বিশ্বব্যাংকের বিরুদ্ধে মামলা সম্ভব: প্রধানমন্ত্রী
পদ্মাসেতু প্রকল্পে দুর্নীতি চেষ্টার ভুয়া অভিযোগ তোলায় ক্ষতিগ্রস্ত যে কেউ বিশ্বব্যাংকের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারেন বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই অভিযোগ তুলে বাংলাদেশ এবং সরকারের বদনাম করায় আন্তর্জাতিক সংস্থাটির বিরুদ্ধে মামলা করার দাবির মুখে এই কথা বললেন তিনি।
জার্মানির মিউনিখে জার্মান আওয়ামী লীগের সংবর্ধনায় বক্তব্য দেওয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
২০১০ সালে দেশের সবচেয়ে বড় সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলে বিশ্বব্যাংক। সরকার নাকচ করলেও তিন বছরের টানাপড়েনের পর ২০১২ সালের ৩০ জুন ১২০ কোটি ডলারের ঋণচুক্তি বাতিল করে সরকার। এরপর এই প্রকল্প থেকে সরে যায় জাইকা, এডিবি ও আইডিবি। এরপর সরকার নিজ অর্থায়নে সেতুর কাজ শুরু করে।
কিন্তু বিশ্বব্যাংকের এই টালবাহানার কারণে সেতুর কাজ পিছিয়েছে প্রায় পাঁচ বছর। ২০১২ সালের শেষ দিকে সেতু চালুর প্রাথমিক পরিকল্পনা থাকলেও এখন সেটা নির্ধারণ হয়েছে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে। আর এই বিলম্বের কারণে সেতুর নির্মাণ ব্যয়ও বেড়েছে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে।
আবার বিশ্বব্যাংকের অভিযোগের কারণে বাংলাদেশ সরকার, সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন, সচিব মোশাররফ হোসেনকে হেনস্থা হতে হয়েছে। তবে সম্প্রতি কানাডার একটি আদালত তার রায়ে বলেছে, বিশ্বব্যাংকের অভিযোগ ছিল গালগপ্প। গুজবের ওপর ভিত্তি করে এই মামলা করা হয়েছে। আর যাদের কথার ওপর ভিত্তি করে মামলা হয়েছে তাদের একটি পক্ষ নিজেই দুর্নীতিবাজ এবং তারা কাজ না পেয়ে অভিযোগ তুলেছিল।
এই রায় প্রকাশের পর বাংলাদেশে তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়। বিশ্বব্যাংকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার অভিযোগ উঠে। জাতীয় সংসদে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানিয়েছেন, সংস্থাটির বিরুদ্ধে দেশের ভেতরে এবং বাইরে দুই জায়গাতেই ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব। তবে পরে তিনি এও বলেছেন, সরকার এই সংস্থাটির বিরুদ্ধে মামলা করতে পারবে না। কারণ, তাদেরকে তাদের কর্মকাণ্ডের জন্য দায়মুক্তি দেয়া আছে।
এর মধ্যে প্রধানমন্ত্রী জার্মানিতে বলেন, ‘মিথ্যা অভিযোগ এনে মামলায় জড়ানোর চেষ্টা করায় ক্ষতিগ্রস্তরা বিশ্বব্যাংকের বিরুদ্ধে অবশ্যই মামলা করতে পারেন।’
বিশ্বব্যাংকের অভিযোগের কারণে সাত বছরের হেনস্থার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দীর্ঘ যন্ত্রণার পর কানাডিয়ান আদালতের রায়ে আমরা ন্যায় বিচার লাভ করেছি।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলীর সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ইউরোপিয়ান আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক অনীল দাসগুপ্ত ও এমএ গনি চৌধুরী, জার্মান আওয়ামী লীগ সভাপতি বশিরুল হক সাবুসহ প্রমুখ।(ঢাকাটাইমস/১৮ফেব্রুয়ারি/সিকে/ডব্লিউবি)