লকডাউন এক বছর করার কথা ভাবছে ব্রিটেন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ১৪ এপ্রিল ২০২০, ০৯:২৭| আপডেট : ১৪ এপ্রিল ২০২০, ১০:০৯
অ- অ+

বাইশ হাজার পেরিয়ে কিছুটা গতি কমেছে যুক্তরাষ্ট্রের মৃত্যুমিছিলের। স্পেনও দাবি করেছে, দৈনিক মৃতের সংখ্যা এখন কিছুটা কম। একই কথা জানাচ্ছে ইতালি, ফ্রান্সও। যার জন্য ইউরোপের কম ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলি গৃহবন্দি থাকার নির্দেশিকা শিথিল করার কথা ভাবছে।

তবে একমাত্র যে ব্রিটেন এত দিন বাসিন্দাদের গৃহবন্দি করার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছিল না, তারাই এখন দেশ এক বছরের জন্য লকডাউন করার কথা ভাবছে। প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের সঙ্গে বিজ্ঞান বিষয়ক উপদেষ্টা মণ্ডলীর বিশেষ বৈঠকে সোমবার মিলেছে এমনই ইঙ্গিত।

ব্রিটেনে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীও করোনা-আক্রান্ত হয়েছিলেন। তিন রাত আইসিইউয়ে কাটিয়েছেন। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পরে স্বাস্থ্যকর্মীদের ধন্যবাদ জানিয়ে বরিস জনসন বলেছেন, ‘ওদের জন্যই জীবন ফিরে পেলাম’।

এরপরই সোমবার ‘সায়েন্টিফিক অ্যাডভাইজরি গ্রুপ ফর ইমার্জেন্সিস’ এর সঙ্গে বৈঠকে বসেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। বৈঠকে বরিস জানিয়েছেন, এত দিন বাসিন্দাদের ঘুরে-বেড়ানো, মেলামেশায় নিয়ন্ত্রণ তুলে নেওয়ার কথা ভাবা হয়েছিল। কিন্তু জাতীয় স্বাস্থ্য পরিষেবার শয্যা এক-এক করে ভরতে থাকার পরে এবং মৃতের সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়ানোর পরে নতুন করে ভাবছে ব্রিটিশ প্রশাসন।

বরিস স্পষ্ট জানিয়েছেন, পাব ও রেস্তরাঁ বন্ধ না করলে সংক্রমণ ঠেকানো যাবে না। আর এই লকডাউনের সময়কাল এক বছর পর্যন্ত হতে পারে।

ব্রিটেনের বিশেষজ্ঞরাও আপাতত স্কুল-কলেজসহ যে কোনো ধরনের জমায়েত দীর্ঘমেয়াদে বন্ধ রাখার ওপর জোর দিচ্ছেন। বন্ধ রাখা হবে বাজার-দোকানও। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ‘সরকার যদি বিষয়টিতে গুরুত্ব দেয়, তবেই দেশের মানুষ এর গুরুত্ব বুঝবে’।

বাসিন্দাদের দীর্ঘ তিন মাস গৃহবন্দি রাখার পরে অবশেষে একটু স্বাভাবিক হতে শুরু করেছিল চীনের হুবেই প্রদেশ। কিন্তু নতুন করে সংক্রমণের সংখ্যা বাড়ছে সেখানে। গত কয়েক সপ্তাহে এই প্রথম এক দিনে ১০৮ জন আক্রান্ত হয়েছেন চীনে। দ্বিতীয় পর্যায়ের এই সংক্রমণ সম্পর্কে বেইজিংয়ের দাবি, আক্রান্তরা সকলেই বিদেশ ফেরত। তাদের থেকেই কিছু স্থানীয় সংক্রমণ ছড়িয়েছে।

এ দিকে দীর্ঘকাল লকডাউনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে আজ আশঙ্কা প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। তাদের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) এর কথায়, ‘এখনও সুপারমার্কেটে খাবার মজুত রয়েছে। কিন্তু যা পরিস্থিতি, তাতে শীঘ্রই খাদ্য সরবরাহের শৃঙ্খলে ভাঙন ধরবে। কারণ চাষি, কৃষি ব্যবস্থা, সেই সঙ্গে যুক্ত কারখানা, জাহাজ পরিবহণ, বড় থেকে ছোট ব্যবসায়ী... পুরো পদ্ধতিটাই ভেঙে পড়বে।’

মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত করোনায় বিশ্বব্যাপী নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক লাখ ১৯ হাজার ৬৯২ জনে এবং আক্রান্তের সংখ্যা ১৯ লাখ ২৪ হাজার ৬৭৯ জন। অপরদিকে ৪ লাখ ৪৫ হাজার ৫ জন চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।

করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নেয়া হয়েছে সতর্কতামূলক পদক্ষেপ। অধিকাংশ দেশেই মানুষের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা নিশ্চিত করতে মানুষের চলাফেরার ওপর বিভিন্ন মাত্রায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে কর্তৃপক্ষ। কোনো কোনো দেশে আরোপ করা হয়েছে সম্পূর্ণ লকডাউন, কোথাও কোথাও আংশিকভাবে চলছে মানুষের দৈনন্দিন কার্যক্রম। এ ধরনের পদক্ষেপ নেয়ার কারণে পৃথিবীর বিভিন্ন এলাকার প্রায় অর্ধেক মানুষ চলাফেরার ক্ষেত্রে কোনো না কোনো মাত্রায় নিষেধাজ্ঞার ওপর পড়েছেন।

ঢাকা টাইমস/১৪এপ্রিল/একে

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
বনে বসবাসকারীদের বিরুদ্ধে করা ১২৯ মামলা প্রত্যাহার: উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান
জনগণ ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন দেখতে পাবে: প্রত্যাশা তারেক রহমানের
সাবেক মেয়র আইভী রিমান্ডে, আরও দুই মামলায় গ্রেপ্তার
ভোলায় কোস্ট গার্ডের মৎস্য সংরক্ষণ কর্মশালা ও সচেতনতামূলক কার্যক্রম
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা