স্কুল মাঠে সড়ক নির্মাণ সামগ্রী, স্বাস্থ্যঝুঁকিতে শিক্ষার্থীরা

আজহারুল হক, ময়মনসিংহ
  প্রকাশিত : ২২ নভেম্বর ২০১৯, ১৪:৫৭
অ- অ+

ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার আউলাজুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের খেলার মাঠে রাস্তার নির্মাণসামগ্রী ফেলে রাখা হয়েছে। পিচ গলানোর সময় কালো ধোঁয়ায় বিদ্যালয়ের শিশু শিক্ষার্থীদের শ্বাসকষ্ট দেখা দিচ্ছে। ফলে লেখাপড়া বিঘ্নিত হচ্ছে। এতে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন শিক্ষক ও শিশু শিক্ষার্থীরা। শিক্ষক শিক্ষার্থী ও এলাকার লোকজন সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে অসংখ্যবার নির্মাণসামগ্রী সরিয়ে নিতে বললেও ঠিকাদার তা আমলে নিচ্ছেন না।

বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও এলাকাবাসী জানান, প্রায় এক মাস ধরে বিদ্যালয় মাঠে নির্মাণসামগ্রী ফেলে রাখা হয়েছে। যে সড়ক সংস্কারের মালামাল রাখা তা এখান থেকে দুই কিলোমিটার দূরে। এই অবস্থায় বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কমে যাচ্ছে।

উপজেলার মশাখালীমুখী সড়কের পাশে বিদ্যালয়টি অবস্থিত। কিন্তু এলজিইডির উদ্যোগে এক মাস আগে এই বিদ্যালয় থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে বীরখারুয়া এলাকার একটি সড়কের সংস্কারকাজ শুরু হয়েছে। এই সংস্কারকাজের মিকচার মেশিনসহ নির্মাণসামগ্রী বিদ্যালয়ের মাঠে ফেলে রাখা হয়েছে।

বুধবার সরেজমিনে দেখা গেছে, মাঠে পিচ গলানো হচ্ছে। পিচের কালো ধোঁয়ায় আকাশ ছেয়ে গেছে। শিক্ষার্থীরা ধোঁয়ার মধ্যেই ক্লাস করছে। চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী এমজে নিগার, মারিয়া, সুচনা, সিজান, মাছুম ও সানি জানায়, পিচ গলানোর সময় কালো ধোঁয়ায় দম বন্ধ হয়ে আসে। তাদের খেলাধুলা বন্ধ হয়ে গেছে। ঠিকমতো চলাচলও করতে পারে না তারা। অনেক সময় পা ফসকে পাথরের উপর পড়ে ব্যথা পায় তারা। তৃতীয় শ্রেণির মাহমুদুল হাসান, মানছুরা, মনিরা, সারা ও নীরব জানায়, গন্ধে ক্লাসে বসা যায় না। তারা বলে, ‘ধোঁয়ায় শ্বাসকষ্ট হচ্ছে, তাই ক্লাস না করেই বাড়ি ফিরে যাচ্ছি।’

স্কুলের দপ্তরি সুমন মিয়া জানান, যেদিন পাথর রাখা হয়, সেদিন স্কুল বন্ধ ছিল। খবর পেয়ে ছুটে এসে নিষেধ করলেও তারা শোনেনি।

এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জান্নাতুল ফেরদৌস, আল মামুন ও সায়মা ঢাকা টাইমসকে জানান, বিদ্যালয়ের নির্মাণসামগ্রী রাখার জন্য অনুমতি নেওয়া হয়নি। প্রায় পুরো মাঠে সামগ্রী। পিচ গলানোর কালো ধোঁয়ায় বিদ্যালয়ে টিকে থাকা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে।

প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) আব্দুল কাদির ঢাকা টাইমসকে বলেন, মাঠেই পিচ গলানো হচ্ছে। আমরা বাধা দিলেও আমাদের কথা মানছে না। আমাদের একটি কক্ষ দখল করে নিয়েছে নির্মাণশ্রমিকেরা। তাদের ব্যবহৃত কাপড়-চোপড় ও মালামাল রাখার কারণে ওই কক্ষ নোংরা করে রাখায় একদিন ব্যবহার করতে পারিনি।

নির্মাণকাজ দেখার দায়িত্বে থাকা ঠিকাদারের ব্যবস্থাপক ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের একটু অসুবিধা হচ্ছে বুঝতে পারছি। তাই দ্রুত কাজ শেষ করার চেষ্টা করছি।’

তবে এ ব্যাপারে একাধিকবার চেষ্টা করেও ঠিকাদার বাপ্পি মিয়ার সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) সালমা আক্তার বলেন, এই বিষয়ে আমি অবগত ছিলাম না। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মাহবুব উর রহমান ঢাকা টাইমসকে বলেন, এই বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আমার সাথে কথা বললে খোঁজ নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।

(ঢাকাটাইমস/২২নভেম্বর/জেবি)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
‘অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হলে দাঁতভাঙা জবাব’ 
রাঙ্গাবালীতে নিখোঁজের ১১ দিন পর ঝোপঝাড়ে থেকে বৃদ্ধের কঙ্কাল উদ্ধার
ড. ইউনূস ৩০ জুনের পর একদিনও দায়িত্বে থাকতে চান না: প্রেস সচিব
আ.লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধের পর দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা চলছে: প্রধান উপদেষ্টা
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা