হাড়কাঁপানো শীতে বিপর্যস্ত উত্তরের জনপদ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ২০ ডিসেম্বর ২০১৯, ১০:১৪| আপডেট : ২০ ডিসেম্বর ২০১৯, ১১:৪১
অ- অ+

তীব্র শীত আর ঘন কুয়াশায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে রংপুর, দিনাজপুর ও পঞ্চগড়সহ উত্তরের জনপদের মানুষের জীবনযাত্রা। ঘন কুয়াশার আবরণে সূর্য ঢাকা পড়ে আছে দিনভর। বইছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহও। দিনভর দেখা মিলছে না সূর্যের। রাত নামতেই বেড়ে যাচ্ছে হিমেল বাতাসের গতি। শীতের তীব্রতায় রাস্তাঘাটে কমে গেছে পথচারীর আনাগোনা। সব মিলিয়ে তীব্র শীতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে এই জনপদের মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা।

দিনাজপুর আঞ্চলিক আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, দিনাজপুরে কয়েকদিন ১২ থেকে ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে তাপমাত্রা উঠানামা করলেও দুই দিন আগে হঠাৎ করেই কমতে শুরু করে তাপমাত্রা। এখন তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির ঘরে নেমেছে। এই জেলায় বইতে শুরু করেছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ।

কয়েকদিন ধরে চলা তীব্র শীতের কারণে প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে কেউ বের হচ্ছে না। খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত থেকে বাঁচার চেষ্টা করছে ছিন্নমূল মানুষ। তীব্র শীতের কারণে জেলায় দেখা দিয়েছে শীতজনিত বিভিন্ন রোগবালাই। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে আলুসহ বিভিন্ন ফসল।

উত্তরাঞ্চলের সীমান্তঘেঁষা জেলা কুড়িগ্রামের মানুষও তীব্র শীতে কাঁপছে। দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ঘন কুয়াশায় ঢেকে যাচ্ছে গোটা জনপদ। গরম কাপড়ের অভাবে শীতকষ্টে ভুগতে শুরু করেছে শিশু, বৃদ্ধসহ নিম্ন আয়ের কর্মজীবী মানুষ। কনকনে ঠান্ডার সঙ্গে হিমেল হাওয়া ঠান্ডার মাত্রা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার চর ভেলাকোপা এলাকার বাসিন্দা রফিক জানান, ‘আমরা গরিব, কাজ করে খাই। কিন্তু খুব ঠান্ডা পড়ছে। সঙ্গে বাতাস কাজে যেতে পারছি না। গরম কাপড় নাই। অনেক কষ্ট করতে হচ্ছে।’

চিলমারী উপজেলার অষ্টমীর চরের এক নারী জানান, কাপড় কেনার কোনো টাকা-পয়সা নাই। নিজের কাপড় না থাকলেও ছেলেমেয়েদের কাপড় তো কিনে দেয়া দরকার। কিন্তু হাতে কোনো টাকা নাই। কাজকামও চলে না।

শীত ও কুয়াশার সঙ্গে হিমেল বাতাস যুক্ত হওয়ায় লালমনিরহাটে দুর্ভোগ বেড়েছে অসহায় ও নিম্ন আয়ের মানুষের। ঠান্ডার প্রকোপ উপেক্ষা করে বাইরে বেড়ানোই তাদের জন্য কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। জীবিকার প্রয়োজনে খেটে খাওয়া দিনমজুররা কাজের সন্ধানে গেলেও অনেকেই বাড়িতে ফিরে আসছেন খালি হাতে। হাসপাতালে বাড়ছে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা।

হঠাৎ করে শীতের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছে রংপুরের নিম্নআয়ের মানুষজন। গতকাল এই জেলায় সর্বনিম্ন ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। এছাড়া জেলায় বইছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। কুয়াশার চাদরে ঢেকে আছে গোটা জনপদ। ঠান্ডার কারণে শিশু, বৃদ্ধ ও নিম্ন আয়ের শ্রমজীবী মানুষসহ গবাদিপশুও দুর্ভোগে পড়েছে।

তীব্র শীতে পঞ্চগড়ে বিপর্যস্ত ছিন্নমূল ও খেটে খাওয়া মানুষের জীবন। যানবাহনগুলো হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে। হাড়কাঁপানো শীতে কাঁপছে চুয়াডাঙ্গার মানুষ। গত দুইদিন মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত রয়েছে এ জেলায়। দিন দিন তাপমাত্রা হ্রাস পাওয়ায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে এখানকার জনজীবন। গত দুই দিনের মতো আজও চুয়াডাঙ্গা জেলায় ৮.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।

হিমেল বাতাস ও প্রচণ্ড শীতে কাঁপছে উত্তরের আরেক জেলা গাইবান্ধা। শীতের কারণে জেলার চরাঞ্চলগুলোর মানুষ ও গবাদিপশুর অবস্থা ভয়াবহ। কুয়াশার কারণে সরিষা ক্ষেতের ফুল ঝরে পড়ছে এবং বীজতলায় বোরো ধানের চারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে জানা গেছে। এছাড়া জেলার তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র ও যমুনা নদীপথে নৌ চলাচল বিঘ্নিত হওয়ায় চরাঞ্চলের মানুষ বিপাকে পড়ছেন। জেলার গ্রামীণ জনপদ এবং যমুনা, ব্রহ্মপুত্র ও নদী তীরবর্তী এলাকার দুঃস্থ পরিবারগুলো গরম কাপড়ের অভাবে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।

এদিকে সকাল সাতটা থেকে পরবর্তী ছয় ঘণ্টার জন্য ঢাকা ও এর আশপাশ এলাকার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আকাশ অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা থাকতে পারে। এছাড়া আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। হালকা থেকে মাঝারি কুয়াশা পড়তে পারে। দিনের তামপাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে বলে সকালে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে।

ঢাকাটাইমস/২০ডিসেম্বর/এমআর

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
আরিফুলের চিকিৎসা সম্পন্ন করলেন ড্যাবের চিকিৎসকরা
র‌্যাব বিলুপ্তি নিয়ে ভাবছি না, এটি সরকার দেখবে: ডিজি
যতই ষড়যন্ত্র হোক আমরা সফল হব ইনশাআল্লাহ: তারেক রহমান
রাজনৈতিক দলগুলোর গুণগত পরিবর্তন জরুরি: এ্যানী
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা