কয়েক হাজার বিএনপি নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে: ফখরুল

গত দশ বছরে বিএনপির কয়েক হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, গত দশ বছর ধরে বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর অত্যাচার চলছে। কয়েক হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। লক্ষাধিক মামলায় ২৬ লাখ আসামি করা হয়েছে।
শরিবার দুপুরে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিতে ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক গোলটেবিলে যোগ দিয়ে একথা বলেন বিএনপি মহাসচিব। ২০ দলীয় জোটের শরিক ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি) গোলটেবিল বৈঠকটির আয়োজন করে।
কোনো গণতান্ত্রিক আন্দোলনে রাজনৈতিক দলকে এত বড় ত্যাগ শিকার করতে হয় সেটা তার জানা নেই মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘ওপরের নেতৃত্বের দিকে না তাকিয়ে থেকে পাড়া-মহল্লায় ছড়িয়ে পড়তে হবে।
‘প্রেসক্লাবের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত (এসি) কক্ষে বক্তব্য রেখে হবে না। গ্রামে-গ্রামে, মহল্লায়-মহল্লায় যান। কথাগুলো মানুষকে বলেন। শুধু ওপরের নেতৃত্বের দিকে তাকিয়ে থাকলে হবে না।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপির নেত্রী লড়াই করছেন। বিএনপি সর্বশক্তি দিয়ে চেষ্টা করছে। কথায় কথায় বিএনপিকে দায়ী করলে হবে না। এখন সময় হচ্ছে ঐক্যের। গোটা জাতিকে এই একনায়কতন্ত্রের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে।’
৩০ ডিসেম্বরের জাতীয় নির্বাচন নাটক ও ছেলেখেলা ছিল উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘ওই নির্বাচন বাতিল করে নিরপেক্ষ সরকার ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের অধীনে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দিতে হবে। নতুন নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করুন, এটা এখন দেশের মানুষের একমাত্র দাবি।’
মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পুরোপুরি বিলুপ্ত হয়ে গেছে দাবি করে ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগের নেতারা প্রায়ই মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলেন। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাটা কী ছিল? মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় তো এটা ছিল না যে, দেশের মানুষের অধিকার হরণ করে নেবেন।’
‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় তো এটা ছিল না যে, ৩০ ডিসেম্বরের ভোটের আগের রাতে ভোট নিয়ে চলে যাবেন। এটা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় তো ছিল না। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছিল এই দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার, কথা বলার অধিকার রক্ষা করা হবে। সেই চেতনা আজকে পুরোপুরি বিলুপ্ত হয়ে গেছে।’
খালেদা জিয়ার অসুস্থতার প্রসঙ্গ টেনে ফখরুল বলেন, ‘ওনার স্বাস্থ্যের অবস্থা এত ভয়ংকর, এত ভয়াবহ, এই মুহূর্তে তাকে বের করে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা দরকার। অথচ তাদের সরকারি কর্মকর্তা, পিজি (বিএসএমএমইউ) পরিচালক বলছেন, তিনি ভালো আছেন, আগের চেয়ে এখন ভালো।’
‘৫ ডিসেম্বরের মধ্যে আদালত রিপোর্ট চেয়েছেন, এইদিন সারাদেশের মানুষ প্রত্যাশা করবে তারা সত্য কথাটা বলবেন।’
এনপিপি সভাপতি ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফার সঞ্চালনায় গোলটেবিল আলোচনায় আরও বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, বিকল্প ধারার (একাংশের) সভাপতি নুরুল আমীন বেপারী, বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস,বাংলাদেশ লেবার পার্টির (একাংশ) চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান প্রমুখ।
(ঢাকাটাইমস/৩০নভেম্বর/বিইউ/ডিএম)

মন্তব্য করুন