শিশু তোফাজ্জল হত্যা: চাচার ঘরে মিলল রক্তমাখা লুঙ্গি

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ১৩ জানুয়ারি ২০২০, ২২:৫৮| আপডেট : ১৩ জানুয়ারি ২০২০, ২৩:১৪
অ- অ+

সুনামগঞ্জে তাহিরপুর উপজেলায় সাত বছরের শিশু তোফাজ্জল হোসেন হত্যায় চাচা রাসেল মিয়ার বসতঘর থেকে রক্তমাখা লুঙ্গি ও দুটি ভেজা বালিশের কভার জব্দ করেছে পুলিশ। সোমবার দুপুরে পুলিশ সুপার মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে পুলিশ উপজেলার শ্রীপুর (উত্তর) ইউনিয়নের বাঁশতলা গ্রামে এ অভিযান চালায়।

রাসেল মিয়া নিহত তোফাজ্জল হোসেনের সম্পর্কে চাচা।

এদিকে দুপুরে রিমান্ড শুনানি শেষ সাতজনকে সন্ধ্যায় তাহিরপুর থানায় আনা হয়েছে। এই ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন, তাহিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি আতিকুর রহমান।

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান জানান, শিশুটির নির্মম হত্যায় জড়িতদের শনাক্ত ও এর রহস্য উদঘাটনের জন্য পুলিশ সাত আসামিকে আদালতের মাধ্যমে রিমান্ডে নিয়েছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে রাসেল মিয়ার বসতঘর থেকে লুঙ্গি ও দুটি বালিশের কভার জব্দ করা হয়। শিশু তোফাজ্জল হোসেন হত্যায় দ্রুত সময়ে অধিক তদন্তের মাধ্যমে চার্জশিট গঠন করা হবে। খুনিদের কেউ রেহাই পাবে না।

প্রসঙ্গত, গত ০৮ জানুয়ারি বিকাল ৫টায় তোফাজ্জল তার দাদা জুবেল হোসেনের বাড়ির উঠানে খেলা করার এক ফাঁকে গ্রামের মাঠে ওয়াজ মাহফিল থাকায় বিকালে শিশু তোফাজ্জল ওয়াজ মাহফিলের মাঠে যায়। সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত নামলেও তোফাজ্জল হোসেন বাড়ি না ফেরায় গভীর রাত পর্যন্ত প্রতিবেশী, তাদের আত্মীয় স্বজন ও তোফাজ্জলের বন্ধুদের বাড়িতেও খোঁজাখুঁজি করেন স্বজনরা। সন্ধান না পাওয়ায় তোফাজ্জলের দাদা জয়নাল আবেদীন ০৯ জানুয়ারি দুপুরে তাহিরপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।

জিডি করারপর শুক্রবার ভোর রাতে বাড়ির বসতঘরে তোফাজ্জলের একজোড়া জুতা ও একটি চিঠি পায় পরিবারের লোকজন। চিঠিতে লেখা ছিল-তোমাদের ছেলে ভালো আছে, টেকেরঘাটে আমার বন্ধুর বাড়িতে তাকে রেখে এসেছি। ৮০ হাজার টাকা দিলে তাকে ফিরিয়ে দেয়া হবে। বাড়ির গোয়ালঘরে রাত ৪টায় টাকা নিয়ে থাকবে। কথা মত এলাকাবাসীর পরার্মশ নিয়ে দিন মজুর পিতা শুক্রবার রাতে টাকা অপহরণকারীদের কথা মতো গোয়ালঘরে টাকা রেখে অপেক্ষা করে নিজেদের ঘরে দরজাটা একটু ফাঁকা করে। কখন জানি ছেলেটিকে রেখে যায়, না হয় আবারও চিঠি দেবে কোথাও ছেলেকে রেখেছে নিয়ে আসতে হবে- সেই আশায় তার ভাই সালমান হোসেনকে নিয়ে। ভোর সাড়ে ৪টা পর্যন্ত না আসায় সালমান নামাজ আদায় করার জন্য অজু করতে যায়। এসময় গোয়ালঘরের সামনে শব্দ শোনা যায়। সালমান এগিয়ে দেখে সিমেন্টের বস্তা। পরে বস্তার মুখ খুলে দেখা যায়, তোফাজ্জলের লাশ। এসময় পরিবারের সবাই এসে পুলিশকে খবর দেয়। পরে প্রতিবেশী তোফাজ্জলের ফুফা সেজাউল কবির ও তার বাবা কালা মিয়াকে সন্দেহজনকভাবে পুলিশে দেয় তারা। এই খবর জানাজানি হলে, নিহত শিশুর লাশ দেখতে উৎসুক জনতা ভিড় জমায় তোফাজ্জেলের বাড়িতে। এসময় পিতা, মাতা আর প্রতিবেশী ও আত্মীয়-স্বজনের আহাজারিতে এক হৃদয়বিধায়ক পরিবেশের সৃষ্টি হয়।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শফিকুল ইসলাম বলেন, শিশু তোফাজ্জল অপহরণ ও হত্যা মামলায় সন্দেহভাজন দাদা, চাচা, ফুফু, ফুফাসহ সাতজনকে রবিবার দুপুর ১২টায় সুনামগঞ্জ আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়।

সোমবার আদালত ফুফা সেজাউল কবির, তার বাবা কালা মিয়াকে পাঁচ দিন ও শিশু তোফাজ্জলের চাচা হাফেজ সালমান হোসেন, লোকমান হোসেন, ফুফু শিউলি আক্তার, হাবিবুর রহমান, তার ছেলে রাসেলকে তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। জিজ্ঞাসাবাদে আশা করি, শিগগির এ শিশু অপহরণ ও হত্যারহস্য উন্মোচিত হবে।

(ঢাকাটাইমস/১৩জানুয়ারি/এলএ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
প্রথম প্রেমের স্পর্শ: পর্ব ৭- মন না জাগলেও শরীর জাগে
আশুলিয়ায় গণহত্যা ও ছয় লাশ পোড়ানো মামলায় ১৬ জনকে আসামি করে ট্রাইব্যুনালে অভিযোগপত্র
উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে তরুণদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছে সরকার: রাবাতে আসিফ মাহমুদ
হজব্রত শেষে দেশে ফিরেছেন ৬৩ হাজার ১৮৮ হাজি
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা