এ কেমন নির্মমতা!

রাজবাড়ী প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ১৯:০৫

রাজবাড়ী সদর উপজেলার খানখানাপুর ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন রাস্তার পাশ থেকে স্থানীয়রা গত শুক্রবার রাতে প্রায় ৮৫ বছর বয়সী বস্তাবন্দি এক বৃদ্ধাকে জীবিত উদ্ধার করেছে। পরে গত শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে খানাখানাপুরের মিয়াবাড়ি গ্রামের শরীফুল ইসলাম ও মির্জা তানজির নামের দুই যুবক তাকে গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এনে ভর্তি করেন।

যুবকরা জানান, অজ্ঞাত ওই বৃদ্ধাকে রাজবাড়ী সদর উপজেলার খানখানাপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের বারান্দা পাশের রাস্তায় ওই দিন সন্ধ্যার পর কে বা কারা তাকে বস্তাবন্দি করে ফেলে রেখে যায়। স্থানীয়দের ধারণা, বৃদ্ধার পরিবারের নিষ্ঠুর কেউই তাকে এখানে ফেলে রেখে যেতে পারে।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে রাখতে অনীহা প্রকাশ করায় ওই বৃদ্ধা এখন খানাখানাপুরের মিয়াবাড়ি গ্রামের শরীফুল ইসলামের নিজ বাড়িতে আছেন। কেউ ওই বৃদ্ধার পরিচয় জানলে শরীফুল ইসলামের মোবাইলে [০১৭৫৮৪৮৫৭১৪] যোগাযোগের অনুরোধ করা হয়েছে।

এর আগে গত শনিবার গোয়ালন্দ উপজেলা হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায় অজ্ঞাত ওই বৃদ্ধা হাসপাতালের মহিলা ওয়ার্ডের বারান্দার এক কোনে ফেলা বিছানায় পড়ে আছেন। তাকে ঘিরে উৎসুক নারী-পুরুষের বেশ জটলা।

তার কোনো নাম-পরিচয় কেউ জানেন না। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে জীর্ণশীর্ণ শরীরের ওই বৃদ্ধার সাথে কথা বলার চেষ্টা করা হলেও তিনি কোনো কথা বলতে পারেননি।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. শাহিদা পারভীন ও নার্সিং সুপারভাইজার কৃষ্ণা মন্ডল জানান, গত শুক্রবার রাতে শরিফুল ও মীর্জা তানভীর নামের দুই যুবকসহ কয়েকজন যুবক ওই বৃদ্ধাকে হাসপাতালে এনে ভর্তি করে। তার শারীরিক অবস্থা খুবই দুর্বল। শরীরের বিভিন্ন স্থানে ক্ষতচিহ্ন ও ঘা রয়েছে। তার উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন।

হাসপাতালের রেজিস্ট্রার খাতায় থাকা মোবাইল নম্বরে শরিফুল ও তানভীরের সাথে যোগাযোগা করা হলে তারা জানান, আজাদ মাতুব্বর নামে এক ব্যক্তি প্রথমে ওই বৃদ্ধাকে বস্তাবন্দি অবস্থায় খানখানাপুর হাই স্কুলের সামনে বটতলা এলাকায় সড়কের পাশে পড়ে থাকতে দেখেন। বস্তার মধ্যে নড়াচড়া করতে দেখে বস্তার মুখ খুলে তাকে দেখতে পেয়ে আমরা সবাই মিলে হাসপাতালে ভর্তি করি।

হাসপাতালের পরিচ্ছন্ন কর্মী মনোয়ারা বেগম ও গোলাপী বলেন, এই বৃদ্ধা প্রসাব-পায়খানা করে তার সারা শরীর নোংরা করে ফেলেছিলেন। আমরা তাকে গোসল করিয়ে পরিষ্কার করেছি। তাকে বহু প্রশ্ন করলেও কোনো কথা বলছেন না। চোখে মুখে তার অনেক কষ্ট ফুটে উঠেছে। কেউ কিছু দিলেও খাচ্ছেন না।

গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আজিজুর রহমান খান জানান, ওই বৃদ্ধার আরও উন্নত চিকিৎসা দরকার, যা ব্যয়বহুল। এজন্য আমরা তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সেখানে সমাজ সেবা অধিদপ্তর থেকে তার চিকিৎসার বিষয়ে সহযোগিতা পাওয়া যাবে।

এ প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, ওই বৃদ্ধা নিশ্চয়ই কোনো পরিবারের সদস্য। তার প্রতি এমন নিষ্ঠুর আচরণ সবাইকে হতবাক করেছে।

(ঢাকাটাইমস/১১সেপ্টেম্বর/প্রতিনিধি/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :