মহামারি জীবনের অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ

.এস এম জাহাঙ্গীর আলম সরকার
  প্রকাশিত : ১৩ জুলাই ২০২০, ০৯:৪৫
অ- অ+

"দুর্ভিক্ষ শ্রাবস্তীপুরে যবে/জাগিয়া উঠিল হাহারবে/, বুদ্ধ নিজভক্তগণে শুধালেন জনে জনে/ ‘ক্ষুধিতেরে অন্নদানসেবা/ তোমরা লইবে বল কেবা?'/ শুনি তাহা রত্নাকর শেঠ/ করিয়া রহিল মাথা হেঁট।/ কহিল সে কর জুড়ি, ‘ক্ষুধার্ত বিশাল পুরী,/ এর ক্ষুধা মিটাইব আমি/ এমন ক্ষমতা নাই স্বামী’!”

যখন মানবতার বিপর্যয় বা করোনা মহামারি চলছে তখন রবীন্দ্রনাথের অবিনাশী কবিতা আমাকে বারবার আহত করছিল এই জন্য যে, আমরা অভ্যস্ত হয়েছি এ বিশ্বাস নিয়ে, সৃষ্টির যা কিছু পরিবর্তন হয় তা মানুষের মঙ্গলে বা কল্যাণের স্বার্থেই হয়। কল্যাণে হোক সেটাই চাই, কিন্তু অকল্যাণের মুক্তির জন্য মানবজাতি যে খুব বেশি প্রস্তুত নয় তা আমরা বুঝলাম যখন এসে বিশ্ব বর্তমান সময়টাতে করোনার সাথে যুদ্ধ করছে; তাকে ঠেকানোর জন্য জন্য। সেই সাথে প্রতিষেধক আবিষ্কারে গবেষণায় ব্যস্ত বিশ্বখ্যাত একঝাঁক নবীন-প্রবীণ বিজ্ঞানকর্মী।

পৃথিবী এসে রীতিমতো আটকে গেছে সময়ের বির্বতনে। তাও আবার যে যেখানে আছে সেখানেই। চলমান বর্তমানে খুব একটা দেখা না দিলেও সহজে অনুমেয়- এই মহামারি বা মানবিক বিপর্যয় গড়াতে গড়াতে পৃথিবীকে খাদ্য সংকটের মুখোমুখি করে আরো দুর্বল করে ফেলতে পারে। সে বিষয় মাথায় রেখে খাদ্য উৎপাদন ব্যবস্থাপনায় আনতে হবে ব্যাপক পরিবর্তন। খাদ্যাভ্যাসেও আসবে কিছু পরিবর্তন, যা পুরাতনের অনিবার্য পরিবর্তনেই সৃষ্টি হবে। নতুন খাদ্য সংস্কৃতি অতঃপর এটি নতুন করে পথ চলতে থাকবে দীর্ঘ পথ।

মহামারি এই পৃথিবীতে নতুন কিছু নয়। সৃষ্টির শুরু থেকেই সময়ে সময়ে পৃথিবীতে নেমে আসে প্রাকৃতিক দুর্যোগ কিংবা মহামারি। যেমন ১৬৬৪ সালে লন্ডন শহরে গুডওমেন ফিলিপস নামে এক ইংরেজ মহিলা তার নিজ গৃহে হঠাৎ মৃত্যুর পর পরীক্ষা-নীরিক্ষা করে দেখা গেল তিনি আক্রান্ত হয়েছিলেন প্লেগে। সঙ্গে সঙ্গে বাড়িটি সিলগালা করা হয়েছিল। ১৬৬৪ সালে প্লেগ রোগটির শুরু এভাবেই এবং কিছু লোকের প্রাণহানি হলো প্লেগে। ১৬৬৫ সালে প্লেগ রোগটি মহামারি আকার ধারণ করেছিল। রোগটি শুরু হওয়ার পর থেকে ১৮ মাসে শুধু লন্ডন শহরে মৃতের সংখ্যা অবিশ্বাস্য রকম বেড়ে দাঁড়াল ১ লাখে যা তখনকার সংখ্যায় লন্ডন শহরের মোট জনসংখ্যার তিন ভাগের এক ভাগ প্রায়।

যুগে যুগে কোটি কোটি মানুষকে প্রাণ হারাতে হয়েছে মানবিক বিপর্যয়ে বা মহামারিতে। অনেক পণ্ডিত বা মনীষী ব্যক্তিও আক্রান্ত হয়েছেন এসব রোগে। অনেকেই ছিলেন কোয়ারেন্টাইনে বা গৃহবন্দি হয়ে। ফ্রান্সের রাজা অষ্টম চার্লস, ক্রিস্টোফার কলম্বাস, হার্নেন কার্তেজ, লিও তলেস্তয়, নিৎসে, বদলেয়ার, মোপাঁসা, জার্মান কবি হেনরিক হাইনে, মুসোলিনি, হিটলার, লেনিন, বিখ্যাত ডাচ চিত্রকর রামব্রেন্ড, বাংলার শরৎচন্দ্র, রবিঠাকুর পর্যন্ত। সেই মনবিক বিপর্যয়ের দিনগুলোতে তাঁদের রচনা বিশ্বসাহিত্যে অনন্য স্থান করে নিয়েছে।

বলার বিষয় শেক্সপিয়র, নিউটনের এই অনিচ্ছা নির্বাসন বিশ্বসাহিত্য তাঁদের জন্য আশীর্বাদ ছিল। জেফরি চসার তার বিখ্যাত লেখা ‘দ্য ক্যান্টারবারি টেলস্’, মেরি শেলির উপন্যাস ‘ফ্রাঙ্কেনস্টাইন’-এর ‘দ্য বেল জার’, উইলিয়াম কেনেডির ‘আয়রনউইড’, আইরিশ লেখক জেমস্ জয়েসের ‘উইলিসিস' এমন মহামারি বা মানবিক বিপর্যয়ের মধ্যেই লেখা হয়েছে। বিশ্ববিখ্যাত ‘ইডিপাস’ নাটকেও আমরা পেয়েছি এক ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় বা মহামারির কথা। এই গ্রন্থগুলো যুগে যুগে মহামারি বা মানবিক বিপর্যের অখণ্ড দলিলও বটে । তাঁরা সাহিত্যসৃষ্টি বা সাহিত্যকর্মের মধ্য দিয়ে এতটুকু জানান দিয়ে গেছেন, যুদ্ধ মানবসভ্যতার জন্য কখনোই কল্যাণকর নয়, বিধায় যুদ্ধ খাতে অর্থ ব্যয় কম করে স্বাস্থ্য খাতে অর্থ ব্যয় বেশি করে মানবসভ্যতাকে টিকিয়ে রাখার জয়গান গেয়েগেছেন। তা যদি আমরা যথার্থ রপ্ত করতে পারতাম, তাহলে আজকের এমন মানবিক বিপর্যয় এমন পরিসরে নাও ঘটতে পারত।

বলে রাখা দরকার, গত ৭ এপ্রিল 'নিরাপদ থাকুক কর্মরত পুলিশ সদস্যরাও' শিরনামে দৈনিক ও অনলাইনে একটি লিখা প্রকাশিত হয়েছিল, তাতে ছোট্ট একটি আর্জি রেখে বলার চেষ্টা করেছি, ডাক্তার-নার্সদের সঙ্গে পুলিশ সদস্যরাও রাত-দিন মানবতার এই বিপর্যয়ে লড়াই করে যাচ্ছেন। পুলিশ সদস্যরাও নিরাপদ হোক ‘সেইফটি ফার্স্ট’ নীতি অনুসরণ করে।

বাংলাদেশ পুলিশের পক্ষে তৎকালীন পুলিশ-প্রধান মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে কিছু অর্থ জমা করেছেন। সত্যিই খুব প্রশংসনীয় ভূমিকা এবং তাতে বাংলাদেশ পুলিশ আজীবন সমাদৃত হবেন। স্যারের প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা। সেই সাথে যদি নিজ সদস্যদের প্রোরক্ষার বিষয়টি আর একটু গুরুত্ব দেয়া যেত, সেক্ষেত্রে ধারাবাহিকতায় এত দিনে এসে বাস্তবায়নও পূর্ণতা পেত, এমনকি কৃতকাজটি তাঁর জন্য বয়ে আনত ইতিহাসের অনন্য উচ্চতা। ফলস্বরূপ পেশাগত দায়িত্ব পলনকালে পুলিশ সদস্যদের করোনা আক্রান্তের সংখ্যাটি আরও কম হতে পারত, যা তাঁর প্রশাসনিক দক্ষতারই জয়গান হতো, বেড়ে যেত সেবাদাতা সদস্যদের মনোবল।

যাহোক, মহামারিকালে পণ্ডিতদের লেখা গ্রন্থাদি সাক্ষ্য দিচ্ছে, সুদূর অতীতেও মহামারি দেখা দিয়েছে, প্রাণহানি ঘটেছে, তার মাঝেও তাঁরা মানবতার জয়গান গেয়েছেন। যুগে যুগে মানবিক বিপর্যয় ছিল, আছে, থাকবে; তার পরেও মানবসভ্যতা কিন্তু বিলীন হয়ে যাবে না। আমরা আশাবাদী, হতাশাগ্রস্ত নই কোনোভাবেই। বিশ্বনেতাদের মাথা নুয়ে পড়লেও বিজ্ঞান কিন্তু বসে নেই, তাদের শ্রম বৃথা যেতে পারে না সে প্রত্যাশাই দৃঢ়। আমরা ধরেই নিতে পারি, খুব শিগগির করোনার প্রতিষেধক বা ভ্যাকসিন আবিষ্কার হবে। কিন্তু তা যথাযথ সমবণ্টন হবে কি না তা নিয়ে শঙ্কাও কম নয়।

বাজার অর্থনীতির চরিত্র বলে, ধনী রাষ্ট্রগুলো তা দখলে নেওয়ার জন্য অপ্রত্যাশিত প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হতে পারে। সেটিও ভেবে দেখার প্রয়োজন এখনই। অন্যথায় পুঁজিবাদী বাজার ব্যবস্থার কারণে আরও একটা মানবিক বিপর্যয় দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়া যায় না। প্রযোজ্য ক্ষেত্রে অর্থনীতিতে পুঁজিবাদ আর সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থাপনার যৌক্তিক সমন্বয়ে নতুন কিছু বাজার বৈশিষ্ট্য অভিযোজিত করার প্রয়োজন হতে পারে।

এ রকম প্রতিটি রাষ্ট্রকাঠামোয় বিদ্যমান প্রতিটি সূচকেই কমবেশি পরিবর্তিত রূপ অভিযোজিত হবে।

পরিবর্তন যখন বাধ্যতামূলক হয়ে যায়, তখন এমনটা আলোচনায় আরো বেশি প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়; কেননা যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত আফ্রিকার অনেক দেশ যারা মার্সিটিজ বেঞ্জের মতো গাড়ি সংযোজন করত, তদুপরি শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতির পুরোটাই ছিল ইউরোপীয়। বেলজিয়াম কলোনি থাকায় লাইফস্টাইল রীতি আধুনিক, কিন্তু দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধ পরীক্ষায় হেরে গিয়ে অর্থনৈতিক কাঠামো ভেঙে চুরমার।

এক কথায় ‘Give me a biscuit’ বলে শিশুরা পেটের তাগিদে হাত বাড়ায়, সে দেশে এটি যুদ্ধের পরবর্তী অবস্থার চলমান সময়ের কথা ব্যক্ত করছি। তার চেয়েও বড় জিজ্ঞাসার জায়গাটা হলো মানুষ হিসেবে একটি বিস্কুট চাই বলে আর কতটা সময় চিৎকার করবে তারা। যদি জনসংখ্যার একটা বিশাল অংশের কারো চিৎকার স্রষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণে বিচার্য বিষয় বলে মনোনীত হয়েই থাকে, সেক্ষেত্রে আজ যারা বিশ্বকে অচেনা শত্রুর সাথে যুদ্ধ করতে গিয়ে হাঁপিয়ে পড়ছেন, তাদের অনেক দেশকে একই পথ অনুসরণ করতে হতে পারে পরিবর্তিত ভবিষ্যতে।

দৃশ্যত ক্ষমতাচর্চা সভ্য-অসভ্য সব শ্রেণীর শাসকদের মজ্জাগত সুখ। কাজেই ক্ষমতা নামক মরীচিকা নতুন পৃথিবীর ব্যবস্হাপনায় সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ প্রপঞ্চ হিসেবে কাজ করবে তাতে কোনো সন্দেহ নাই। সেই সাথে বিবেচনায় রাখতে হবে নতুনভাবে ক্ষমতার মেরুকরণ যুদ্ধও আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে কি না। সেটির সমাধানও শান্তিপূর্ণ পথে হোক সেটি কাম্য। কিন্তু আশাবাদী হওয়ার মতো বিশ্বনেতাদের দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ দৃশ্যমান নয় অন্তত এখনো। সব আন্তর্জাতিক সংস্থা ইতোমধ্যে ক্ষমতাকেন্দ্রিক দেশগুলোর প্রতি নিঃশর্ত মোহ প্রদর্শন করায় মানুষ সেসব সংস্থার প্রতি অশ্রদ্ধা প্রদর্শন করেছে বারবার, অবশ্য সময়ের ব্যবধানে সংস্থাগুলো তাদের কার্যকারিতাও হারিয়ে ফেলেছে।

রাষ্ট্রনায়করা কাউকে অভিযুক্ত করে ক্ষতিপূরণ আদায়ের চাপ দেয়ার পথকে সমর্থন করবে অনেকেই, কিন্তু ভুলে গেলে চলবে না হুমকি খুব একটা কাজে আসবে না বিশেষ করে পশ্চিমাদের। কারণ করোনাই শেষ না, আরো কিছু আছে এটি পশ্চিমাদের ভাবাবে যেমন, তেমনি বিপরীত মেরুর লোকজনের সাহসও জোগাতে পারে। রাশিয়া, এশিয়া, আরবরা একে অপরের সাথে বিদ্যমান সম্পর্কে পরিবর্তন আনার চেষ্টা করার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেবার মতো নয়। আর সেটা অনুমান থেকে বাস্তবে রূপ নিলে বিশ্বক্ষমতার ভারসাম্যে নতুন মাত্রা যোগ হবে। আর সে ভারসাম্য শুধু যদি ক্ষমতার বিপরীতে ক্ষমতা সংরক্ষণ ও প্রদর্শনের জন্য জোটভুক্ত হয়, তাহলে কোনো ভালো ফলাফল বয়ে আনবে না।

মহান সৃষ্টিকর্তা তো সমগ্রের। সারা বিশ্ব আন্তরিক হলে যতটুকু সময় পার হয়েছে, এরই মধ্যে ক্ষুধার্ত আফ্রিকানদের খাবার-দাবারের নিশ্চয়তাটুকু ফিরিয়ে দেয়া প্রয়োজন অনুভব করাই ছিল মানবিক উদারতা। বিশ্বনেতাদের বিপরীতমুখী চিন্তার কারণে তাদের দিনের পর দিন ক্ষূধার্ত রেখে খনি সম্পদগুলো উত্তোলন করেছেন ক্ষমতাধর রাষ্ট্রনায়কেরা। হয়তো করোনা প্রভাবক হিসেবে কাজ করছে ক্ষুধার্ত মানুষের আর্তচিৎকার ও প্রকৃতির পক্ষে সৃষ্টিকর্তার প্রাণ নেয়ার এজেন্ট হিসেবে। তাই ধনী-দরিদ্র সবার প্রতি সম-আচরণ প্রদর্শন করে অস্থির করে ফেলছে, ফলশ্রুতিতে সবাইকে আজ একই অবস্থায় নিরাপদ থাকতে গৃহবন্দিত্ব মেনে নিতে হয়েছে।

যুদ্ধে হেরে আফ্রিকার অনেক এলাকায় অর্থনীতি ভঙ্গুর হওয়ার কারণে আর বৃদ্ধলোক খুঁজে পাওয়া দুষ্কর, বিশেষ করে ষাটোর্ধ্ব। যেমনটা করোনাকালীন ইতালি চিকিৎসা দেয়ার ক্ষেত্রে বৃদ্ধদের প্রতি নিরুৎসাহিত নীতি গ্রহণ করেছে, কারণ তারা বুঝতে পেরেছে যুদ্ধের

পরে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে অনিশ্চিত চরিত্রের বিপদ আসবে হয়তো। নতুন পৃথিবীর জন্য যাদের শারীরিক পরিশ্রম করার মতো শক্তি নাই, তাদের আর প্রয়োজন নাই। বিধায় মহামারিকালে চিকিৎসক ছেলে নীতিমালার কারণে মনবিক ও জন্মসত্তা বিসর্জন দিয়ে আর করোনার থাবার ভয়ে বাবার চিকিৎসা না করেই অন্তিমের জন্য অশ্রুসিক্ত বিদায় জানালেন; আর মনে মনে ক্ষমা চাইলেন- বাবা, মাফ করে দিও।

আফ্রিকার মানুষের গড় আয়ু যা ছিল, যুদ্ধোত্তরকালে এসে গড় আয়ু কমিয়ে নিতে বাধ্য হলো তারা, কারণ এইডস চিকিৎসায় বিশ্ববাসী তাদের কাঙ্খিত চিকিৎসার ব্যবস্থা করেনি বলে। পেটে ভাত নাই বলে পরিপূর্ণ চিকিৎসা ব্যয় করার মতো রাষ্ট্রীয় সামর্থ্যও নাই তাদের। ফলে আনন্দ-ফুর্তি করে এইডসকে সঙ্গী করে নিয়েই চলছে তারা। এই জীবাণু নিয়েও পঞ্চাশ বছর জীবন চলে ধরে একসময়ের ৬০ বছরের গড় আয়ু এসে নতুন করে ৫০ বছরে বাঁধতে হয়েছে। সুবিধা একটা হয়েছে যে, ষাটোর্ধ্ব মানুষের সংখ্যা খুব নগণ্য, কারণ এইডস জীবাণু ওদের দেহে বাস করে গড় আয়ু ১০ বছর কমিয়ে এনেছে। ৫০ বছরের স্বাভাবিক আয়ু মেনে নিয়েছে একরকম বাধ্য হয়েই।

বর্তমান করোনাক্রান্ত পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে মন্দা শুরু হবে আশঙ্কা করছে সবাই। আর সে ব্যবস্থাপনায় যারা যতটা সফল হবে তারা ততটা আয়ু ধরে রাখতে পারবে। যারা পারবে না, তাদের আফ্রিকার মতো প্রস্তুতি নিতে হবে, করোনা নিয়েই তাদের বাস করতে হবে। করোনার বিচিত্র চরিত্র যদি মানুষের সাথে চলতে গিয়ে সবশেষে ১০ বছরের আয়ু কমানো চরিত্রের জীবাণু হিসেবে পৃথিবীতে বাস করতে থাকে, আর পৃথিবীতে নতুন ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা দেখিয়ে সফলভাবে যেসব রাষ্ট্র মাজা সোজা করে চলতে শিখবে, সে দেশগুলোর নেতৃত্ব যদি নতুন করে দরিদ্র রাষ্ট্রের পাশে না দাঁড়ায় সেক্ষেত্রে পৃথিবীর অনেক দেশের মানুষের এই গড় আয়ু কমে যাবে আশঙ্কাজনকভাবে। কারো কারো জন্য পরিণতি কল্পনার চেয়েও ভয়াবহ হতে পারে। কারণ একটাই- মানুষের সাথে এই পৃথিবীতে করোনার বাস অভিযোজিত হওয়া মানে যক্ষ্মা কিংবা ক্ষতিকর ফ্লু যেমনটা মানুষের বসবাসের সাথে পৃথিবীতে থাকার চিরস্থায়ী ব্যবস্থা করে নিয়েছে, তেমনি নতুন করে আামাদের সাথে করোনা জীবাণু পৃথিবীতে বাস করার নাগরিকত্ব পেল। পরিচয় তার বন্ধু নয়; শত্রু। আজ থেকে পৃথিবীর মানুষকে প্রাণঘাতী এ শত্রু নিয়েই বাস করতে হবে হয়তো; মনুষ্য জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত!

লেখক পুলিশ সুপার। গীতিকবি, প্রাবন্ধিক ও কণ্ঠশিল্পী

(ঢাকাটাইমস/১৩জুলাই/মোআ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
বিজয়নগর সীমান্তে পুশইনের চেষ্টা, বিজিবির টহল জোরদার 
গোপালগঞ্জে বাস-ট্রাকের সংঘর্ষে নিহত ৩
কাকরাইল মোড়ে জবি শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা, দুপুরে গণঅনশন
সহকর্মীর সঙ্গে দুর্ব্যবহার, ক্ষমা চাইলেন অভিনেতা শামীম হাসান সরকার
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা