সুতার দাম বাড়ায় বিপাকে নিট শিল্প

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ২০ জানুয়ারি ২০২১, ১৮:৪৩
অ- অ+
ফাইল ছবি

বিশ্বে করোনা ভাইরাসের প্রভাবে কাঁচামাল সংকটে পড়েছে দেশের তৈরি পোশাক কারখানাগুলো। সেই সঙ্গে রপ্তানি আদেশ কমে যাওয়ার শঙ্কাও দেখা দিয়েছে। সুতার দাম আর্ন্তজাতিকবাজারে বাড়ার কারণে চরম বিপাকে নিট শিল্প মালিকরা। এসব কারণে পোশাক শিল্প সংকট পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পোশাক শিল্পের মালিকরা এখন করোনার কারণে তিন ধরনের সংকট দেখতে পাচ্ছেন। সরবরাহ কমে যাওয়ায় কাঁচামালের দাম বাড়ছে। যার কারণে বেড়ে গেছে উৎপাদন খরচ। কাঁচামাল সংকটে সময়মত পণ্য সরবরাহও করতে পারছেন না তারা। বাংলাদেশের কারখানাগুলো নিট ও ওভেন এই দুই ধরনের পোশাক তৈরি করে। করোনায় মূলত ওভেন পোশাকের কারখানাগুলোই বেশি বিপাকে পড়ার কথা ছিল। সেই তুলনায় নিট পোশাকের কারখানাগুলোতে প্রভাব কম হবে এমন ধারণা করেছিল সবাই। কারণ নিট কারখানাগুলোর ৮৫ ভাগ সুতাই দেশে উৎপাদন হয়। আর সেই সুযোগটা কাজে লাগিয়ে সুতার দাম বাড়িয়ে দিয়েছে স্পিনিং মিলগুলো। বাধ্য হয়ে নিট কারখানা মালিকদের দ্বিগুণের বেশি দাম দিয়ে তাদের কাছ থেকে সুতা কিনতে হচ্ছে।

এছাড়া ডায়িংয়ের কেমিক্যাল চীন থেকে আসে। আর সবধরনের পোশাকের জন্য বোতাম, জিপার, লেবেলসহ আরও যে অ্যাক্সেরসরিজ আছে, তার ৮৫ ভাগই আসে চীন থেকে। ফলে সব মিলিয়ে পুরো পোশাক শিল্পই এখন সংকটের মুখে পড়েছে।

সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের রপ্তানিতে মন্দাভাব চলছে। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর হালনাগাদ প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৯-২০ অর্থবছরে তৈরি পোশাক পণ্যের রপ্তানি আয় ১৮.১২ শতাংশ কমে ২৭.৯৪ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে, নিটওয়্যার শিপমেন্ট থেকে এসেছে ১৩.৯০ বিলিয়ন ডলার এবং ওভেন শিপমেন্ট থেকে এসেছে ১৪.০৪ বিলিয়ন ডলার। গত বছরের একই সময়ের চেয়ে প্রায় পাঁচ দশমিক পাঁচ-তিন ভাগ কম। তৈরি পোশাক কারখানার মালিকদের সংগঠন বিজেএমইএ এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকারের সহায়তা চেয়েছে। আপৎকালীন তহবিল গঠন, ঋণের নিশ্চয়তা স্কিমসহ আরও কয়েকটি দাবি জানিয়েছে তারা।

সরকারের কাছে লিখিত আবেদনে সংগঠনটি বলেছে, গত অর্থবছরে চীন থেকে এক হাজার ৩৬৩ কোটি ডলারের পণ্য ও কাঁচামাল আমদানি হয়েছে। তার মধ্যে সুতা, কাপড় ও অন্যান্য কাঁচামাল রয়েছে ৫০২ কোটি ডলারের। সব মিলিয়ে পোশাক খাতের ৪৬ ভাগ কাঁচামাল আসে চীন থেকে। করোনাভাইরাস অব্যাহত থাকলে পোশাক খাতে মারাত্মক প্রভাব পড়বে। চীন থেকে জাহাজ না আসায় আমদানি প্রায় ৫০ ভাগ কমে গেছে বলেও উল্লেখ করেন তারা। পাশাপাশি স্পিনিং মিল মালিকদের সঙ্গে সমন্বয় করে সুতার দাম নির্ধারণ করে দেয়ার দাবিও জানিয়েছেন তারা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিকেএমইর সহসভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ‘আর্ন্তজাতিক বাজারে অস্বাভাবিকভাবে সুতার দাম বাড়ছে। সুতার দাম বাড়লেও বায়াররা বেশি দামে অর্ডার দিতে রাজি নন। এমনিতেই অর্ডার কম তারপরও অস্বাভাবিকভাবে সুতার দাম বেড়ে যাওয়ায় চরম বিপাকে পড়েছে নিটওয়্যার খাতের উদ্যোক্তারা। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যে আমরা বিজিএমইএর সঙ্গে বৈঠক করেছি। স্পিনিং মিলগুলোর এলসির পিইর মেয়াদ সাধারণত তিন দিন দিয়ে থাকে সেক্ষেত্রে আমরা অন্তত এই মেয়াদ ১৫ দিন করার জন্য দাবি জানিয়েছি।’

(ঢাকাটাইমস/২০জানুয়ারি/আরএ/জেবি)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
আবুল বারকাত গ্রেপ্তার
শতভাগ পাস, প্রায় সবাই জিপিএ-৫: ক্যাডেট কলেজের উজ্জ্বল সাফল্য
৩ থেকে ১০ জুলাই: যৌথ বাহিনীর অভিযানে সারাদেশে ৩৪৫ অপরাধী আটক
মুক্ত বাংলা শপিং কমপ্লেক্সে সেনাবাহিনীর অভিযান: শীর্ষ সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজ আটক
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা