ঢাবিতে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানকে মারধরের অভিযোগ

তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় একাত্তর হলে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে হল সংসদ ও ছাত্রলীগের এক নেতার বিরুদ্ধে। শুক্রবার দুপুরে হলের নিচতলায় সাইকেল রাখাকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা হলেন- ব্যবসা অনুষদ ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক ও বিজয় একাত্তর হল ছাত্র সংসদের সদস্য শফিক ফকির। শফিক ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সঞ্জিতের অনুসারী। অন্যদিকে মারধরের শিকার শিক্ষার্থীর নাম নাইমুল হাসান। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইনান্স বিভাগের মাস্টার্স এর শিক্ষার্থী এবং একই হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। নাইমুলের গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রাম এবং তার বাবা একজন মুক্তিযোদ্ধা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মারধরের শিকার নাইমুল হলের নিচতলায় সাইকেল রাখলে তা লাথি দিয়ে ফেলে দিয়ে নিজের মোটর সাইকেল রাখেন হল ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক দিদার মাহমুদ আব্বাস। এসময় নাইমুল কারণ জানতে চাইলে তার সাথে দীর্ঘক্ষণ বাকবিতণ্ডা হয় আব্বাসের। একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে শফিক ফকির উপস্থিত হয়ে কথা কাটাকাটি থামাতে নাইমুলকে হলের দ্বিতীয় তলায় নিয়ে যান। এসময় তাদের মধ্যেও বেশ কিছুক্ষণ তর্ক হয়। দিদার পলিটিক্যাল লোক, তার সাথে ঝগড়া না করতে ফকির নাইমুলকে অনুরোধ করেন। দিদারের দোষ থাকা সত্ত্বেও ফকিরের এমন অনুরোধে নাইমুল সন্তুষ্ট না হলে একপর্যায়ে শফিক নাইমুলকে চড়-থাপ্পড় দেয়া শুরু করেন। এসময় তিনি নাইমুলকে গণরুমে নিয়ে গিয়ে জুনিয়র দিয়ে মারার হুমকিও দেন। জানা যায়, ঘটনাস্থলে দিদার মাহমুদ আব্বাসসহ আরও কয়েকজন উপস্থিত ছিলেন।
ভুক্তভোগী নাইমুল জানান, দুপুরে হলের নিচ তলায় সাইকেল রেখে আমি খেতে ক্যান্টিনে যাচ্ছি। এসময়ই বাহির থেকে বাইক নিয়ে আব্বাস ভাই এসে আমার সাইকেল লাথি মেরে ফেলে দেন। আমি এর প্রতিবাদ করলে তিনি বলেন, এটি সাইকেল রাখার জায়গা না। এটি শুধু বাইক রাখারও জায়গা না বললে তিনি আমার সাথে উত্তপ্ত ভাষায় তুই তুকারি করে কথা বলেন। এক পর্যায়ে শফিক ফকির এসে আমাকে হলের দ্বিতীয় তলায় নিয়ে যান। এ সময় তিনি আমার পরিচয় জানতে চেয়েই আমাকে চড় থাপ্পড় দেয়া শুরু করেন। আমাকে গণরুমে নিয়ে গিয়ে জুনিয়র দিয়ে মারার হুমকিও দেন শফিক। পরে দিদার আব্বাসসহ আরও কয়েকজন এসে আমাকে ধরে মারতেও উদ্ধ্যত হন।
হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের ভোটে নির্বাচিত ছাত্র প্রতিনিধির এমন আচরণে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন হলের শিক্ষার্থীরা। তারা বলেন, হল সংসদের এক প্রতিনিধি থেকে এমন আচরণ আমাদের হতভম্ব করেছে।
প্রসঙ্গত, এর আগেও শফিক ফকিরের বিরুদ্ধে হলের ক্যান্টিন এবং দোকানে ফাও খাওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে শফিক ফকির বলেন, নাইমুল ছেলেটা দিদারের সাথে উত্তপ্ত ভাষায় কথা বলছিল। আমি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে নাইমুলকে হলের দ্বিতীয় তলায় নিয়ে যাই। সে আমার সাথেও উত্তপ্ত ভাষায় কথা বললে একপর্যায়ে আমি তাকে চড় দিই। তবে এটি আমার ভুল হয়েছে।
এ বিষয়ে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল বলেন, বিষয়টি আমি শুনিনি। তবে কোথাও যদি কোনো মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান অন্যায়ভাবে আঘাতের শিকার হয় তাহলে এর বিরুদ্ধে আমাদের প্রতিবাদ থাকবে।
হল সংসদের এক প্রতিনিধির এমন আচরণ কীভাবে দেখছেন জানতে চাইলে হল প্রাধ্যক্ষ আব্দুল বাছির বলেন, আমার কাছে লিখিত অভিযোগ এলে বিষয়টি দেখবো।
(ঢাকাটাইমস/১৩মার্চ/এমআই/জেবি)

মন্তব্য করুন