বাংলাদেশের সামনে ৩৪২ রানের হিমালয়

ঘরের মাঠে তারা বরাবরই বাঘ। বাংলাদেশের বোলিংয়েও আগুণ ঝরলো না এদিন। কিউই ব্যাটসম্যানরা আরো ভয়ানক হয়ে উঠলেন। বিশেষ করে টম নাথান ও কলিন মুনরো। পঞ্চম উইকেট জুটিতে তুললেন ১৫৮ রান। নাথানের তুখোড় সেঞ্চুরি (১২১ বলে ১৩৭ রান), মুনরো ৬১ বলে ৮৭ । প্রথমে ব্যাট করে ৭ উইকেটে নিউজিল্যান্ড দাঁড় করালো ৩৪১ রানের হিমালয় সমান স্কোর। বাংলাদেশ কেন, নিউজিল্যান্ডের মাঠে এই হিমালয় ডিঙানো কার সাধ্য?
টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা মোটামুটি হয়েছিল স্বাগতিকদের। মোস্তাফিজ খুব একটা স্বস্তিতে রাখেননি প্রথম দিনের ব্যাটসম্যানদের।তারপরও তারা রান করে যাচ্ছিলেন দেখেশুনে।
মোস্তাফিজের হাত ধরেই উইকেটের দেখা পায় বাংলাদেশ।প্রায় ১১ মাস পর ওয়ানডে খেলতে নেমে শুরুতে সেই আগের ঝাঁঝিই দেখান কাটার বয়। দারুণ এক স্লোয়ারে তিনি ফিরিয়ে দেন দারুণ শুরু করা মার্টিন গাপটিলকে (১৫)।
এরপর বাংলাদেশের জন্য চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ানো কেন উইলিয়ামসকে ৩১ রানে বিদায় করেন তাসকিন আহমেদ। বেশ মেরে খেলছিলেন নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক।৩৬ বলে এই রান করে মোস্তাফিজের হাতে ধরা পড়েন কেন। বিদায় নেবার আগে নাথামের সঙ্গে গড়ে গেছেন ৪৮ রানের জুটি।
নাথানের সঙ্গে জুটি বেঁধে দলের রান ধেই ধেই করে বাড়িয়ে নিচ্ছিলেন ব্রুম। তবে সাকিবের স্পিনে ঘায়েল হয়ে ২২ রানে ফিরেন মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান ব্রুম। তার আগে টম নাথানের সঙ্গে গড়ে গেছেন ৫৫ রানের জুটি। এর কিছু পরেই ১২ রানে নিশামকে বিদায় করে বাংলাদেশ শিবিরে স্বস্তি আনেন সাকিব। কিন্তু সেই স্বস্তি দুশ্চিন্তায় রূপ দেন এক প্রান্তে দারুণ খেলতে থাকা নাথাম। সঙ্গে পান মুনরোকে। বাংলাদেশের বোলিং মোটেও বিভ্রান্ত করতে পারেনি এ জুটিকে।
১০০ বলে ১০০ রান পূরণ করেন নাথাম। ওয়ানডেতে এটা তার দুই নম্বর সেঞ্চুরি। নাথাম ও মুনরো মিলে দেশহারা করে দেন বাংলাদেশের বোলারদের। ১৫৮ রানের জুটি গড়ে বাংলাদেশকে কার্যত ম্যাচ থেকে ছিটকে দেন তারা। মুনরোকে সাকিব ফেরালেও ৬১ বলে ৮৭ রানের অসাধারণ ইনিংস ততক্ষণে খেলে ফেলেছেন তিনি। ওয়ানডে ক্রিকেটে এটা তার সর্বোচ্চ রানের ইনিংস।
শেষ দিকে নাথানকে বিদায় করেন মোস্তাফিজ। কিন্তু তার ১২১ বলে ১৩৭ রানের তুখোড় ইনিংসটি বাংলাদেশকে ‘শেষ’ করে দিয়েছে।
ওভার প্রতি রান খরচের বিষয়টা ধরলে এদিনও বাংলাদেশের সেরা বোলার মোস্তাফিজ। ৯ ওভারে ৫৩ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন তিনি। ওভার প্রতি রান দেন ৫.৮৮। সাকিব ৬৯ রানে ৩ উইকেট নিলেও ওভার প্রতি রান দেন ৬.৯০। তাসকিন ৭০ রান দিয়ে নেন ২ উইকেট।
প্রায় আড়াই বছর দেশের বাইরে প্রথম দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলতে নেমেছে বাংলাদেশ। দেশের মাটিতে টানা অসাধারণ খেলার পর এই সিরিজটা বেশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশের জন্য।
দীর্ঘ ইনজুরি কাটিয়ে এ ম্যাচে ফিরেন বোলিং প্রতিভা মোস্তাফিজুর রহমান। কাঁধের অপারেশনের পর প্রায় ৬ মাস মাঠের বাইরে ছিলেন কাটার বয়।
একাদশে রয়েছেন মোসাদ্দেক হোসেন, যিনি দেশের মাটিতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দারুণ সাহস দেখিয়েছিলেন। অভিষেক হয়নি অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজের এবং স্পিনার তানভীর হায়দারের।
বাংলাদেশ একাদশ : তামিম ইকবাল, ইমরুল কায়েস, সৌম্য সরকার, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মুশফিকুর রহীম, সাকিব আল হাসান, সাব্বির রহমান, মোসাদ্দেক হোসেন, মাশরাফি বিন মর্তুজা, তাসকিন আহমেদ ও মোস্তাফিজুর রহমান।
(ঢাকাটাইমস/২৬ ডিসেম্বর/ডিএইচ)

মন্তব্য করুন