কালাইয়ে পানিবন্দি দুই শতাধিক পরিবার

জয়পুরহাট প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ০৫ আগস্ট ২০২০, ১৬:৪৩
অ- অ+

জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার পশ্চিম কুজাইল ও চক-নয়াপাড়া গ্রামের দুই শতাধিক পরিবার বৃষ্টির পানিতে জলাবদ্ধ অবস্থায় জীবনযাপন করছেন কয়েক বছর ধরে। পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টি হলেই গ্রামের চলাচলের সড়ক ডুবে যায়।

জলাবদ্ধ হয়ে পড়ে দুই শতাধিক বাড়ি-ঘর। এ অবস্থা চলছে ৪-৫ বছর ধরে।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, বর্ষা মৌসুমে উপজেলার পশ্চিম কুজাইল ও চক-নয়াপাড়া গ্রামের বৃষ্টির পানি পাশের ক্ষেতলাল উপজেলার সীমানা দিয়ে অপসারিত হয়ে আসছে যুগ-যুগান্তর থেকে। কিন্তু ক্ষেতলাল সীমান্তে পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ করে অপরিকল্পিতভাবে এক ব্যক্তি বাড়ি নির্মাণ করার পর থেকে এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এ বিষয়ে কালাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে অভিযোগ করা হলেও কোন সুরাহা হয়নি। ফলে সেই থেকে জলমগ্ন অবস্থায় বসবাস করছেন গ্রাম দুটোর দুই শতাধিক পরিবারের প্রায় সহস্রাধিক মানুষ।

মঙ্গলবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, নিষ্কাশনের পথ বন্ধ থাকায় বৃষ্টির পানিতে ডুবে আছে পশ্চিম কুজাইল ও চক-নয়াপাড়া গ্রামে যোগাযোগের একমাত্র সড়ক। ডুবে আছে বেশকিছু বাড়ি-ঘরও। এ ছাড়া সারা বছর ঘর গৃহস্থালির অপসারণ করা পানি প্রবাহের নর্দমাগুলোও ডুবে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। ডুবে থাকার কারণে একমাত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পশ্চিম কুজাইল সালাফিয়া মাদ্রাসায় শিক্ষাদানে ঘটছে চরম ব্যাঘাত। সড়ক ও মাদ্রাসা জলাবদ্ধতার কারণে বর্ষা মৌসুমে শিশু শিক্ষার্থীরা মাদ্রাসায় আসতে পারে না। দীর্ঘ সময় পনিবন্দি হয়ে থাকার ফলে ওইসব পরিবারের সদস্যরা পানিবাহিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। সড়ক ডুবে থাকার ফলে কৃষকদের উৎপাদিত ধান আলু ও অন্যান্য কৃষি পণ্যও হাট-বাজারে নিয়ে যেতে নানা সমস্যায় পড়তে হয় গ্রামের কৃষকদের। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে গ্রামবাসীর পক্ষ থেকে কালাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে অভিযোগ করা হলেও কোন সমাধান মেলেনি। পরে স্থানীয় জিন্দারপুর ইউনিয়ন পরিষদে অভিযোগ করার পর চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান জিয়া কয়েক দফা চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন।

পশ্চিম কুজাইল সালাফিয়া মাদ্রাসার পরিচালক তাজমহল হোসাইন বলেন, পানি নিষ্কাশন না হওয়ার কারণে বর্ষা মৌসুমে গ্রামের সড়ক ও মাদ্রাসা জলাবদ্ধ হয়ে পড়ে। ফলে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা মাদ্রাসায় আসতে পারে না।

গ্রামের পল্লী প্রাণি চিকিৎসক নবীর উদ্দিন বলেন, বর্ষার পানিতে পুরো গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে আছে ৩-৪ বছর ধরে। বর্ষার পানি প্রবাহের পথ ভরাট করে পাশের ক্ষেতলাল উপজেলা সীমান্তে জনৈক ব্যক্তি বাড়ি নির্মাণ করার ফলে আমরা দুই গ্রামের সহস্রাধিক মানুষ জলমগ্ন হয়ে পড়েছি। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে বিষয়টি সুরাহার জন্য দরবার বসিয়েও কোন লাভ হয়নি।

আনিছুর রহমান, কোহিনুর বেগম ও সালামত আলীসহ কয়েকজন গ্রামবাসী বলেন, আগে যে জমি দিয়ে দুই গ্রামের বর্ষার পানি নিষ্কাশন হতো সেই জমি ভরাট করার ফলেই তাদের এই ভোগান্তি। বর্ষার পানিতে গ্রামের সড়কসহ তাদের বাড়ি-ঘরও ডুবে আছে। এ অবস্থায় প্রশাসনের ওপর মহলের হস্তক্ষেপে বিষয়টি দ্রুত সুরাহার দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী গ্রামবাসী।

স্থানীয় জিন্দারপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান জিয়া গ্রামবাসীর কষ্টের কথা স্বীকার করে বলেন, গ্রাম দুটো কালাই উপজেলার হলেও পানি নিষ্কাশনের পথটি ক্ষেতলাল পৌরসভা সীমানার মধ্যে। এ ব্যাপারে ক্ষেতলাল পৌরসভা মেয়রের সাথে যোগাযোগ করা হলেও সহযোগিতা না করায় বিষয়টি সুরাহা করা সম্ভব হয়নি।

ক্ষেতলাল পৌরসভার মেয়র সিরাজুল ইসলাম বলেন, ওই গ্রামগুলোর পানি নিষ্কাশনের আগের যে পথ সেটির জমি ভরাট করে এখন তারা যে পথে পানি নিষ্কাশন করার কথা বলছেন, সেখানে বাড়ি-ঘর নির্মাণ হয়েছে। বাড়ি-ঘর ভেঙে দিয়ে কি পানি নিষ্কাশনের পথ বের করা সম্ভব?

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোবারক হোসেন বলেন, অভিযোগের বিষয়টি আমার জানা ছিল না। তবে অপরিকল্পিতভাবে ঘর-বাড়ি নির্মাণ করার ফলেই এ ধরণের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি গুরুত্বের সাথে খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

(ঢাকাটাইমস/৫আগস্ট/এলএ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
মুন্সীগঞ্জে গভীর রাতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড: দলিল লেখকপট্টিতে পুড়ে ছাই ২০ দোকান
আজ রাত আড়াইটায় নারী ফুটবল দলকে সংবর্ধনা দেবে বাফুফে
ঢাকা বিভাগের ৫৬টি আসনে খেলাফত মজলিসের প্রার্থীদের নাম ঘোষণা
ইলন মাস্ক 'আমেরিকা পার্টি' গঠনের ঘোষণা দিলেন, ট্রাম্পের সঙ্গে সম্পর্কের ভাঙন
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা