি/ইএস)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :