বাদুড় কেন রাতের আঁধারে চলে?

আবদুল গাফফার রনি, প্রদায়ক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ০৮ মার্চ ২০১৭, ১৬:৫৭
অ- অ+

পৃথিবীর আজব প্রাণীদের মধ্যে বাদুড় একটা। ডানা আছে আকাশে উড়তেও পারে, তবু সে পাখি নয়, প্রাণী! মুখটা শিয়ালের মতো, খরগোশের মতো বড় বড় দুটো কান, ছাতার মতো অদ্ভুত দুটি পাখা। আজব হওয়ার জন্য এগুলোই যথেষ্ট ছিল। কিন্তু বাদুড়ের সবচেয়ে আজব বিষয় এটা নয়। সবচেয়ে আজব ব্যাপার বাদুড় দিনে চলাফেরা করতে পারে না। বাদুড় রাতে আঁধারে চলে।

বাদুড়ের বড় বড় দুটি চোখ থাকলেও সেগুলো দিয়ে তারা দেখতে পায় না। বাদুড়কে তাই দেখার কাজটা করতে হয় কান দিয়েই। যে চোখে দেখে না তার কাছে রাত আর দিন তো সমান কথা। দিনের বেলা পথ চলতে বাদুড়ের সমস্যা হওয়ার কথা নয়, কিন্তু বাদুড়ের সমস্যা হয়। বাদুড় আসলে পথ চলে শব্দ তরঙ্গের সাহায্যে। বাদুড় যখন পথ চলে তখন সে একধরনের শব্দ তরঙ্গ বাতাসে ছড়িয়ে দেয়। সেই শব্দ ঘরবাড়ি, গাছপালা, পাহাড়-পর্বত কিংবা বড় কোনো বাধার প্রতিফলিত হয়ে আবার ফিরে আসে বাদুড়ের কানে। বাদুড়ের মস্তিষ্ক প্রতিফলিত শব্দ থেকে বুঝতে পারে সামনের বাধাটা কত দূরে।

শব্দ ছুঁড়ে দেওয়ার কতক্ষণ পর সেটা আবার কানে ফিরে আসে তার ওপর নির্ভর করেই বাদুড় বাধা ও খোলা পথের নিশানা ঠিক করতে পারে। বাদুড়ের মস্তিষ্ক এখানে সূক্ষ্ম কম্পিউটারের মতো কাজ করে। কারণ সামনের বাধার দূরত্ব কত সেটা বুঝতে অবশ্যই শব্দের বেগ ব্যবহার করতে হয়। বাদুড়ের মস্তিষ্ক নিশ্চয়ই সেটা জানে। হিসাবটা মানুষের করে না জানলেও তার নিজের মতো করে হলেও জানে। জানে, মুহূর্তের মধ্যে শব্দের বেগ, দূরত্ব আর সময়ের মধ্যে সঠিক অঙ্ক কষে সঠিক নিশানা ঠিক করতে।

বাদুড় মূলত ফলভোজি। পেয়ারা, লিচু, জামরুল ইত্যাদি ফলের ঠিকানা খুঁজে বের করতে তারা শব্দ তরঙ্গের সঙ্গে সঙ্গে নাকের গন্ধ শক্তির ওপরও নির্ভর করে।

দিনের বেলায় মানুষসহ পৃথিবীর অধিকাংশ প্রাণীই জেগে থাকে। তাদের দৈনন্দিন কর্মকান্ডের দরুণ কোটি কোটি শব্দ বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে। দিবাচর প্রাণীদের কোলাহলে বাদুড়ের পথচলার সেই বিশেষ শব্দ তরঙ্গ হারিয়ে যায়। তাই কোটি কোটি শব্দ তরঙ্গের ভিড়ে নিজের শব্দ তরঙ্গটি খুঁজে খুঁজে পায় না বলেই বাদুড় দিনের বেলা বাসা ছেড়ে বের হয় না।

বাদুড় পথচলার জন্য যে শব্দ তরঙ্গ বাতাসে ছুঁড়ে মারে আমরা শুনতে পাই না। রাতে পেয়ারা বা লিচু গাছে আক্রমণ করলে হয়তো বাদুড়ের কিচিরমিচির শব্দ শোনা যায়। কিন্তু সেটা ওদের পথ চলার শব্দ নয়, ওটা ওদের সাধারণ ডাক। পথচলা ও খাদ্য খোঁজার জন্য বাদুড় ইনফ্রাসনিক কিংবা আল্ট্রাসনিক শব্দ ব্যবহার করে। এসব শব্দ আমাদের কান ধরতে পারে না। তাই সেসব শব্দ মানুষের শুনতে পাওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।

(ঢাকাটাইমস/৮মার্চ/এজেড)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
সময় মাত্র দুই সপ্তাহ!
ইরানের মিসাইলগুলো বিশ্বের সম্মানিতদের আনন্দিত করেছে: খামেনি
ভূয়া তথ্য প্রচারে ইরানের টার্গেট লিস্টে ইসরায়েলের চ্যানেল-১৪, যেকোন সময় হামলা
ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েল পৌঁছাতে কত সময় লাগে?
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা