আর ফুটপাতে ঘুমাতে হবে না জীবন সংগ্রামী বৃদ্ধকে

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০২ সেপ্টেম্বর ২০২০, ২০:৪৩

সত্তরোর্ধ্ব মানুষটির সামান্য পান-সিগারেট বিক্রি টাকায় কোনোমতে জীবন চলত। অর্থাভাবে ঘুমাতেন ফুটপাতে। তবে সবার সহযোগিতায় এখন তাকে আর ফুটপাতে ‍ঘুমাতে হবে না। শুধু তাই নয়, মোটামুটি পরিমাণের আর্থিক সহায়তা পাওয়ায় তা দিয়ে কিছুটা হলেও স্বস্তিতে দিন কাটাতে পারবেন তিনি। এতে হাসি ফুটেছে এই বৃদ্ধের মুখে।

একদিকে বয়সের ভার অন্যদিকে শারীরিক অসুস্থতা নিয়েও রাজধানীর কাঁটাবনের অষ্টব্যঞ্জন রেস্টুরেন্ট থেকে একটু সামনে ফুটপাতে পান-সিগারেট বিক্রি করতেন যশোরের (নাম জানা যায়নি) এই বৃদ্ধ। সামান্য আয় দিয়ে নিজেও চলতেন, আবার গ্রামে পরিবারের জন্যও টাকা পাঠাতে হতো তাকে।

প্রতিদিন তার দোকানের সামনে থেকে অসংখ্য মানুষ যাওয়া-আসা করত। কেনাকাটাও করত। কিন্তু হঠাৎ তার শারীরিক অবস্থা দেখে চোখ আটকে যায় সাংবাদিক সানাউল হক সানির। কাঁপা শরীরে পান-সিগারেট বিক্রির ভিডিও ধারণ করার পাশাপাশি তার জীবন সংগ্রামের গল্প শুনেন এই তরুণ সংবাদকর্মী।

পরে ভিডিওটি ফেসবুকে নিজের ওয়ালে পোস্ট করেন সানি। এই বয়সে অসুস্থ মানুষটির জীবন সংগ্রামের দৃশ্য দেখে বন্ধু তালিকায় থাকা অনেকের মনে নাড়া দেয়। এক পর্যায়ে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন অনেকেই। ফলে ফুটপাত ছেড়ে তার স্বপ্ন অনুযায়ী এখন মেসে থাকার সুযোগ পাবেন এই অচেনা মানুষটি।

সানাউল হক সানী জানান, ফুটপাতে দিনভর কষ্ট করার পর বৃদ্ধ মানুষটির ফুটপাতে ঘুমাতে খুব কষ্ট হতো। তাই রাস্তায় ছেড়ে মেসে থাকার ইচ্ছার কথা জানিয়েছিলেন। কষ্ট ছাড়াও ফুটপাতের তার সংসারের জিনিসপত্র বেশ কয়েকবার চুরি হয়ে গেছে। আশা করি তার সেই কষ্ট এখন আর থাকবে না।

তিনি বলেন, লোকটির দোকানের মোট মূলধন ৬০০ টাকার মতো ছিল। ফলে এক প্যাকেট সিগারেট বিক্রি শেষ হলে আবার আরেকটা প্যাকেট কিনে আনতেন। এতে যা লাভ হতো তা দিয়ে খাওয়া-দাওয়া শেষে হাতে আর কিছুই থাকে না। এর মধ্যে আবার গ্রামে থাকা স্ত্রীর জন্য টাকাও পাঠাতে হতো। তাই এই বয়সেও মেসে থাকার স্বপ্ন পূরণও হয়নি এতদিন।

বুধবার দুপুরে নতুন একটি পোস্ট দিয়ে সাংবাদিক সানি জানান, তার ভিডিও দেখার পর নাগরিক টিভির হেড অব নিউজ দীপ আজাদ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক শেখ আদনান ফাহাদ, টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার কামরুজ্জামান মুরাদ, এনবিআরের কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির, সুদূর কানাডা থেকে এআর স্মিথ, সাংবাদিক মোস্তফা ইমরুল কায়েসসহ আরও কয়েকজন তাকে আর্থিক সহায়তা পাঠিয়েছেন।

এছাড়া তার দোকানের ঠিকানায় এসে একজন একটা মোবাইল উপহার দিয়ে গেছেন। একজন একটি শার্ট ও মশারি কিনে দিয়ে গেছেন।

অন্যদিকে চট্টগ্রাম প্রতিদিন উপদেষ্টা সম্পাদক ও প্রকাশক অয়ন শর্মা তার মেস ভাড়া দিয়ে দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তার জন্য একটি নিরাপদ বাসস্থান খোঁজা হচ্ছে।

(ঢাকাটাইমস/০২সেপ্টেম্বর/বিইউ/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফিচার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :