করোনাকালে পেশা বদলেছেন ৭ ভাগ, বেকার ১৭ ভাগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৮ আগস্ট ২০২০, ২০:২৯

স্বল্প শিক্ষিত তরুণ মো. রায়হান। অনেক দিন ধরে ওয়ার্কশপে কাজ করতেন। দেশে করোনার প্রকোপ শুরু হওয়ার কিছুদিনের মধ্যেই বন্ধ হয়ে যায় ওয়ার্কশপ। জীবিকার তাগিদে পরে পেশা পাল্টিয়ে ভ্যানে সবজি বিক্রি করেন। মৌসুমী নানা ফলও বিক্রি করছেন মাঝে মাঝে। এভাবে গত কয়েক মাস ধরে চলছে রায়হানের জীবন চাকা।

শুধু রায়হানই নয়, এমন অসংখ্য মানুষ করোনার কষাঘাতে পেশা পাল্টাতে বাধ্য হয়েছেন। পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার (পিপিআরসি) ও ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্নেন্স ডেভেলপমেন্ট (বিআইজিডি)-এর যৌথ জরিপের তথ্য বলছে, ৭ শতাংশ মানুষ পেশা পরিবর্তন করেছেন। এই সময়ে ১৭ শতাংশ মানুষ বেকার হয়েছেন।

মঙ্গলবার পিপিআরসি ও বিআইজিডি-এর যৌথ উদ্যোগে অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়েছে, করোনাভাইরাসের কারণে এই সময়ের মধ্যে ঢাকা ছেড়ে গেছেন ১৫ দশমিক ৬ শতাংশ মানুষ। সারাদেশে সাত হাজার ৬৩৮ জনের ওপর পরিচালিত জরিপ করে এই ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে।

ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (বিআইজিডি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইমরান মতিন জরিপের ফলাফল তুলে ধরেন।

পিপিআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, বেঁচে থাকার তাগিদে মানুষ এখনো বাধ্য হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজে বের হচ্ছেন। এর কোনো বিকল্প নেই। কেননা করোনা মহামারিতে সরকারি সহায়তা খুবই অপ্রতুল।

জরিপের ফলাফলে জানা যায়, ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসেও যাদের কাজ ছিল তারা এপ্রিল, মে ও জুন মাসে এসে বেকার হয়ে পড়ে। বেকার হওয়াদের মধ্যে আছেন নারী, অদক্ষ শ্রমিক ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা সবার উপরে। গৃহকর্মী নারীদের মধ্যে ৫০ শতাংশের বেশি বেকার হয়েছেন।

তিনি আরও জানান, করোনাভাইরাস মহামারির সময়ে রাজধানী ঢাকা থেকে প্রতি ১০০ জনে ১৫ জনের বেশি মানুষ অন্য জেলায় চলে গেছেন। এই চলে যাওয়া হার ১৫ দশমিক ৬৪ শতাংশ। গত ফেব্রুয়ারি থেকে জুন মাস পর্যন্ত সময় ধরে করা ওই গবেষণায় বলা হয়, জুনে এসে অতি দরিদ্র মানুষের আয় কমেছে ৩৪ শতাংশ। অর্থাৎ, ফেব্রুয়ারিতে যদি প্রতিদিন আয় হতো ১০০ টাকা, সেই আয় জুনে এসে ৩৪ টাকা কমে হয়েছে ৬৬ টাকা। এতে অতি দরিদ্ররা আরও দরিদ্র হয়ে পড়েছেন। তিন বেলা খাবার জোটানোই এখন তাদের প্রধান সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

জরিপে বলা হয়, করোনার শুরুতে গত এপ্রিল মাসে দেশে দারিদ্রের হার ৪৩ দশমিক ৮ শতাংশ হলেও জুন মাসে এসে তা দাঁড়িযেছে ৪২ দশমিক ৮ শতাংশ। জুন মাসে লকডাউন কিছুটা শিথিল থাকায় এপ্রিলের তুলনায় দারিদ্র এক শতাংশ কমেছে। তবে দেশে করোনার আগে সরকারি হিসাবে দারিদ্রের হার ছিল ২০ দশমিক ৫ শতাংশ।

জরিপে আরও বলা হয়, গত জুনে এসে দরিদ্রদের আয় কমেছে ৪১ শতাংশ। করোনার কারণে নতুন করে যারা দারিদ্র্যের ঝুঁকিতে আছেন, তাদের আয় জুনে এসে কমেছে ৪২ শতাংশ। তবে সবচেয়ে বেশি আয় কমেছে রিকশা চালকদের। তাদের প্রায় ৫৪ শতাংশের আয় কমেছে, এরপরই রয়েছে ছোট ছোট ব্যবসায়ী, পরিবহন ও অদক্ষ শ্রমিকরা। অন্যদিকে সবচেয়ে কম আয় কমেছে কারখানা শ্রমিকদের। এদের মধ্যে ১৬ শতাংশের কিছু বেশি কারখানা শ্রমিকের আয় কমেছে।

পিপিআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, বেঁচে থাকার তাগিদে মানুষ এখনো বাধ্য হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজে বের হচ্ছেন। এর কোনো বিকল্প নেই। কেননা করোনা মহামারিতে সরকারি সহায়তা খুবই অপ্রতুল।

তিনি বলেন, সরকারি হিসাবে করোনার আগে দেশে বেকারের সংখ্যা ছিল ২০ দশমিক ৫ শতাংশ। করোনার কারণে গত জুনে এসে তা দাঁড়িয়েছে ৪২ দশমিক ৭ শতাংশ। এই সময়ে সরকারি সাহায্যের কথা বলা হলেও তা ছিল প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। এ সময় নগদ সহায়তা নিয়ে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে। মাত্র ১৫ শতাংশ মানুষ সরকারি সহায়তা পেয়েছে। এই ১৫ শতাংশ সবাই আবার সাহায্যে পাওয়ার যোগ্য ছিল না।

(ঢাকাটাটইমস/১৮আগস্ট/বিইউ/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

জাতীয় এর সর্বশেষ

বৈষম্য নিরসনে নাগরিক সমাজকে ভূমিকা রাখার আহ্বান রাষ্ট্রপতির

মাদক মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির নির্দেশ প্রধান বিচারপতির

তিন জেলায় বজ্রপাতে ৭ জনের মৃত্যু

মোটরযানে হুটার-হাইড্রোলিক হর্ন ব্যবহারে বিআরটিএর হুঁশিয়ারি

সুষম অর্থনৈতিক উন্নয়ন ব্যতীত অভ্যন্তরীণ মাইগ্রেশন ঠেকানো সম্ভব নয়: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী

নির্বাচন সংক্রান্ত সহায়তা দিবে ৯৯৯

দাবি আদায় না হলে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা ৩য় শ্রেণি সরকারি কর্মচারীদের

সাংবাদিকরা বাংলাদেশ ব্যাংকে ঢুকবে কেন, প্রশ্ন ওবায়দুল কাদেরের

কুয়েতে বাংলাদেশের নতুন রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল সৈয়দ তারেক হোসেন

সৌদিতে চলতি বছরে প্রথম বাংলাদেশি হজযাত্রীর মৃত্যু

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :