ময়মনসিংহ শহরে আতঙ্কের নাম বেদেনি দল

মনোনেশ দাস, ময়মনসিংহ ব্যুরো প্রধান
 | প্রকাশিত : ১৮ জুলাই ২০১৭, ০৮:১৪

আপনি রিকশায় যাচ্ছেন, আপনার গতি রোধ করে দাঁড়াবে একদল নারী। আপনি হেঁটে যাচ্ছেন, আপনার সামনে এসে দাঁড়াবে তারা। তাদের কারো হাতে ছোট বাক্স, যার ভেতর নানা ধরনের সাপ। কারো হাতে তাবিজ-কবজ। আপনি তাদের চাঁদা না দিয়ে পার পাবেন না।

ময়মনসিংহ শহরে পথচারী-দোকানিদের জন্য এখন এক যন্ত্রণার নাম হয়ে দাঁড়িয়েছে এই বেদেনির দল। বলা যায় তাদের দৌরাত্ম্যে একরকম অতিষ্ঠ নগরবাসী।

গত দুই দিন ধরে ময়মনসিংহ শহরের অলিগলিতে বেদেনিদের বহর দেখা যাচ্ছে । দলবদ্ধ বেদিনিরা কাউকে দেখলেই বলছে, ‘আমাদের ঘৃণা করিস না। কিছু টাকা দে। সাপের জন্য খাবার কিনব। তুই অনেক সুখ পাবি, তোর কল্যাণ হবে।’

এসব বলে মানুষকে টাকা দিতে বাধ্য করছে বেদেনীরা। মানুষের পথ আগলে হরহামেশাই অলি-গলিতে এমন কথায় চাঁদা তুলছে বেদে তরুণীরা।

শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে ছোট আকারের সাপের বাক্স মেলে ধরে হঠাৎ গতিরোধ করায় আতঙ্কিত হয়ে পড়ে পথচারীরা। বাক্সটি সামনে ধরে রেখে টাকা চায়। না দেওয়া পর্যন্ত পথ আগলে রাখে বেদেনিরা। অল্প টাকায় মানে না তারা।

অনেক সময় বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পথচারীদের অশালীন গালিও দিচ্ছে এরা । এমন পরিস্থিতিতে বিব্রতকর অবস্থায় পড়েন ব্যস্ত পথচারীরা।

কিছুদিন আগেও এরা গ্রামাঞ্চলে গিয়ে বাতব্যথায় সিঙ্গা লাগানো, ‘দাঁতের পোকা’ তোলা, সাপে কাটা রোগীর চিকিৎসা ও সাপ খেলা দেখানো, তাবিজ-কবজ বিক্রি, ঝাঁড়- ফোক দিয়ে আয় করত । সাপের খেলা দেখিয়ে আর নানা কথায় ওষুধ বিক্রি করে চলত ওদের সংসার।

কিন্তু এখন কায়িক শ্রম অবজ্ঞা করে সহজ রাস্তায় আয়ের লোভে এরা ‘চাঁদাবাজি’ পেশা বেছে নিয়েছে। মানুষকে সাপের ভয় দেখিয়ে পথ আগলে চাঁদা অদায় করছে দাপটের সঙ্গে। বিপজ্জনক সাপ দেখে এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থার নীরবতায় মানুষও দিশেহারা। বেদেনিদের ওপর অতিষ্ঠ হয়ে মারধরের ঘটনাও ঘটছে অনেক সময়।

বেদেনিদের এই দৌরাত্ম্য প্রতিরোধে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা কোনো ভূমিকা নিচ্ছে না বলে সাধারণ মানুষও কিছু বলতে সাহস পায় না। বাধ্য হয়ে বেদেনিদের চাহিদামতো টাকা দিতে বাধ্য হন পথচারীরা।

বেদেনীদের ভাষায়, তাদের ছেলেমেয়ে আছে, সংসার আছে। এটি করেই চলে তাদের সংসার।

মানুষের পথ আগলে চাঁদা আদায়ের ব্যাপারে তারা বলে, কাজটা খারাপ ঠিকই, কিন্তু আর কাম তো পাই না। এটি ছাড়া জীবনে কিছু শিখিওনি।

এদের কবলে পড়া ভুক্তভোগীরা জানান, সকাল, দুপুর, বিকাল, সন্ধ্যা, রাত- যখন পাচ্ছে চলার পথে বেদেনিরা পথ আগলে ধরছে। কম টাকা দিলে নেয় না। এটা খুবই বিরক্তিকর। বেদেনিদেরিএই কবল থেকে মুক্তি চান তারা।

(ঢাকাটাইমস/১৮জুলাই/মোআ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :