বগুড়ায় আওয়ামী লীগে সংঘর্ষ, পুলিশসহ আহত ২০

বগুড়া প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ১৯:৩০ | প্রকাশিত : ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ১৮:২১

বগুড়ার ধুনটে উপজেলা আওয়ামী লীগের দুপক্ষের সংঘর্ষে চারজন পুলিশ সদস্যসহ ২০ জন আহত হয়েছেন। শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় উপজেলা পরিষদ সড়কে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

দীর্ঘদিন ধরে উপজেলা আওয়ামী লীগের দুপক্ষের মধ্যে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। এক পক্ষের নেতৃত্ব দেন বীর মুক্তিযোদ্ধা হাবিবর রহমান এমপি এবং অন্য পক্ষের নেতৃত্ব দেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যাপক টিআইএম নুরুন্নবী তারিক। বিষয়টি নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় বৈঠক করে কোনো সমঝোতা হয়নি। এ অবস্থায় গত ৩০ জানুয়ারি ধুনট পৌর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী অধ্যাপক টিআইএম নুরুন্নবী তারিক পরাজিত হন।

এ পরাজয়ের নেপথ্যে এমপি গ্রুপের নেতাকর্মীদের ইন্ধন রয়েছে বলে অভিযোগ তোলা হয়। এ কারণে সম্প্রতি উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক এমপি পক্ষের মহসীন আলমকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে কয়েকদিন ধরেই টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছিল।

শনিবার ধুনট উপজেলা পরিষদে ইউএনওর সঙ্গে এমপিপুত্র আসিফ ইকবাল সনি এবং ১০টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের সভা চলছিল। এ সময় সকাল ১১টায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যাপক টিআইএম নুরুন্নবী তারিকের অনুসারী উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুজাউদ্দৌলা রিপন কয়েকজন নেতাকর্মী নিয়ে উপজেলা পরিষদ সড়কে পৌঁছান। এ সময় এমপি পক্ষের লোকজন তাদের মারধর করে তাড়িয়ে দেন। এ সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে উভয়পক্ষের নেতাকর্মীরা উপজেলা পরিষদ এলাকায় গিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় পুলিশের চার সদস্যসহ ২০ জন আহত হন।

সংঘর্ষে আহতরা হলেন, পুলিশের এসআই প্রদীপ, এসআই মজিবর এবং কনস্টেবল মোফাজ্জল, কনস্টেবল সবুজ মিয়া। এছাড়া উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ভিপি শেখ মতিউর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক সুজাউদৌলা রিপন, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জাকারিয়া খন্দকার, বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ হারুন বাবু, চিকাশী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা হেলাল উদ্দিন, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাজেদুল ইসলাম সাগর, যুবলীগের সুজন, বলয় মন্ডল, ছাত্রলীগের রাজু সুলতান, রুবেল বাবু, আরিফ, নাসিম, হৃদয়, আকাশ এবং অপর পক্ষের ধুনট পৌর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সুজন সাহা, আহ্বায়ক পৌর যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক আব্দুস ছাত্তার ও যুব শ্রমিক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহীনুর আলম মিঠু।

ধুনট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কৃপা সিন্ধু বালা জানান, নির্বাচনী একটা বিরোধ ছিলোই। শনিবার উপজেলা পরিষদে ইউএনও মহোদয়ের সঙ্গে এমপি সাহেবের ছেলে সনি এবং ১০ ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের সঙ্গে বৈঠক চলছিল। এ সময় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি তারেক সাহেবের এক সমর্থক নিমগাছির চেয়ারম্যান সুজাউদ্দৌলা রিপনকে এমপির সমর্থকরা পেটায়।

এরপর রিপন বিষয়টি তার লোকজনকে জানালে ভিপি মতিউরের নেতৃত্বে লাঠিসোটা এবং দেশীয় অস্ত্রসহ এক দেড়শ লোকজন মজিব চত্বর দিয়ে ঢুকে উল্টো ইটপাকেল ছুঁড়তে ছুঁড়তে সামনে আসছিল। আর এরাও সামনে যাচ্ছিলো। মাঝখানে আমরা পড়েছিলাম। দুই পক্ষকেই বোঝানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু তারা শোনেনি।

পরে তাদের ছত্রভঙ্গ করার জন্য ছয়টি শর্টগানের গুলি ছোঁড়া হয়। এ সময় পুলিশের চার সদস্য এসআই প্রদীপ, এসআই মজিবর এবং কনস্টেবল মোফাজ্জল, কনস্টেবল সবুজ মিয়া আহত হন।

উভয় পক্ষের ২০ জনের মতো আহত হয়েছে এ ঘটনায়। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/১৩ফেব্রুয়ারি/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :