কুড়িগ্রামে বাঁধ ভেঙে ৫০ গ্রাম প্লাবিত

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ১৪ জুলাই ২০১৭, ১১:৩১ | প্রকাশিত : ১৪ জুলাই ২০১৭, ০৮:৪৯

কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় প্লাবিত হয়েছে নতুন নতুন এলাকা। এসব এলাকার পানিবন্দী প্রায় দুই লক্ষাধিক মানুষ মানবেতর জীবন যাপন করছে।

এছাড়া বুধবার বিকালে বন্যার পানিতে ডুবে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। তারা চিলমারী উপজেলার শাখাহাতি গ্রামের সাইদুল ইসলামের মেয়ে লাইলী বেগম এবং সদর উপজেলার সদর উপজেলার খামার হলোখানা গ্রামের পনির উদ্দিনের ছেলে হামিদুল হক। বন্যার্তদের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে স্বাস্থ্য বিভাগের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করে জেলায় ৮৭টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে।

এখনো চিলমারী পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি এবং সেতু পয়েন্টে ধরলার পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

অন্যদিকে ব্রহ্মপুত্র নদের প্রবল স্রোতে চিলমারী উপজেলার কাঁচকোলে ডানতীর রক্ষা প্রকল্পের ৫০ মিটার বাঁধ ও রৌমারী উপজেলার যাদুর চরে কত্তিমারী বাজার রক্ষা বাঁধ ভেঙ্গে নতুন করে ৫০ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

জেলার নয় উপজেলার মধ্যে সাত উপজেলার ৪২ ইউনিয়নের ৫শ গ্রামের প্রায় দুই লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। অনেক পরিবার বাড়ি-ঘর ছেড়ে উঁচু জায়গায় আশ্রয় নিলেও এসব এলাকায় খাদ্য ও বিশুদ্ধ খাবার পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। ১৫০টি মতো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি ওঠায় এসব প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

জেলায় এক হাজার হেক্টর জমির আউশ, পাট, সবজিসহ বিভিন্ন ফসল বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে।

সরকারিভাবে স্বল্প পরিসরে ত্রাণ তৎপরতা শুরু হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। কিন্তু এখন পর্যন্ত বেসরকারি কোনো ত্রাণ তৎপরতা চোখে পড়েনি।

সদর উপজেলার ব্রহ্মপুত্রের অববাহিকার চর ভগবতিরপুরের আমজাদ আলী জানান, ‘ছয় দিন ধরে পানিবন্দী অবস্থায় বউ-বাচ্চা নিয়ে নৌকায় জীবন যাপন করছি। বাড়ি-ঘর, গরু-ছাগল ছেড়ে কোথাও যাব সে জায়গাও নাই। এমন অবস্থায় ঘরে খাবারও শেষ হয়ে গেছে। চেয়ারম্যান মেম্বাররা ১০ কেজি করে চাল দিচ্ছে তাও সবাই পাচ্ছে না।’

একই চরের আমেনা বেগম জানান, ‘ঘরের ভেতর চৌকি ভাসিয়ে কোনোরকমে এক বেলা রান্না করে ছেলে-মেয়েদের খাওয়াচ্ছি। খুব কষ্টে দিন যাচ্ছে আমাদের।’

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আমান উদ্দিন মঞ্জু জানান, ‘আমার উপজেলার ৮ ইউনিয়নের মধ্যে ছয়টি ইউনিয়নের প্রায় ৬০ হাজার মানুষ বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে। সরকারিভাবে ২০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ পেয়েছি যা বিতরণ অব্যাহত আছে।’

কুড়িগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. এসএম আমিনুল ইসলাম জানান, চরাঞ্চলে নয়টি কমিউনিটি ক্লিনিক তলিয়ে যাওয়ায় পার্শ্ববর্তী উঁচু জায়গায় কার্যক্রম চালু রাখা হয়েছে। জেলার বন্যা কবলিত এলাকাগুলোতে ৮৭টি মেডিকেল টিম কাজ করছে। স্বাস্থ্য বিভাগের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।

কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক আবু ছালেহ মোহাম্মদ ফেরদৌস খান জানান, জেলার নয় উপজেলার মধ্যে বন্যা কবলিত সাত উপজেলায় বন্যার্ত মানুষের মাঝে এ পর্যন্ত তিনশ মেট্রিক টন চাল, আট লাখ টাকা ও দুই হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। আরও নতুন করে একশ মেট্রিক টন চাল, দুই হাজার শুকনো খাবারের প্যাকেট ও তিন লাখ টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে যা বিতরণের কার্যক্রম চলছে।

ঢাকাটাইমস/১৪জুলাই/প্রতিনিধি/এমআর

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

পাটগ্রাম সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নিহত

ঘোড়াঘাটে দুই ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে চালক-হেলপার নিহত

শ্রীপুরে ফ্ল্যাট থেকে স্বামী-স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার

দিনাজপুরে পেট্রল পাম্পে আগুন, জনতার হামলায় আহত ফায়ারের দুই কর্মীসহ ৪

চাঁদপুরে জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি গ্রেপ্তার, আদালতে সোপর্দ

টেকনাফে টমটমচালক হত্যার রহস্য উন্মোচন, মূল হোতাসহ গ্রেপ্তার ৬

সাঁথিয়ায় অগ্রণী ব্যাংকের ভল্ট থেকে ১০ কোটি টাকা আত্মসাৎ, গ্রেপ্তার তিন কর্মকর্তা

৬ লাখ মেট্রিক টন ইলিশ উৎপাদনের সম্ভাবনা দেখছেন চাঁদপুর জেলা মৎস কর্মকর্তা

হাতিয়ায় ডুবে যাওয়া জাহাজের ১১ নাবিক উদ্ধার, একজন নিখোঁজ

কুমিল্লায় পৃথক ঘটনায় পানিতে ডুবে মারা গেল ৪ শিশু

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :