অকালে চুল পাকা ঠেকাতে পারে পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ যেসব খাবার

বয়স ৩০ পেরোতেই পাক ধরছে চুলে? কালো চুল সব সাদা হয়ে যাচ্ছে? পাকা চুল কালো করার উপায় কী? আসলে চুল ভালো রাখার জন্যে যেমন নিয়মিত যত্ন নেয়া প্রয়োজন, একইসঙ্গে জীবনশৈলীর দিকেও নজর দেওয়া উচিত।

উপযুক্ত ভিটামিন এবং মিনারেলের অভাবেও কিন্তু চুলের ক্ষতি হতে পারে। প্রকৃতির নিয়মে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে শরীরে বার্ধক্যের ছাপ পড়ে। ত্বকের টানটান ভাব চলে যায়। চুলেও পাক ধরতে শুরু করে। এটি একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া।

কিন্তু অনেকের ক্ষেত্রেই দেখা যায়, ৩০ বছর পেরোতেই চুল সাদা হয়ে যাচ্ছে! বিষয়টি অনেকেই মেনে নিতে পারেন না। হতাশ হয়ে পড়েন। অকালে চুল সাদা হয়ে যাওয়ার পেছনে নানা কারণ থাকতে পারে। তবে, প্রয়োজনীয় কিছু ভিটামিন এবং মিনারেলের অভাবেও অকালপক্কতা দেখা দিতে পারে।

ক্যালশিয়াম

স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্যে ক্যালশিয়াম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। হাড় মজবুত করতে সাহায্য করে। হার্টও ভালো রাখে। একইসঙ্গে চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখতেও এটি বিশেষ ভূমিকা নেয়।।

ক্যালশিয়ামের অভাব হলে চুলে তাড়াতাড়ি পাক ধরতেও পারে। ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব মেডিসিনে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে এই বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে। আয়রন শোষণ করতে সাহায্য করে ক্যালশিয়াম। জেল্লাদার এবং ঘন চুলের রহস্যই আয়রন!

দুধ, দই, ঘি, মাখনে ক্যালশিয়াম পাবেন। এছাড়া সয়াবিন, সবুজ শাক-সবজি খেতে পারেন।

আয়রন

শরীরে আয়রনের অভাব হলেই কিন্তু তার প্রভাব চুলেও পড়ে। চুল পাতলা হতে শুরু করে। এছাড়া চুলে তাড়াতাড়ি পাক ধরতে পারে। গবেষণাতেও এরকম উল্লেখ আছে। তাই আয়রন সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করা প্রয়োজন। পালং শাক, বিটে প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকে। বেদানাও খেতে পারেন। চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে আয়রন সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করতে পারেন।

চুলের অকালপক্কতা দেখলে আয়রনের ঘাটতি হচ্ছে কি না, তা পরীক্ষা করিয়ে নেয়াই ভালো।

প্রোটিন

চুলের জন্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে প্রোটিন। প্রোটিনের ঘাটতি দেখা দিলেই কিন্তু ত্বকে এবং চুলে তার প্রভাব পড়তে শুরু করে।

ত্বকের জেল্লা ফিকে হয়ে যায়। এদিকে চুল ঝরে যায়। এমনকি, অসময়ে চুলে পাকও ধরতে পারে। তাই অবশ্যই এই বিষয়টি নিয়ে সতর্ক থাকা প্রয়োজন। প্রোটিনের অভাবেও চুল সাদা হতে পারে ৩০ পেরোতেই। গবেষণাতেও এটা উল্লেখ আছে। ঘাটতি মেটাতে মাছ, মাংস, ডিম এবং ফল খান নিয়মিত।

গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন

চুলের জন্যে কয়েকটি ভিটামিন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ভিটামিন বি-৫ এবং ভিটামিন বি-৬ চুলের কালো রং ধরে রাখতে বেশ কার্যকরী। তাই আপনার ডায়েটে ভিটামিন বি৫ এবং ৬ সমৃদ্ধ খাবার অবশ্যই যোগ করুন।

চুলের স্বাস্থ্য ধরে রাখতে ফলিক অ্যাসিড বা ভিটামিন বি-৯ বিশেষ ভূমিকা পালন করে। মেটাবলিক এবং ডিএনএ ফাংশনকে ঠিক রাখতেও এই ভিটামিন খুব কার্যকরী।

মাংস, মাছ, মাশরুম, বাদাম, অ্যাভোকাডো এবং দইতে ভিটামিন বি-৫ পাওয়া যায়। শাক-সবজিসহ অন্যান্য ফলেও ভিটামিন বি-৬ এবং ফলিক অ্যাসিড পাবেন। মাছ এবং মাংসতেও ভিটামিন বি-৬-এর সন্ধান পাওয়া যায়।

প্রয়োজন এই দুই ভিটামিনও

ভিটামিন বি-১২ ও চুলের জন্যে খুবই উপকারী। একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, ভিটামিন বি-১২-এর অভাবেও চুলে তাড়াতাড়ি পাক ধরতে পারে। পালংশাক, বিটরুট, মাশরুম এবং আলুতে ভিটামিন বি-১২ পাবেন। তাই এই খাবারগুলো আপনার দৈনিক খাদ্যতালিকায় যোগ করুন।

ভিটামিন ডি- এই ভিটামিন হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে। একইসঙ্গে চুল ভালো রাখতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সূর্যালোক থেকে ভিটামিন ডি পাবেন। এছাড়াও, চিকিৎসকের পরামর্শে ভিটামিন ডি-এর সাপলিমেন্ট গ্রহণ করতে পারেন।

(ঢাকাটাইমস/২৪এপ্রিল/এজে)